দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান বারবার সীমান্ত উত্তেজনার মুখোমুখি হয়। যুদ্ধ না হলেও দুদেশের সামরিক প্রস্তুতি ও শক্তি পরস্পরকে পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত রাখে। প্রশ্ন হলো—কে কতোটা শক্তিশালী? চলুন দেখে নেওয়া যাক সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে দুই দেশের সামরিক শক্তির বিস্তারিত তুলনা।
সেনা সংখ্যা ও রিজার্ভ ফোর্স
-
ভারত: ১৪ লাখের বেশি সক্রিয় সেনা সদস্য এবং ৯ লাখ রিজার্ভ ফোর্স।
-
পাকিস্তান: সক্রিয় সেনা সদস্য ৬ লাখ ৫০ হাজারের মতো, রিজার্ভ ৫ লাখ।
📌 বিশ্লেষণ: সেনা সদস্য সংখ্যায় প্রায় দ্বিগুণ এগিয়ে ভারত।
পরমাণু অস্ত্র
-
ভারত: আনুমানিক ১৬৪টি পরমাণু ওয়ারহেড
-
পাকিস্তান: আনুমানিক ১৭০-১৮০টি ওয়ারহেড
📌 বিশ্লেষণ: সংখ্যা বেশি হলেও ভারতের পরমাণু নীতিমালায় ‘No First Use’ নীতি বিদ্যমান; পাকিস্তান এই নীতি অনুসরণ করে না।
বিমানবাহিনী
-
ভারত: প্রায় ২২০০ যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার। রাফাল, সুখোই-৩০, তেজস, মিগ-২৯ রয়েছে বহরে।
-
পাকিস্তান: ১৩০০+ এয়ারক্রাফট। প্রধানত JF-17, F-16, Mirage-III/5 ব্যবহার করে।
📌 বিশ্লেষণ: আধুনিকায়ন ও টেকনোলজিতে ভারত এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তানের F-16 এখনও কার্যকর।
নৌবাহিনী
-
ভারত: ১টি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার, ১৭টি সাবমেরিন, ১৫৫টি সামুদ্রিক যান
-
পাকিস্তান: ৯টি সাবমেরিন, ৫০টির মতো সামুদ্রিক যুদ্ধজাহাজ
📌 বিশ্লেষণ: সমুদ্রে একচেটিয়া আধিপত্য ভারতের, বিশেষ করে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে অবস্থানের কারণে।
ক্ষেপণাস্ত্র ও দূরপাল্লার হামলা সক্ষমতা
-
ভারত: অগ্নি সিরিজ (Agni I-V), ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র
-
পাকিস্তান: শাহীনের বিভিন্ন সংস্করণ, বাবর ক্রুজ মিসাইল
📌 বিশ্লেষণ: ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র রেঞ্জ ও প্রযুক্তিগত নির্ভুলতায় এগিয়ে; তবে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রতিশোধমূলক হামলার জন্য উপযুক্ত।
সামরিক বাজেট (২০২৪)
-
ভারত: $৭৩ বিলিয়ন (বিশ্বে তৃতীয়)
-
পাকিস্তান: $১১ বিলিয়ন
📌 বিশ্লেষণ: বাজেট ব্যবধানে বিশাল ফারাক; পাকিস্তানের উপর আন্তর্জাতিক ঋণ ও অর্থনৈতিক চাপ প্রকট।
যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ও সাম্প্রতিক সংঘর্ষ
-
ভারত ও পাকিস্তান: ১৯৪৭, ১৯৬৫, ১৯৭১ ও ১৯৯৯ সালে বড় যুদ্ধ; ২০১৯ সালে বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক ও পাল্টা হামলা।
📌 বিশ্লেষণ: যুদ্ধ নয়, কিন্তু সীমান্তে স্থায়ী উত্তেজনা। উভয় দেশ এখন যুদ্ধ এড়াতে চায়, কিন্তু প্রস্তুতিও সর্বোচ্চ।