শেরপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী একটি কৃষি পণ্য ”তুলশীমালা ধান”। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ জাতের ধান স্থানীয় কৃষকেরা আবিষ্কার করায় এটি স্থানীয় জাতের ধান।জেলার পাঁচটি উপজেলাতে উৎপাদন হয় তুলশীমালা জাতের ধান। প্রায় ৮০ হাজার কৃষক পরিবার যুক্ত আছে এ ধান চাষে। তুলশীমালা ধান বছরের এক মৌসুমে উৎপাদন হয়। তুলশীমালার ধান নিয়ে টেকজুম ডটটিভিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কৃষিবিদ ড. মুহিত কুমার দে, কৃষি উপ-পরিচালক, শেরপুর। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইমরান হোসেন, প্রতাপ পলাশ ও মো : দেলোয়ার হোসেন।
টেকজুম : তুলশীমালা ধান আর অন্য ধানের মধ্যে পার্থক্য কি?
ড. মুহিত কুমার দে : তুলশীমালা একটি স্থানীয় জাতের সুগন্ধি ধান। সাধারণ জাতগুলোর মধ্যে সুগন্ধ থাকে না কিন্তু তুলশীমালা চালের মধ্যে সুগন্ধ রয়েছে। এটি রান্না করলে চারপাশে সুবাস ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া তুলশীমালা চালের আকার খুবই ছোট। আন্যান্য চালের আকার এর চেয়ে বড় হয়। ফলে তুলশীমালা চালের পোলাও বা অন্যান্য সৌখিন রান্নাবান্নায় কাজে লাগে।
টেকজুম : শেরপুর জেলায় মোট কতটুকু আবাদি জমিতে তুলশীমালা ধান উৎপাদন হয়?
ড. মুহিত কুমার দে : শেরপুর জেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ এক লক্ষ ছয় হাজার (১০,৬০০০) হেক্টর। আবাদি জমির মধ্যে বার হাজার একশত পাঁচ (১২,১০৫) হেক্টর জমিতে এ বছর তুলশীমালা ধানের আবাদ হয়েছে।
টেকজুম : কোন কোন অঞ্চলে তুলশীমালা ধানের আবাদ হয় এবং কত হাজার কৃষক এ ধান চাষের সাথে জড়িত?
ড. মুহিত কুমার দে : শেরপুর জেলার সবকটি (৫ উপজেলা) উপজেলাতে তুলশীমালা ধানের চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে শেরপুর সদর, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি চাষ হয়। আসলে কৃষকরা খুবই অল্প অল্প জমিতে তুলশীমালা ধান চাষ করে। তারপরও শেরপুর জেলার প্রায় ৮০ হাজার কৃষক পরিবার তুলশীমালা ধান আবাদের সাথে যুক্ত আছে।
টেকজুম : তুলশীমালা ধান আবাদের জন্য কোন ধরণের জমি উপযোগী?
ড. মুহিত কুমার দে : ধান উৎপাদনে উপযোগী এমন যেকোন জমিতে তুলশীমালা ধানের চাষ হয়। তবে এটেল দোয়াশ এবং যেখানে বন্যার পানি জমে থাকে না সে সব জমিতে তুলশীমালা ধানের আবাদ বেশি হয়। তবে মাটির পাশাপাশি আবহাওয়া তুলশীমালা ধানের উৎপাদন, ফলন, সুগন্ধের উপর প্রভাব পড়ে।
টেকজুম : আপনাকে ধন্যবাদ।
ড. মুহিত কুমার দে : টেকজুমকেও ধন্যবাদ।