যব বা বার্লি বিলুপ্ত প্রায় একটি দেশীয় ফসল। বিগত দিনে আমাদের দেশে প্রচুর পরিমানে যবের চাষ হলেও ফলন কম ও বিভিন্ন উচ্চ ফলসশীল ফসলের চাহিদা বাড়ায় তা আস্তে আস্তে যবের চাষ কমতে থাকে। যব অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ হওয়ার পরেও যব চাষ না হওয়ার কারনে এর ব্যবহার আস্তে আস্তে কমে যেতে থাকে। যব সম্পর্কে প্রবীন ব্যাক্তিরা ভালো ভাবে জানলেও নতুন প্রজন্মের কাছে এটা খুবই অপরিচিত একটা কৃষি পন্য। আবার প্রবীনরা জানলেও এটা বিলুপ্তপ্রায় হওয়ায় এর স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুন ভুলতে বসেছিল। গ্রামের মানুষ যব সম্পর্কে জানলেও শহরের মানুষের কাছে এটা প্রায় অপরিচিত একটি নাম। যদিও বা বার্লি নামটা শহরে কম বেশি পরিচিত।
বাংলাদেশের চর অঞ্চল ও বরেন্দ্র অঞ্চলে রবি মৌসুমে অল্পবিস্তর যবের চাষ এখনও হয়ে থাকে। এর মধ্য বরেন্দ্র অঞ্চলের রাজশাহী জেলার তানোর ও গোদাগাড়ী এলাকায় কিছু পরিমানে যবের চাষ এখনও হচ্ছে।
আর এই সূযোগ কাজে লাগিয়ে উইমেন ই-কমার্স ফোরাম(উই) থেকে শিক্ষা নিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে নিজের কাজের সাথে যবকে সম্পৃক্ত করেছেন নিপা সেনগুপ্তা। কারন যবের ছাতু পুষ্টিগুনে অনন্য। ছোট বড় সবার জন্যই সমান উপযোগি এই ছাতু। পাশাপাশি যবের ছাতুর একটি উজ্জ¦ল ঐতিহ্যও আছে।
বিগত ৬মাস আগে উক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করার পর নিজের কাজ সফল ভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছেন দেশের মানুষের সামনে। এ পর্যন্ত ৩৮টি জেলায় নিপার যবের ছাতুর গ্রাহক হয়েছে। সবাই নিয়মিত তাঁর থেকে ছাতু ক্রয় করছেন। বর্তমানে তাঁর “ঐতিহ্যবাহী কৃষির অমৃত স্বাদ” নামের ফেসবুক নামের পেজের মাধ্যমেও অনেক মানুষ যবের ছাতু ক্রয় করছেন। অনলাইনে দিচ্ছেন সুন্দর সুন্দর রিভিউ। এতে করে অনেক নতুন গ্রাহক অনুপ্রানিত হচ্ছেন। আর এই অনলাইনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নতুন প্রজন্মের অনেকের কাছেই বিলুপ্তপ্রায় যবের গুনাগুন পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। অনেকেই যবের গুনাগুন সম্পর্কে প্রথম জানছে।
এ বিষয়ে নিপা সেনগুপ্তা বলেন“আমার স্বামী কৃষিবীদ হওয়ায় অনেক আগেই আমি যব সম্পর্কে জানতে পারি এবং এর স্বাদ গ্রহনের সূযোগ হয়। এরপর ইন্টারনেট ও গ্রামের প্রবীনদেও সাথে যবের উপযোগিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে আরো জানতে পারি। এরপর জানতে পারি উই সম্পর্কে যেখানে দেশী পন্য নিয়ে উদ্যোক্তা হচ্ছে। এই সূযোগে আমিও এখানে যবের ছাতু নিয়ে কাজ শুরু করলাম। এই ছাতু ভেজালমুক্ত ও অর্গানিক হওয়ায় প্রথম থেকেই অনেকেই আমার কাজে আস্থা রাখছেন।
তিনি আরো বলেন“ আমার ইচ্ছে দেশের ৬৪ জেলার প্রতিটি উপজেলায় নে আমার ছাতুর গ্রাহক হয়। এর পাশাপাশি আমি আসন্ন রবি মৌসুমে হারিয়ে যাওয়া যব চাষের জন্য ১০জন কৃষকে উদ্বুদ্ধ করেছি যেন তারা আবার যব চাষ করেন। কারন উইয়ের কল্যানে দেশী পন্যও একটা বিরাট বাজার তৈরি হয়েছে।