ডেস্কটপ কম্পিউটারের চেয়ে সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় কাজ কিংবা ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে ল্যাপটপকেই প্রাধান্য দেন অনেকেই। তবে ডেস্কটপ নাকি ল্যাপটপ কে সেরা কিংবা কোনটা কিনলে আপনি জিতছেন এ প্রশ্নে রীতিমতো যুদ্ধ করাও সম্ভব।
দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য
ডেস্কটপ কম্পিউটার আপনার বাসা বা অফিসের ডেস্ক বা টেবিলের ওপর থাকবে। এতে বিভিন্ন অংশ থাকে। মনিটর, সিপিইউ, কি-বোর্ড, মাউস ও ইউপিএস। অন্যদিকে ল্যাপটপ বা নোটবুক সহজেই বহনযোগ্য। একের ভেতর সব হিসেবেই পরিচিত এটি। এতে বিল্ট ইন স্ক্রিন, কি-বোর্ড, মাউসের কাজের জন্য টাচ প্যানেল বা ট্র্যাকপ্যাড, ইউএসবি পোর্ট থাকে।
কেন ল্যাপটপ কিনবেন
শিক্ষার্থীদের জন্য ল্যাপটপ সবচেয়ে ভালো। কারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাসে অংশগ্রহণের জন্য বাসার বাইরে স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয়। আর এক্ষেত্রে ল্যাপটপ শিখন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। চলার পথে ল্যাপটপ হাত থেকে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয় থাকে। তবে বর্তমানে বিল্ড কোয়ালিটির দিক থেকে শক্তপোক্ত ল্যাপটপ পাওয়া যায়। যেগুলো হাত থেকে পড়লেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
মূলত হালকা কাজ, যেমন- পড়া, ওয়ার্ডের কাজ, ভিডিও স্ট্রিম করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের জন্য ল্যাপটপ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যদি আপনি কিংবা আপনার সন্তান সারা দিনে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিচরণের স্বাধীনতা চান, তাহলে পরিপূর্ণ চার্জ দেয়া একটা ল্যাপটপ আপনাকে সেই সুযোগ দেবে। তবে বর্তমানে উন্নতমানের ল্যাপটপও বাজারে আনছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব ল্যাপটপের মাধ্যম গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, গেমিং, লাইভ স্ট্রিমিংসহ বিভিন্ন কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। তবে এ ধরনের ল্যাপটপের বাজারমূল্য অনেকের হাতের নাগালের বাইরে থাকে।
কেন ডেস্কটপ কিনবেন
যদি আপনি অনেক কিছু করার জন্য কম্পিউটার খুঁজে থাকেন, তবে ডেস্কটপ আপনার জন্য। ডেস্কটপে আপনি সহজেই বড় ফাইল সংরক্ষণ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে আপনি আপনার পছন্দের গেমগুলোও ভালো গ্রাফিক্সে খেলতে পারবেন। এছাড়াও প্রয়োজন অনুযায়ী আপনি আপনার ডেস্কটপ আপডেট করতে পারবেন।
আপনি চাইলে ডেস্কটপে অতিরিক্ত র্যাম, ভালো গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। যেটা আপনার কম্পিউটারের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে। এছাড়াও ডেস্কটপ চালাতে কোনো ব্যাটারির প্রয়োজন হয় না। তাই আপনি নিশ্চিন্তে চার্জ দেয়ার চিন্তা ছাড়াই দীর্ঘ সময় এটি ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু আপনি চাইলেই আপনার ডেস্কটপ কম্পিউটার সহজে বহন করতে পারবেন না।
ডেস্কটপে অল ইন ওয়ান পিসি সুবিধাও রয়েছে। এতে মনিটরের সঙ্গেই কম্পিউটারের অন্যান্য অংশ জুড়ে দেয়া থাকে। তাই এসব কম্পিউটার সহজেই বহন করা সম্ভব হয়। তবে এগুলো অনেক ব্যয়বহুল এবং আপনি চাইলেই আপডেট করতে পারবেন না। কিন্তু প্রাথমিকভাবে এটা আপনাকে কম খরচেই সব সুবিধা দেবে।
যে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে
যদি কোনো ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপের কনফিগারেশন একই হয়, তবে ল্যাপটপের দাম বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। তবে যত দামিই হোক না কেন ল্যাপটপের যেসব প্রতিবন্ধকতার কথা বলা হয়েছে, সেগুলো সব ক্ষেত্রেই উপস্থিত। তবে কাজের পাশাপাশি গেমিং এবং বিনোদনের জন্য এখনো অনেকে ভালো কনফিগারেশনের ল্যাপটপ কিনে থাকেন।
অন্যদিকে কনফিগারেশনের দিক থেকে একটি ভালো ডেস্কটপ কিনতে আপনাকে খুব বেশি খরচ করতে হবে না। তবে ডেস্কটপ পিসি আপডেট সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।
যদি আপনার পুরনো ডেস্কটপের কর্মক্ষমতা কমে যায়, তবে আপনাকে সেটার হার্ডওয়্যার পরিবর্তন করতে হবে। মূলত কম্পিউটারের প্রসেসর, হার্ড ড্রাইভ, র্যাম এবং গ্রাফিক্স পরিবর্তন করতে হয়। শুধু প্রসেসর পরিবর্তন করলে কর্মক্ষমতা বাড়বে না। প্রসেসরের কর্মক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ র্যাম, গ্রাফিক্স এবং হার্ড ড্রাইভ আপডেট করতে হবে। কিন্তু ল্যাপটপে আপনি সেই সুযোগ পাবেন না। ল্যাপটপে সর্বোচ্চ র্যাম বাড়ানো যায় এবং এসএসডি স্টোরেজ সংযোগ করা যায়।