ঐতিহ্যবাহী কাঁচাগোল্লার ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নিবন্ধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নাটোরের জেলা প্রশাসক।
বুধবার বেলা দেড়টার দিকে এফিডেভিটের মাধ্যমে শিল্পমন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) বরাবর নাটোরের কাঁচাগোল্লার আবেদন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মোঃ আশরাফুল ইসলাম, উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ নাদিম সারওয়ার, শাহাদাত হোসেন খান, নেজারত ডেপুটি কালেক্টরেট, নাটোর, ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার এর সদস্য প্রতাপ পলাশ ও মোঃ দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদ জানান, “নাটোরের কাঁচাগোল্লার ইতিহাস সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে বিদায়ের পূর্বক্ষণে জিআই নিবন্ধনের কাজটি শুরু করেছি। আশা করছি অল্প দিনের মধ্যে জিআই পণ্যের মর্যাদা লাভ করবে নাটোরের কাঁচাগোল্লা।
তিনি আরও বলেন, জিআই তালিকাভুক্তির মধ্য দিয়ে নাটোরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি দেশ বিদেশে কাঁচাগোল্লার ব্র্যান্ডিং ও চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।” কাঁচাগোল্লার ডকুমেন্টেশনে সহযোগিতা করায় ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ইডিসি)-কে ধন্যবাদ জানিয়েছন জেলা প্রশাসক।
জানা যায়, মিষ্টি অনেক পছন্দ করতেন নাটোরের রানী ভবানী। তার রাজপ্রাসাদে নিয়মিত মিষ্টি সরবরাহ করতেন লালবাজারের মিষ্টি বিক্রেতা মধুসুধন পাল।
একদিন মধুসুদন পালের ২০ জন কর্মচারীর সবাই অসুস্থ হয়ে গেলো। দোকানে ২ মণ ছানা রাখা ছিল। ছানাগুলো নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে মধুসূদন ছানার উপর চিনির সিরা দিয়ে ভিজিয়ে দেন। এরপর এগুলো চেখে দেখেন এর স্বাদ হয়েছে অপূর্ব।
এদিকে রানী ভবানীর লোকেরা মিষ্টি নিতে দোকানে আসলে তিনি সিরা দেওয়া ছানাগুলো পাঠিয়ে দেন। রানী ভবানী এই মিষ্টি খেয়ে প্রশংসা করেন এবং এর নাম জানতে চান। মধুসূদন পাল তখন কাঁচা ছানা থেকে তৈরি বলে এর নাম দেন কাঁচাগোল্লা।
এটিই ছিল কাঁচাগোল্লার ইতিহাস। এই গল্প বেঁচে আছে মানুষের মুখে মুখে। নাম গোল্লা হলেও এটি দেখতে গোল নয়। তা তৈরি করা হয় ছানা, চিনি ও এলাচ দিয়ে। কাঁচাগোল্লার সাথে জড়িয়ে রয়েছে নাটোর বাসীর আবেগ ও ভালোবাসা।
তাই আজ থেকে ২৫০ বছর আগে কাঁচাগোল্লা আবিষ্কৃত হয়ে আজও তার সুনাম বজায় রেখেছে। নাটোরের বিয়ে, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও অতিথি আপ্যায়নে সরবরাহ করা হয় কাঁচাগোল্লা।