সময়ের দাবিতে বদলে গেছে পেশা। আমাদের এ উপমহাদেশে আগে ছিল হাজারো পেশার মানুষ। এমনি আমরা বাংলাদেশের নিকট অতীতেও অনেক পেশার কথা জানতে পারি যা আজ বিলুপ্তির পথে বা কিছু পেশার মানুষ আর খুজেই পাওয়া যাবে না। আমরা জানি বৈচিত্র্য সুন্দর,বৈচিত্র্যই সমৃদ্ধি।কিন্তু সময়ের দাবি ও চাহিদায় অনেক বৈচিত্র্যময় পেশাই আজ আর খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
একটা সময় আমরা দেখেছি পালকি ছাড়া বিয়েই হতো না। কিন্তু আজ সেই পালকিও নেই, সাথে নেই সেই বেয়ারা। যারা একে অপরের সাথে সুরে সুর মিলিয়ে পালকি টেনে নিয়ে যেত।নেই সেই তাঁতি যারা হাত দিয়ে বুনে দিতে পারত অনেক সুন্দর সুন্দর শাড়ী।নেই সেই গাছি যে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করত নিপুন হাতে,গাছের কোন ক্ষতি না করে। নেই সেই পটিয়াল যে নিপুন হাতে শীতল পাটি সহ বিভিন্ন রকমের মাদুর তৈরি করত।
সবই আসলে হয়েছে সময়ের দাবিতেই। এখন ত সব মেশিনেই হচ্ছে। মেশিনে সুইচ টিপে দিলে হয়ে যাচ্ছে শাড়ীর ডিজা্ন, কাঠ খোদাই হয়ে রূপ নিচ্ছে ডিজাইনের। এত সব ত হচ্ছে সেখানে ঐতিহ্য কই। ঐতিহ্যর কোন সংঙ্গা খুজলে কিন্তু পাওয়া যাবে না।এরকম আমরা আরো অনেক অনেক উদাহরন পাব।এখন আসল বিষয়ে আসি।
বিগত ১ বা ২ বছর থেকে বাংলাদেশে ই-কমার্সের একটি নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আর এখানে উল্লেখযোগ্য হারে এগিয়ে আছে উইমেন ই-কমার্স ফোরাম (উই)। এখানে সারা বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা স্থানীও এবং ভৌগলিক দেশি পন্য নিয়ে কাজ করছেন। আর এ কারনেই এখানে হারিয়ে যাওয়া হাজারো পন্যর পূর্ন জন্ম ঘটেছে। এর ফলে এখানে দেশি পন্যর বৃহৎ বাজার তৈরি হয়েছে। এর সাথে যোগ হয়েছে নতুন করে সেই পন্যর উৎপাদন যার বাজার না থাকার কারনে তা উৎপাদন হতো না। সে পেশার মানুষ অন্য পেশায় চলে গিয়েছিল। এখানে উদাহরন হিসেবে বলা যেতে পারে হাতে বোনা দেশি শাল তেমন উৎপাদন হতো না। কিন্ত এবার এর চাহিদা সৃস্টি হওয়াতে এর সাথে সম্পৃক্ত জনগোষ্টি নতুন করে আবার শাল বুনছে।
আবার বলা যেতে পারে শীতল পাটির কথা শীতল পাটির একটি উজ্বল ঐতিহ্য ছিল আমাদের কিন্তু কালের ব্যবধানে হারিয়ে গেছে শাতল পাটি। নতুন প্রজন্ম আর শীতল পাটি আর চিনে না। সময়ের ব্যবধানে পাটি তৈরির কারিগর আর নেই। কিন্তু উইয়ের কল্যানে এ পাটির আবার ঐতিহ্য ফিরে আসছে।কারিগর আবার বুনতে বসছে শীতল পাটির বুনন।
এবার অনলাইনে প্রচুর পরিমানে খেজেুর গুড়ের ক্রয় বিক্রয় হয়েছে। তাতেই সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে গাছিদের মাঝে তাঁদের ধারনা নতুন অনেকেই আবার গাছি পেশাকে বেছে নিবে। যদিও তা মৌসুমি পেশা তার পরেও এখানে আছে নতুন সম্ভাবনা।আবার আমরা বলতে পারি ভৌগলিক ভাবে এমন অনেক বিলুপ্ত প্রায় পন্য আছে যেখানে আজ এসেছে সম্ভাবনার নতুন জোয়ার। সেখানে অনেক মানুষ নতুন করে যুক্ত হচ্ছে। যুক্ত হয়ে আসলে তাঁরা পেশা বৈচিত্র্যকেই সমৃদ্ধ করছে। পেশা বৈচিত্র্য যত সমৃদ্ধ হবে তত একটি দেশের আসল উন্নয়ন হবে রক্ষা পাবে ঐতিহ্যবাহী পন্যর সমাহার।সময়ের দাবিতে পেশা হারিয়ে গেলেও উইয়ের কল্যানে সময়ের দাবিতেই আবার ফিরে আসবে পেশার বৈচিত্র্য।