ইতিহাসের পাতায় অনেক গ্রন্থ রয়েছে যেগুলো অদ্ভুত, রহস্যময় কিংবা অলৌকিক বলে বিবেচিত। তবে একটিই বই আছে, যেটিকে “শয়তানের নিজ হাতে লেখা বই” বলা হয় — সেটি হলো Codex Gigas, বা The Devil’s Bible।
কী আছে এই বইতে?
এই বইটি বিশ্বের বৃহত্তম মধ্যযুগীয় হস্তলিখিত পান্ডুলিপি। এর ওজন প্রায় ৭৫ কেজি, পৃষ্ঠার সংখ্যা ৩১০-এর বেশি এবং প্রতিটি পাতা তৈরি করা হয়েছে গাধার চামড়া দিয়ে। বইটিতে আছে বাইবেল, ইতিহাস, চিকিৎসাবিজ্ঞান, ধ্যান, ধর্মীয় নিয়মনীতি, জাদুবিদ্যা সম্পর্কিত পাঠ এবং আরও অনেক কিছু।
কেন বলা হয় “শয়তানের বই”?
বইটির একটি বিশেষ পৃষ্ঠায় পুরোপুরি একটি ভয়ঙ্কর শয়তানের বিশাল চিত্র আঁকা আছে, যেটি দেখতে হিমশীতল, লম্বা শিংওয়ালা, এবং নখযুক্ত প্রাণীর মতো। কিংবদন্তি অনুযায়ী, এই বইটি নাকি একজন সন্ন্যাসী এক রাতেই লেখেন — তবে সেটা সম্ভব ছিল না।
কিংবদন্তি কী বলে?
তৃতীয় শতকে এক সন্ন্যাসী গুরুতর অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। নিজেকে রক্ষা করতে তিনি ঘোষণা দেন যে, তিনি এক রাতেই একটি বিশাল বই লিখে ফেলবেন, যাতে থাকবে পৃথিবীর সব জ্ঞান।
অবশেষে মধ্যরাত পেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি বুঝতে পারেন, এটা অসম্ভব। তখনই তিনি নাকি শয়তানের সঙ্গে আত্মা বিক্রি করে সাহায্য চান, এবং তার সাহায্যেই বইটি শেষ করেন। কাহিনির চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে শয়তানের প্রতিকৃতি নিজ হাতে আঁকেন — এমনটাই বিশ্বাস করেন অনেকে।
কোডেক্স গিগাস কোথায়?
বর্তমানে Codex Gigas সংরক্ষিত আছে Sweden-এর National Library–তে। গবেষকরা এটিকে প্রাচীন ধ্বংসপ্রাপ্ত Bohemia রাজ্যের সৃষ্টি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এটা কি সত্যি?
যদিও ইতিহাসবিদরা মনে করেন বইটি ১৩তম শতকে একাধিক বছরের প্রচেষ্টায় লেখা হয়েছিল, তবে লেখার ধরন, কালি, এবং লিপি একরকম — যা ইঙ্গিত দেয়, এটি একজন মানুষ একটানা লিখেছিলেন, সম্ভবত কয়েক মাস বা বছরের প্রচেষ্টায়। কিন্তু আজও নিশ্চিতভাবে বলা যায় না, কীভাবে একটি মানুষ এত বড় বই এতো নিখুঁতভাবে লিখলেন।