করোনাভাইরাস বাস্তবতায় অনেক মানুষকেই কাজ করতে হচ্ছে বাসায় বসে। অনেক শিক্ষার্থী আবার ক্লাস-ও করছেন অনলাইনে। সবমলিয়ে এ সময়টিতে ইন্টারনেটের গতি ঠিক রাখা তো বটেই, বাড়তি গতি পাওয়াটাও খুবই জরুরি। কিন্তু চাইলেই কী সম্ভব ইন্টারনেটের গতি বাড়িয়ে নেওয়া?
সায়েন্স অ্যালার্টের প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ইন্টারনেটের গতি কিছুটা বাড়িয়ে নেওয়া সম্ভব বাসায় বসেই।
চলুন ওই প্রতিবেদনের বরাতে জেনে নেই কীভাবে বাড়িয়ে নেওয়া সম্ভব ইন্টারনেটের গতি-
সাধারণত ইন্টারনেটের গতি নির্ভর করে আপনার ডিভাইস ও অবস্থানের ওপরে। বিশ্বের অপর প্রান্তে অবস্থিত সার্ভারটিতে পৌঁছানোর সময় আপনার সংযোগকে পার হতে হয় শত শত ডিভাইসের মধ্য দিয়ে। প্রতিটি ডিভাইসের রয়েছে সম্ভাব্য দুর্বল দিক। এতগুলোর মধ্যে শুধু একটি পথ ঠিকমতো কাজ না করলেই প্রভাব পড়ে পুরো ইন্টারনেট অভিজ্ঞতায়।
গতি বাড়াতে ‘ওয়াইফাই তরঙ্গ বুস্ট’
প্রতিটি ওয়্যারলেস রাউটারে চ্যানেল বলে একটি বিষয় থাকে। এরকম চ্যানেলকে ভার্চুয়াল পাইপ হিসেবে চিন্তা করুন। আপনার ডেটাকে এরকম প্রায় ১৪টি চ্যানেলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত করে থাকে রাউটার। নিজ কাজের সুবিধার্থে কিছুক্ষণ পরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে চ্যানেল পরিবর্তন করে নেয় রাউটারটি। কিছু রাউটারে ‘বাই ডিফল্ট’ করে একটি চ্যানেল নির্বাচন করে দেওয়া থাকে। আপনার রাউটারটি দেখুন, শুধু একটি চ্যানেল দেওয়া থাকলে, তা পরিবর্তন করে নিন।
২.৪ গিগাহার্টজ ওয়্যারলেসের জন্য চ্যানেল ১, ৬ এবং ১১ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে সায়েন্স অ্যালার্ট।
এ ছাড়াও ওয়াইফাইয়ের গতি বাড়াতে এক্সটেন্ডার ব্যবহার করতে পারেন।
সতর্ক থাকুন ভাইরাস ও ম্যালওয়্যারের ব্যাপারে
কম্পিউটার ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন, ডিভাইস আপডেট রাখুন এবং অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। সুনির্দিষ্ট ম্যালওয়্যার দূর করতে রিবুট করুন রাউটার। খেয়াল রাখুন রাউটারের ফর্মওয়্যার মডেল আপডেট করা আছে কি না। আপনার চলতি রাউটারটি বেশি পুরোনো মডেলের হলে নতুন মডেলের রাউটার বেছে নেওয়া হতে পারে গতি বাড়িয়ে নেওয়ার একটি উপায়।
ইন্টারনেট ব্যবহারে মিতব্যয়ী হোন
যদি আপনার পরিবারের একাধিক সদস্যের ডিভাইসে স্ট্রিমিং হতে থাকে, তাহলে ইন্টারনেটের গতি কমে পেতে পারেন। ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের ইন্টারনেট ব্যবহারকে একটি নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসুন। সচরাচর যে সময়টিকে ইন্টারনেট ব্যবহারের ‘পিক আওয়ার’ ধরা হচ্ছে, সে সময়টিতে অপ্রয়োজনে ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন না।
বড় সাইজের ফাইল রাতে বা যে সময় ইন্টারনেটের ওপর চাপ কম থাকে, সে সময়টিতে ডাউনলোড করার চেষ্টা করুন।
যোগাযোগ রাখুন ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সঙ্গে
ইন্টারনেট সম্পর্কিত যে কোনো সমস্যায় যোগাযোগ রাখুন ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সঙ্গে। আদতে কিন্তু নিজ বাসার সমস্যাগুলো বাদ দিলে, আপনার হতে তেমন কিছু করার নেই। এক্ষেত্রে আপনাকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করতে পারে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় এটিকে অসীম হিসেবে না দেখে, সীমিত সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করুন। মনে রাখবেন আরও অনেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছেন আপনার আশপাশে। আমরা সবাই ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটু সচতেন হলেও কিন্তু অনেকটাই ঠিক থাকবে ইন্টারনেটের গতি।