প্রত্যেকটা মানুষেরই স্বপ্ন থাকে নিজের একটা পরিচয় গড়ার নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। আমি আমার নিজের পরিচয় সবসময় নিজের চেষ্টায় স্বাধীনভাবে গড়তে চেয়েছি। আর এর জন্যই বেছে নেই উদ্যোক্তা জীবন। উদ্যোক্তা জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হলেও নিয়মিত সময় ও শ্রম দিয়ে গেলে নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়।
নারী উদ্যোক্তাদের জনপ্রিয় ফেসবুক প্লাটফর্ম উইম্যান অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) গ্রুপের কল্যাণে অনলাইনে পণ্য বিক্রি করে স্বাবলম্বী হচ্ছে হাজারো নারী । উইম্যান অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) এর কল্যানে নিজের উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে নেত্রকোণার মেয়ে ইডেনে মহিলা কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স চতুর্থ বর্ষে শিক্ষার্থী মারজিয়া খন্দকার মোনা। টাঙ্গাইল এর তাঁতের শাড়ি সহ বিভিন্ন দেশীয় শাড়ি ও তাঁত পণ্য নিয়ে কাজ করছে তার প্রতিষ্ঠান ‘মাসমো গ্যালারী বিডি’।
উদ্যোক্তার হওয়ার শুরু দিকের কথা জানাতে চাইলে মারজিয়া বলেন, নিজের পরিচয় সবসময় নিজের চেষ্টায় স্বাধীনভাবে গড়ার চিন্তাধারা থেকেই চলতি বছরের শুরুর দিকে ফেব্রুয়ারিতে উদ্যোগের প্লাটফর্ম হিসেবে ফেসবুক পেইজ ওপেন করি Masmo Gallery Bd নামে। ফেসবুক পেইজ ওপেনের সাথে সাথেই অর্ডার আসে। প্রথমে পরিচিতরাই কাস্টমার হয়। বন্ধু বান্ধব ও পরিচিতদের মধ্য থেকেই অর্ডার আসা শুরু হয়। কিন্তু এর মধ্যে করনা মহামারীর পরিস্থিতি তে উদ্যোগের হাল প্রায় নাজেহাল অবস্থা। অনেকটা ভেঙ্গে পরি। এমতাবস্থায় এক বান্ধবীর মাধ্যমে উই তে জয়েন হই। আবার আশার আলো দেখতে পাই উদ্যোগ নিয়ে।
‘মাসমো গ্যালারী বিডি’ নিয়ে আপনার স্বপ্ন কি জানতে চাইলে তিনি জানান, উদ্যোক্তা হয়ে উঠার স্বপ্ন পূরণে নিজেকে প্রতিনিয়ত তৈরি করছি। নিজের স্কিল ডেভলপমেন্ট এর জন্য ডিএসবি তে অনুশীলন করছি। আমার উদ্যোগ নিয়ে আমার স্বপ্ন হলো টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়ি যেনো দেশের গন্ডি পেরিয়ে আমাদের উদ্যোগের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি করতে পারি। আর আমার উদ্যোগ যেন হয় অনেক কর্মহীন বেকার মানুষের কর্মস্থল।
ক্রেতাদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রথমে পরিচিতদের থেকে জেনে তাদের পরিচিতরা এবং তাদের পরিচিতরা এভাবেই একটা চেইনের মাধ্যমে আমার উদ্যোগের কাস্টমারস বেড়ে চলছে। আর এসব সম্ভব হয়েছে পণ্যের গুণাগুণ বজায় রেখে এবং কাস্টমার সেটিসফেকশান অর্জনের প্রচেষ্টায়। আর এভাবেই ক্রেতারাই আমার উদ্যোগের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণার জায়গাটা দখল করে নিয়েছে।
নারীদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ থাকে অনেক আপনার কি ধরণে চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব কাজের শুরুর দিকটা অনেক চ্যালেঞ্জিং হয়ে থাকে। আমাদের উদ্যোগেও এর ব্যতিক্রম কিছু নয়। মেয়ে হিসেবে উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে যেসকল সামাজিক ও পারিবারিক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় আমাকেও সেসকল কিছুর সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আশেপাশের মানুষের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। কটু কথা৷ কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে এসব কিছু আমাকে কখনও ভাঙতে পারেনি।আমি নিজেকে আরও সাহসী করে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই৷ আমার উদ্যোগের সফলতা অর্জনের মাধ্যমে।
মারজিয়া উদ্যোক্তা হওয়ার পুরো কৃতিত্ব দিতে চান উই গ্রুপকে । রাজীব স্যার এর প্রত্যেকটা পরামর্শ আমার জীবনে আশীর্বাদের মতো কাজ করেছে। প্রত্যেক্টা উপদেশ মেনে চলি। নিজের পারসোনাল ব্রান্ডিং গড়ার জন্য উই তে নিয়মিত হই। উই তে নিয়মিত হয়ে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ী নিয়ে নিয়মিত লিখতে থাকি এর ফলে আমার উদ্যোগ সহ আমার পরিচিতি বেড়েছে। আশেপাশের মানুষজন জানছে কিছু একটা করছি দেখে মোটামুটি সবাই এপ্রিসিয়েট করে।
আমি শুধু শেখার জন্য উই গ্রুপে সময় দিয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু এর বিপরীতে পাওয়া সাফল্য আমার কাছে অতুলনীয়। উইয়ের সকল মেম্বার ও এডমিন প্যানেলে আস্থা অর্জন করে দেশি পণ্যের পরিচিত উদ্যোক্তারদের একজন হতে পারা। বিশেষ করে রাজিব আহমেদ স্যারকে। উইয়ের জন্য বিশেষ করে রাজিব আহমেদ স্যারের পরামর্শ মোতাবেক লেখাপড়া করে ঘরে বসেই এফ-কমার্স বিজনেস করতে পারছি ।