বাংলাদেশের স্মার্টফোনের বাজার স্ফীত হয়েছে। বছর বেশ বাড়ছে এমন তথ্য দিয়েছে মার্কেট মনিটর সার্ভিস। বিশেষ করে স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোনের উৎপাদন পণ্য কোয়ার্টার থেকে কোয়ার্টারে (কিউ-ও-কিউ) ২৯ শতাংশ বেড়েছে। আর বছর শেষেই ইয়ার থেকে ইয়ার হিসেবে বাংলাদেশে এর বাজার ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এখন স্বাভাবকিভাবেই ক্রেতার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কোন ফোনটা আসলে বেশি চলছে? এর জবাব দেয়া হয়েছে একটি তালিকার মাধ্যমে। সেখানে ২০১৮ সালের এবং এ বছরের প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনের চাহিদা কতটুকু বেড়েছে বা কমেছে তার হিসেব মিলেছে। এ তালিকাই বলে দিচ্ছে ক্রেতাদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং জনপ্রিয়তা হারানো ফোন কোনটি।
সবমিলিয়ে স্যামসাংই শীর্ষে রয়েছে। ২০১৮ সালের প্রথম প্রান্তিকে এর চাহিদা ১০ শতাংশ থেকে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেড়েছে ২২ শতাংশ। একই হিসেবে সিস্ফোনির চাহিদা ২১ শতাংশ থেকে কমে ১৫ শতাংশে নেমে এসেছে। কমেছে ওয়ালটনের চাহিদা, ১৫ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। শাওমি ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ঠেকেছে ৭ শতাংশে। আর অন্যান্য ব্র্যান্ডের মোবাইলগুলোর চাহিদা সার্বিকভাবে কমেছে। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে এর চাহিদা ৪৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ৩৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের বাজারের পরিস্থিতিটা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করলে এমন চিত্র দাঁড়ায়-
১. মার্কেট শেয়ার র্যাঙ্কিংয়ে সিম্ফোনি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। তবে তাদের বিক্রি কমেছে। তাদের সর্বাধিক বিক্রিত ভি৯৮ ফোনের চাহিদা কমার সাথে সাথেই এমনটা ঘটে। সিম্ফোনির শিপমেন্ট ১৯ শতাংশ কোয়ার্টার থেকে কোয়ার্টারে কমলেও ২ শতাংশ ইয়ার থেকে ইয়ার বেড়েছে।
২. স্যামসাং গ্যালাক্সি জে২ কোর এর সুবাদে এর বিক্রি অনেক বেড়ে গেছে। আবার ৭৫-১০০ মার্কিন ডলারের মধ্যে যেসব ফোনের দাম থাকে, সেগুলোর বিক্রি বাড়ে।
৩. প্রাইমারি ১৫ থেকে ১৯.৯৯ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা ফোনগুলোর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এর চাহিদা কিউ-ও-কিউ হিসেবে বেড়েছে ২০৩ শতাংশ। আর এ ক্ষেত্রে সুবিধা পেয়েছে স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৩০।
৪. স্মার্টফোনের র্যাম ৪জিবি বা তার বেশি হলে তার বিক্রি কিউ-ও-কিউ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৯৭ শতাংশ। এখানেও সুবিধা বাগিয়ে নিয়েছে স্যামসাং।
৫. অভ্যন্তরীন স্টোরেজ ৬৪ জিবি’র ফোন কিউ-ও-কিউ হিসেবে বেড়েছে ১৯৭ শতাংশ।
৬. ব্যাটারি ৪০০১-৫০০০ এমএএইচ এর চাহিদা বেশ বেড়েছে। এসব ফোনের চাহিদা কিউ-ও-কিউ ভিত্তিতে বেড়েছে ৮৮ শতাংশ।
বাংলাদেশের বাজার নিয়ে কথা বলেন কাউন্টার রিসার্চের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট অভিষেক চৌধুরী। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের নির্মিত ফোনগুলো সফলতা দেখছে। আমদানিকৃত ফোন অপেক্ষা এদের দাম কম হয়। তাছাড়া এদের বানানো ফোনগুলোর ভুল-ত্রুটি স্পষ্টভাবে কমে এসেছে। তাই এদের জনপ্রিয়তা বাড়বেই।
ব্র্যান্ডের বিচারে অনেক এগিয়ে রয়েছে স্যামসাং। এর ওয়াই-ও-ওয়াই সরবরাহ বেড়েছে ২০৩ শতাংশ। বাজারের সাবেক সেরা সিম্ফোনি এখন রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোর নতুন নতুন ফোন বাজারে আসার পরও স্যামসাংয়ের চাহিদা বেড়েছে। গ্যালাক্সি জে২ কোর ছিল বিক্রির শীর্ষে। আবার দামের বিচারে স্যামসাংয়ের এ সিরিজও খুবই জনপ্রিয়তা কেড়ে নিয়েছে।
অন্যদিকে, শাওমির চাহিদাও বেড়েছে। এর ওয়াই-ও-ওয়াই সরবরাহ বেড়েছে ১৬৫ শতাংশ। বাজারের ৭ শতাংশ শাওমির দখলে। প্রথম প্রান্তিকে ভিভো চমক দেখিয়েছে। ওয়াই-ও-ওয়াই হিসেবে এর বিক্রি বেড়েছে ১১৩৩ শতাংশ। বাংলাদেশে সিম্ফোনি, ম্যাক্সিমাস এবং ওয়ালটনের মোবাইলও বেশ ভালো করছে।