দক্ষিণ এশিয়ার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের মেধা ও কাজের সুযোগের সেতুবন্ধন তৈরিতে কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ভর আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ‘টিউরিং’, যেটি ডেভেলপারদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী অনলাইন চাকরির সুযোগ করে দেয়। কোম্পানিটি এবার বাংলাদেশের মেধাবী ডেভেলপারদের ক্যারিয়ারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে ও সফলতার পথ সুগম করতে এ দেশে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আল্টো-ভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘টিউরিং’ একটি বিস্তৃত পরিধির চাকরির প্ল্যাটফর্ম; নিজস্ব ‘ইন্টেলিজেন্ট ট্যালেন্ট ক্লাউড’ ব্যবহার করে এটি ডেভেলপারদের জন্য চাকরির উৎস তৈরি, যাচাই-বাছাই করা ও পছন্দমাফিক কাজ পাওয়ার সুযোগ করে দেয়; পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠিত এবং উদ্যোক্তা ধাঁচের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে তাদের সংযোগ স্থাপনে ভূমিকা রাখে। বর্তমানে ‘টিউরিং’ এর প্ল্যাটফর্মে ১৫০টি দেশের ১৫ লাখেরও বেশি ডেভেলপার রয়েছেন, তাদের মধ্যে হাজার হাজার নিবন্ধনকারী ইতোমধ্যে ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’, ‘ডেল’, ‘ডিজনি’, ‘কয়েনবেজ’, ‘প্লাউমি’, এবং ‘ভিলেজএমডি’সহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ তিন শ প্রতিষ্ঠানে পূর্ণকালীন (ফুল-টাইম) দূরবর্তী কাজ বা রিমোট জব-এ নিযুক্ত রয়েছেন। টিউরিং নিশ্চিত করে যাতে চাকরিজীবীরা তাদের কর্মজীবনে প্রতিযোগিতামূলক উপযুক্ত বেতন কাঠামো উপভোগ করতে পারেন ও প্রাপ্য যেকোনো ক্ষতিপূরণ পান; এতে করে তারা অনুপ্রাণিত হন ও ক্রমেই নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে চেষ্টা করেন।
সম্প্রতি ‘টিউরিং’ বৈশ্বিক ও বিনামূল্যের একটি ক্যারিয়ার-কেন্দ্রিক কমিউনিটিরও যাত্রা শুরু করেছে; এটি সকলের জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে, যাতে ডেভেলপারদের প্রয়োজনীয় টুলস ও অন্যান্য সহায়তা দিয়ে গড়ে তোলা যায়, এর ফলে তারা ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনে কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখা পাবেন, তাদের অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার মাধ্যমে দীর্ঘসময় ধরে শেখা ও উন্নতি সাধনে সবাইকে অনুপ্রাণিত করবেন, দক্ষতার পরিচর্যা ও ব্যাপ্তি ঘটাতে পারবেন এবং ‘টিউরিং’-এর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতেও স্বপ্নের ক্যারিয়ার গড়তে একে অন্যকে সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিতে এই কমিউনিটি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, আর তাই ক্যারিয়ার’কে এগিয়ে নিতে ডেভেলপারদের সাহায্য করা সম্ভব হয়।
‘টিউরিং’ এর সিইও অ্যান্ড কো-ফাউন্ডার জোনাথন সিদ্ধার্থ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু প্রসঙ্গে বলেন, “বিগত কয়েক দশকে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলাদেশ তাৎপর্যপূর্ণ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে- এ সময় দেশে গড়ে উঠেছে বিশ্বমানের ইঞ্জিনিয়ার, যাদের স্থানীয় এবং বিশ্ববাজারে প্রযুক্তিখাতে অবদান রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “তবে মেধার এই স্ফুরণ বৈশ্বিক মানদণ্ডের হলেও, সবার জন্য সমানভাবে সুযোগ তৈরি হয় না। ‘টিউরিং’ বিশ্বজুড়ে মেধাবীদের জন্য সমান সুযোগ তৈরির প্রয়াস রাখছে, যাতে তারা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, যেন স্বপ্নের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারে। সিলিকন ভ্যালিতে যোগ্যতার ছাপ রাখার মতো ডেভেলপার রয়েছে বিশ্বজুড়ে এবং তাদের লুকায়িত সম্ভাবনা উন্মুক্ত করাই ‘টিউরিং’ এর লক্ষ্য।”