বিশ্বের বিভিন্ন শিল্প খাতের মধ্যে স্মার্টফোন বাজার সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতামূলক ও সদা পরিবর্তনশীল। প্রতি বছরই বিভিন্ন কোম্পানি একাধিক মডেলের সেলফোন বাজারজাত করছে। সবার পক্ষে হালনাগাদ সুবিধা বা প্রযুক্তির সঙ্গে খাপখাওয়ানো সম্ভব হয় না। তবে ভবিষ্যতে স্মার্টফোনের বাজার পরিবর্তনে বেশকিছু বিষয় ভূমিকা পালন করবে। খবর গিজচায়না।
প্রথমেই রয়েছে ফোল্ডেবল স্মার্টফোন। কয়েক বছর ধরেই সেলফোন খাতে ফোল্ডেবল রয়েছে। তবে এখনো নতুন ও দামের দিক থেকেও বেশি। তবে প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে এবং এসব ডিভাইসের দাম কমছে। ফলে সামনের দিনগুলোয় ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়বে।
ফোল্ডেবলের পর রয়েছে সিক্সজি স্মার্টফোন। এটি সেলুলার নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির নতুন প্রজন্ম। এটি ফাইভজির তুলনায় বেশি গতির ইন্টারনেট সংযোগ সরবরাহ করে। ফলে বর্তমানে প্রচলিত স্মার্টফোনের তুলনায় এগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে যেকোনো ছবি, ফাইল, ভিডিও ডাউনলোডের সুবিধা দেবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন আলোচনার কেন্দ্রে। ফেসিয়াল রিকগনিশন, ট্রান্সলেশন, ভয়েস রিকগনিশনসহ স্মার্টফোনে থাকা বেশকিছু বিষয় এখন এ প্রযুক্তিনির্ভর। বিভিন্ন কোম্পানি বর্তমানে এ প্রযুক্তি ব্যবহারে ঝুঁকছে। ফলে ভবিষ্যতে ব্যবহারকারীদের হাতে এআই যুক্ত স্মার্টফোন বাড়বে। এসব ডিভাইসের মাধ্যমে মিটিং, ভ্রমণসহ সব ধরনের শিডিউল করা যাবে।
বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সেলফ হিলিং ম্যাটারিয়ালের ব্যবহার হরহামেশাই দেখা যায়। দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত স্মার্টফোনকে এ ফিচারযুক্ত করতে গবেষণা চলছে। যদিও এটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে এটি ব্যবহারকারীদের জন্য ইতিবাচক হবে। কেননা এর ফলে যেকোনো হালকা আঁচড় ও ফাটা দাগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঠিক হয়ে যাবে। এজন্য রিপেয়ার শপে যেতে হবে না।
এসব বিষয় ছাড়াও আরো কিছু দিক ভবিষ্যতে স্মার্টফোনের বাজারকে প্রভাবিত করবে। এর মধ্যে রয়েছে আন্ডার ডিসপ্লে ক্যামেরা। এ প্রযুক্তিও এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে। তবে এটি বর্তমানে প্রচলিত ফ্রন্ট ফেসিং ক্যামেরার জায়গা দখলে নেবে। আন্ডার ডিসপ্লে ক্যামেরা যুক্ত হলে বেজেলে আলাদা করে ক্যামেরা বসাতে হবে না। ফলে ডিভাইসের বাহ্যিক ডিজাইন আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
পোর্টলেস বা চার্জিং পোর্টবিহীন স্মার্টফোন প্রযুক্তিও ভবিষ্যৎ বাজারে প্রভাব বিস্তার করবে। এ প্রযুক্তিও উন্নয়নের প্রথম ধাপে রয়েছে। তবে এটি বর্তমানে প্রচলিত চার্জিং প্রযুক্তিতে পরিবর্তন আনবে। পোর্টলেস ডিভাইসগুলো ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, যা পোর্টকে ক্ষতি হওয়া থেকেও রক্ষা করবে। রোলেবল বা পেঁচানো যায় এমন স্মার্টফোনও ভবিষ্যতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ ধরনের সেলফোন এখন সবার ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়নি। তবে এটি প্রকাশ্যে আসার পর ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন সুবিধা দেবে। যার মধ্যে অন্যতম প্রয়োজন অনুযায়ী সেলফোনের ডিসপ্লে বাড়ানো। গেম খেলা থেকে শুরু করে ভিডিও দেখার জন্য এটি সহায়ক।
অগমেন্টেড রিয়ালিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সসহ আরো কিছু বিষয়ও স্মার্টফোনের ভবিষ্যৎ বাজার পরিবর্তনে কাজ করবে। টেকসই উপাদানের ব্যবহারও স্মার্টফোনের গঠনকে আরো মজবুত করবে। কেননা বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সবাই সচেতন। পরিবেশের জন্য উপকারী উপাদান ব্যবহারে বর্তমানে ফেয়ারফোন ও স্যামসাং এগিয়ে। এ দুটি কোম্পানি এরই মধ্যে পণ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ কমাতে কাজ করছে।