ইন্টারনেটে এক ধরনের মায়াজাল৷ কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন ইন্টারনেট নামক এই মায়াজালের অগ্রগতি এবং বিকাশ কাদের হাত ধরে হয়েছে৷ আজকের আর্টিকেলে আমরা এমন কিছু ব্যক্তির নাম জানতে চলেছি যাদের হাত ধরে বিকাশিত হয়েছে ইন্টারনেট নামক মায়াজাল৷ এবং জেনে অবাক হবেন যে এর মধ্যে রয়েছেন একজন বাঙালি বিজ্ঞানীও৷
১.বিজ্ঞানী জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল :
ছোটবেলা থেকেই জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল বিদ্যুৎ এবং চুম্বক নিয়ে ভাবতে ভালোবাসতেন । এবং সেই ভালোবাসা এক পর্যায়ে তাকে এক চরম শিখরে নিয়ে যায়৷ চুম্বকীয় তড়িৎ শক্তি ব্যবহার করে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে কোন ডাটা বা তথ্য উপাত্ত পাঠানো সম্পর্কে মানুষকে সর্বপ্রথম ধারণা প্রদান করেন জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল। সবার কাছে সর্বপ্রথম তিনি চম্বুক এবং তড়িৎ বলের ধারণা তুলে ধরেন৷ ১৮৩৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৭৯ সালে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।
২.স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু :
স্যার জগদীশচন্দ্র বসু একজন বাঙালি বিজ্ঞানী। তার আবিষ্কার রীতিমতো বিশ্ববাসীর কাছে অবহেলিত হয়ে এসেছে। দুঃখের বিষয় এই সকল আবিষ্কার সার্বজনীন স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণে তার বিশ্ব দরবারে তেমন একটা শোরগোল সৃষ্টি করতে পারেননি । তাতে কি হয়েছে?
স্যার জগদীশচন্দ্র বসু প্রথমবারের মতো ব্যবহারিকভাবে একটি ছোট্ট বেতার তরঙ্গ সৃষ্টি করেন। যার মাধ্যমে তিনি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে তথ্য ও উপাত্ত প্রেরণে সক্ষম হন । যদিও বা তার আবিষ্কার সার্বজনীনভাবে স্বীকৃতি পায়নি৷
তিনি একজন বাঙালি বিজ্ঞানী এবং তার জন্ম বাংলাদেশের মাটিতে হাজার ১৮৫৮ সালের জন্মগ্রহণ করেন এই বিজ্ঞানী এবং ১৯৩৮ সালে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।
৩.গুগলিয়েলমো মার্কনী :
১৮৭৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন গুগলিয়েলমো মার্কনি৷ গুগলিয়েলমো মার্কনি এবং স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর আবিষ্কার এর মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই৷ শুধু ভাগ্যের পরিহাস এর জন্য স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর আবিষ্কার সার্বজনীনভাবে স্বীকৃতি পায়নি৷ এবং গুগলিয়েলমো মার্কনি আবিষ্কারটি সার্বজনীনভাবে স্বীকৃতি পায়৷ এবং সেই কারণেই বেতার তরঙ্গের আবিষ্কারক হিসেবে গুগলিয়েলমো মার্কনি কে সবাই চেনে । অথচ তারও বেশ কয়েক বছর আগেই বাঙালি বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু আবিষ্কার করেছিলেন একই বিষয়বস্তু!
৪.রেমন্ড স্যামুয়েল টমলিনসন:
ইন্টারনেটের অগ্রগতিতে বেশ ভালো বড় ধরনের ভূমিকা রাখেন আমেরিকান প্রোগ্রামার রেমন্ড স্যামুয়েল টমলিনসন৷ তাকে ইমেইল এর আবিষ্কারক বলা হয়। তিনি সর্বপ্রথম ইমেইল সিস্টেম আবিষ্কার করেন । ১৯৭১ সালে তিনি আর্পানেট ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে ইমেইল প্রেরণ করতে সক্ষম হন৷
৫.স্টিভ জবস:
স্টিভ জবসকে সবাই চেনেন । প্রশ্ন ফাঁসের দায়ে বহিষ্কারও হতে হয়েছিল স্টিভ জবসকে৷ কিন্তু তারপরও তিনি হাল ছাড়েননি৷ বোতল কোড়ানোর কাজ করেছেন অনেকদিন৷ ১৯৭৪ সালের ১ এপ্রিল তিনি প্রতিষ্ঠা করেন অ্যাপেল কোম্পানি৷ এবং অ্যাপেল তাদের পার্সোনাল কম্পিউটার আবিষ্কার করে বিশ্ব দরবারে বেশ বড়সড় সাড়া ফেলেছিল৷ যার ফলে ইন্টারনেট তখন ছড়িয়ে পড়ে সবার হাতে৷
৬.উইলিয়াম হেনরি বিল গেটস বা বিল গেটস:
এই ব্যক্তিকে চেনেন না এমন মানুষ খুব কমই রয়েছে । মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনীর তালিকায় দ্বিতীয়৷ তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মাইক্রোসফট কোম্পানি যা দিয়ে বিশ্বের অধিকাংশ কম্পিউটার পরিচালিত হচ্ছে৷ ফলে ইন্টারনেট ব্যাবহার সহজতর হয়েছে৷
৭.বার্নাস লি:
ইন্টারনেটের একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলেন বার্নাস-লি৷ তাকে www এবং হাইপারটেক্সট ট্রান্সফার প্রোটোকল এর আবিষ্কারক তিনি৷
৮.মার্ক জুকারবার্ক :
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী সোশ্যাল মিডিয়ার নেটওয়ার্ক এর প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ মাত্র ৪ জন বন্ধুকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেন ফেসবুকের। কেবলমাত্র তার কারণেই আজ বিশ্বের অর্ধেক মানুষ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোসিয়াল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এ যোগ দিতে পেরেছে বিশ্ববাসী৷ ফেসবুকের মত একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা গড়ে তোলায় তিনি ইন্টারনেটের বিকাশে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন৷ ২০০৪ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছোট্ট কক্ষ থেকে শুরু করে এখন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে তার মহৎ আবিষ্কার ফেসবুক!