ইন্টারনেটের জালে আজ গোটা বিশ্ব আবদ্ধ। ইন্টারনেট ছাড়া জীবন ভাবাটাই দায়। আর ওয়াইফাই’র দৌলতে তা আরও হাতের মুঠোয়। কিন্তু, এই ওয়াইফাই কি শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়? এত বেশি ওয়াইফাই ব্যবহারের কোনো প্রভাব কি আমাদের শরীরে পড়ে না?
উওর হলো হ্যাঁ। রাতে ঘুমানোর সময় মোবাইলটা হয় বিছানা থেকে কিছুটা দূরে রাখবেন বা সেটা বন্ধ করে রাখবেন। কেননা চালু মোবাইলের ওয়াইফাই বিকিরণ ভয়ঙ্কর ক্ষতির কারণ হতে পারে। সম্প্রতি, উওর জাটল্যান্ডের নবম শ্রেণির একদল ছাএছাএী বিভিন্ন রকমের শাকের বীজ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছে, চালু মোবাইলের ওয়াইফাই বিকিরণ প্রাণের পক্ষে চরম ক্ষতিকারক। তা মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে।
পরীক্ষার ফলাফলের যথেষ্টই উৎসাহিত ইংল্যান্ড, হল্যান্ড ও সুইডেনের গবেষকরা। এ ব্যাপারে আরও গবেষণা চালাতে চেয়েছেন স্টকহলমের ক্যারোলিনস্কা ইনিস্টিউটের বিশিষ্ট গবেষক ওলে জোহানসন। তিনি বেলজিয়ান অধ্যাপক ম্যারি-ক্লেয়ার কামার্তকে সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষাটা আবারও করতে চেয়েছেন। পরীক্ষাটা যারা চালিয়েছে সেই ছাএছাএীদের অন্যতম লি নিয়েলসন জানিয়েছেন, ৪০০ রকমের শাকের বীজের ওপর তারা পরীক্ষাটা চালিয়েছেন।
দুটি আলাদা ঘরে একই তাপমাত্রায় ৬ টি ট্রেতে ওই শাকের বীজগুলোকে রাখা হয়েছিলো। ১২ দিন ধরে ওই দুটি ঘরে রাখা শাকের বীজগুলোকে সম পরিমাণ জল আর সূর্যালোক দেয়া হয়েছিলো তাদের বেড়ে ওঠার জন্য। তাদের মধ্যে শাকের বীজ রাখা হয়েছে এমন ৬ টি ট্রে’কে রাখা হয়েছিলো দু’টি ওয়াইফাই রাউটারের কাছাকাছি। সাধারণ মোবাইল ফোন থেকে যতটা বিকিরণ আসে, ওই ওয়াইফাই রাউটারগুলো থেকে বিকরণ আসে ততটাই।
১২ দিন পর দেখা গেলো ওয়াইফাই রাউটারের কাছে রাখা শাকের বীজগুলো মোটেই বাড়েনি। তাদের বেশির ভাগই হয় শুকিয়ে গিয়েছে বা মরে গেছে। আর যে শাকের বীজ ভরা ট্রে’গুলোর ধারে কাছে কোনো ওয়াইফাই রাউটার ছিলো না, সেগুলো খুব সুন্দর ভাবে বেড়ে ওঠে পানি আর সূর্যালোক পেয়ে।
কোনো ডিভাইস এর সঙ্গে ওয়াইফাইকে কানেক্ট করতে হলে কেবল লাগে না। WLAN-এর মাধ্যমে তা কানেক্ট করা হয়। এই WLAN সিগন্যাল বা ইলেকট্র ম্যাগনেটিক ওয়েভ মানব শরীরের জন্য স্বাস্থকর মোটেও নয়। এর জেরে মানব শরীরের বৃদ্ধির ক্ষতি হয়। ওয়াইফাইয়ের WLAN-এর সিগন্যালের ফলে যে ল্যুপ সৃষ্টি হয়, তার প্রভাব অত্যন্ত ক্ষতিকর।
এর ফলে নিম্নের সমস্যাগুলো দেখা যেতে পারে;
মনোযোগের সমস্যা, ঘুমের সমস্যা, মাঝেমধ্যেই মাথা যন্তণা, কানে ব্যথা ও ক্লান্তি। অথচ ওয়াইফাই’র ব্যবহার সম্পূর্নরূপে বন্ধ করা হয়তো এখনই সম্ভব নয়। তবে তা-ওয়াইফাই’র কু প্রভাব কমানোর কিছু উপায় রয়েছে।
১. বেডরুম বা রান্নাঘরে ওয়াইফাই’র রাউটার বসাবেন না।
২. যখন ব্যবহার করছেন না ওয়াইফাই বন্ধ রাখুন।
৩. মাঝেমধ্যে কেবল-এর সাহায্য ফোন ব্যবহার করুন। ওয়াইফাই বন্ধ রাখুন সে সময়ে।
৪. ঘুমানোর সময় ওয়াইফাই কানেকশন বন্ধ রাখুন।
বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, উক্ত পদক্ষেপে ওয়াইফাই’র প্রভাব কমানো সম্ভব। তাই আপনার বাড়িতে ওয়াইফাই থাকলে আপনিও শুরু করুন।