একজন সত্যিকার সফল উদ্যোক্তা তাঁর ব্যবসার উন্নয়নের পাশাপাশি নিজেকেও সব সময়ে উন্নত করার চেষ্টা করেন। সফল উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় হিসেবে এর কোনও বিকল্প নেই।
রাজশাহীর বিখ্যাত সিল্ক ও তাঁতের শাড়ি নিয়ে কাজ করেন তরুণ অনলাইন উদ্যোক্তা সাবিহা বীথি।তার বাড়ি রাজশাহী শহরের শালবাগানে। তিনি পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ফাইনাল ইয়ারের স্টুডেন্ট। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে গড়ে তুলেছেন একজন উদ্যোক্তা হিসেবে। তার এই উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে”রঙিন বাগিচা” নামে অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন তিনি।
উদ্যোক্তা হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠলেও অনেক স্বপ্নই পুরন করতে পারি নি। খুব ইচ্ছে ছিল নিজের জন্য কিছু করব,পরিচয় তৈরি করার জন্য। কিন্তু সাহস করে এগোতে পারছিলাম না। লকডাউনে ইন্টার্নশিপ ছেড়ে বাসায় আসতে হয়। অবসর সময় এমনি কেটে যাচ্ছিল, কি করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এমতাবস্থায় “উই” নামে গ্রুপ খুজে পাই। রাজীব স্যার, নিশা আপুর পরামর্শে অনুপ্রানিত হই। নিজের স্বপ্নগুলো আবার সাজাতে শুরু করি,আশেপাশে অনেকের অনেক কথা শুনতে হত তবুও সাহস করে নেমে পড়ি।
কোন ধরণের পন্য নিয়ে কাজ করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজশাহীর সিল্কের প্রতি অনেক আগে থেকেই একটা অনুভুতি কাজ করত। আমার স্কুলের পাশেই সিল্ক ছিল, কতবার যে গিয়েছি তার হিসেব নেই। তাই শাড়ি নিয়ে কাজ করার শুরুটা করেছি মসলিন সিল্ক দিয়ে। পুরো বাংলাদেশ এবং দেশের বাইরেও মসলিম সিল্কের কদর অনেক। সবার কাছে অরজিনাল মসলিন সিল্ক পৌছে দেয়াই আমার লক্ষ্য। বেশ ভালো সাড়াও পেয়েছি ইতোমধ্যে দেশ এবং বাইরের দেশ থেকে।
তিনি বলেন, মসলিন সিল্ক দিয়ে তৈরি শাড়ির কদর এখন অনেক বেশি। হ্যান্ডপেইন্ট করতে মসলিন সিল্ক বেশি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও কাজ করছি তাঁতের শাড়ি নিয়ে। তাঁতে বোনা শাড়ির প্রতি ঝোক আগে থেকেই ছিল। নিজেও পড়ি তাই এটা নিয়ে কাজ করে বেশি আনন্দ পাই। তাঁতিদের সঠিক পণ্য সবার মাঝে তুলে ধরা আমার লক্ষ্য। আমার তাঁতের শাড়ি ও দেশের বাইরে গেছে আলহামদুলিল্লাহ। ছোট ছোট পায়ে আমার উদ্যোক্তা জীবন চলে যাচ্ছে। পারিবারিক সাপোর্ট তেমন পাই নাই, তবে আমার বোনগুলো অনেক সাপোর্ট করে। পার্টনার হিসেবে আমার ফ্রেন্ড সাথে আছে। সবসময় সাহায্য করে।
উদ্যোক্তা জীবনের ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার লক্ষ্য হল নিজের উদ্যোগকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাঁতের শাড়ি আর সিল্ক কে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া। সবার বিশ্বাস অর্জন করে নিজের উদ্যোগ ‘রঙিন বাগিচা ‘ কে সবার কাছে পরিচিত করানোই আমার মূল লক্ষ্য। এছাড়াও নিজের উদ্যোগের টাকায় গরীব মানুষকে সাহায্য করা,একটা এতিম খানা তৈরি করার ইচ্ছা আছে। সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য। আমি যেন আমার কাজে সফল হতে পারি।
আপনার উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) অবদান সম্পর্কে বলেন, আমার উদ্যোক্তা জীবনে উইয়ের অবদান আসলে বলে শেষ করা যাবে না। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আমার এবং ‘রঙিন বাগিচা’র পরিচিতির পুরো অবদান উইয়ের উপদেষ্টা শ্রদ্ধেয় রাজিব স্যারের। আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চাই উইয়ের মাননীয় প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশা আপুর এবং উইয়ের সম্মানিত উপদেষ্টা, ই-ক্যাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং সার্চ ইংলিশের প্রতিষ্ঠাতা রাজিব আহমেদ ভাইয়ার প্রতি।