এসেছে শীত,চাহিদা এখন পোশাকে উষ্ণতা। সেই উষ্ণতা দেশিয় ঐতিহ্যের সাথে হলে মন্দ হয় না কিন্তু। পুরনো নকশায় নতুন ভিন্নতা যেকোনো পোশাককেই নতুন মাত্রা দেয়। তেমনি আমরা আজ জানবো খেশ শাল এর গল্প, যা বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো তৈরি হচ্ছে। খেশ শালের নকশাকার এবং “আরিয়া’স কালেকশন” এর স্বত্ত্বাধীকারী নিগার ফাতেমা আমেরিকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বি.এস.সি এবং এম.এস.সি করেছেন।ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েও তিনি উদ্যোক্তা হয়েছেন এবং তার উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে খেশ পণ্যকে পরিচিত করানো। চলুন জেনে নিই নিগার ফাতেমা’র খেশ শালের গল্প। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন টেকজুম প্রতিনিধি মেহজাবীন রাখী।
টেকজুমঃ খেশ শাল মূলত কি ধরনের শাল?
নিগার ফাতেমাঃ খেশ শালের ধরন সাধারণত অন্যান্য শালের মতোই,তবে এর গুরুত্ব যদি বলি এর সাথে দেশি ঐতিহ্যবাহী কাপড় খেশের কম্বিনেশনে এতে এসেছে নতুনত্বের ছোঁয়া। এবং একদম নতুন একটি দেশি পণ্যের ভেরিয়েশন আসায় এই পণ্যটি সবার মাঝে গুরুত্বও পেয়েছে।
টেকজুমঃ হঠাৎ খেশ শাল নিয়ে ভাবলেন কেন?
নিগার ফাতেমাঃ আমাদের দেশে মোটামুটি এখন শীত চলে আসছে বলা যায় এবং শীতের একটি অন্যতম পরিধেয় পোশাক শাল। বাজারে দেখা যায় বিদেশি শালের চাহিদা বেশি ঠিক সেইখান থেকেই দেশি পন্য দিয়ে শাল বানানোর আইডিয়াটা আমাকে দিয়েছেন ই-ক্যাব এর প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি রাজিব আহমেদ স্যার। তার উৎসাহে আমি খেশের শাল তৈরির উদ্যোগ নেই এবং এতে আমি সফল হই। স্যার বলেছিলেন যদি সময়ের সাথে দেশি পণ্যের ভেরিয়েশন আনা যায় তাহলে দেশি পণ্যের চাহিদাও বাজারে অনেক বাড়বে। খেশ একটি ঐতিহ্যবাহী কাপড় হওয়া সত্বেও এখনও অনেকে আছেন এই কাপড় সম্পর্কে জানেন না। তাই খেশকে পরিচিত করানোর জন্যই খেশ দিয়ে কি কি করা যায় তার একটি ইনোভেশন খেশ শাল।
টেকজুমঃ খেশ শালের ব্যবহার, যত্ন কেমন হবে?
নিগার ফাতেমাঃ খেশ শাল ব্যবহারে আরামদায়ক এবং খুব সহজে পরিধান করা যায়। অন্যান্য কাপড়ের মতোই এটা পানি দিয়ে ধোঁয়া যাবে কাজেই বাড়তি কোন ঝামেলা হবেনা।
টেকজুমঃ ফ্যাশন আর ঐতিহ্য দুটোই কি খেশ শালে পাওয়া যাবে?
নিগার ফাতেমাঃ অবশ্যই পাওয়া যাবে। এই প্রথম আমি খেশের শাল করেছি এবং তা সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতাও পেয়েছে কাজেই এতেই বোঝা যায় ফ্যাশন সচেতন মানুষের কাছে এই পণ্যটি সাড়া ফেলতে পেরেছে। আর ঐতিহ্যের কথা বললে খেশের সাথে মিশে আছে আমাদের কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম। তার উদ্যোগেই সাধারণ মানুষের কথা ভেবে খেশের উৎপত্তি হয়। শত বছরের ঐতিহ্য বহন করা একটি পোশাক পরিধানে অনেকেই গর্ববোধ করবেন।
টেকজুমঃ খেশ শালকে ভবিষ্যতে কোন পর্যায়ে দেখতে চান?
নিগার ফাতেমাঃ আমার ইচ্ছে আছে খেশ শালে আগামীতে আরও অনেক নতুন ডিজাইন আসবে। আমি বিশ্বাস করি নতুন এই ভেরিয়েশনের কারনে অনেকেই এগিয়ে আসবে খেশ শালকে সর্বত্র পরিচিত করাতে।
টেকজুমঃ খেশ শাল বাংলাদেশের দেশিপণ্যের ই-কমার্সে এবং অর্থনীতিতে কেমন সাড়া ফেলতে পারবে?
নিগার ফাতেমাঃ দেশি পণ্যের ই-কমার্স গত এক বছরে অনেক এগিয়ে গিয়েছে তা আমরা লক্ষ্য করতে পারছি। এখন যে কেউ দেশি পন্য নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন যা এক বছর আগে করতো না। খেশের শাল ই-কমার্সের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি জেলা থেকে উপজেলা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি। নতুন এই একটি পণ্যের জন্য যেমন কর্মসংস্থান তৈরি হবে তেমনি আগামীতে খেশ শাল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে খেশ শাল প্রভাব ফেলতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
টেকজুমঃ ধন্যবাদ নিগার ফাতেমা আপনাকে এবং শুভেচ্ছা রইলো আপনার খেশ শাল সহ অন্যান্য খেশপণ্যের জন্য।
নিগার ফাতেমাঃ টেকজুমকে ধন্যবাদ।