বর্তমান সময়ে আমাদের অনেকেরই ইউটিউব চ্যানেল আছে! খুব সাধারণ ভ্লগিং থেকে শুরু করে প্রফেশনাল লেভেল এর ভিডিও ধারন যে যেটাই করুক না কেনো, সেটা শখ অথবা পেশা’র জন্য আপনার কিন্তু একটা ক্যামকোর্ডার খুব জরুরি। বিগেনার রা চেষ্টা করে কম প্রাইস এ সেরা টা যেমন বেছে নেওয়ার তেমন প্রফেশনালরা ও কিন্তু কোনো দিক দিয়ে কম নন! তারাও নিত্য নতুন ক্যামকোর্ডার ব্যবহার বা চেঞ্জ করতে পছন্দ করেন। আপনি যদি ইউটিউবার হন বা হবেন বলে ঠিক করেছেন আপনার জন্য সেরা ৫ টি ক্যামকোর্ডার এর তালিকা নিয়েই ফিচার টি সাজানো, চলুন দেখে নেওয়া যাক।
ইউটিউবারদের জন্য সেরা ৫ টি ক্যামকোর্ডার
১) Canon VIXIA HF R800
VIXIA HF R800 হল Canon-এর সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্যামকর্ডারগুলির মধ্যে একটি, এবং এর যথেষ্ট কারন ও আছে।
আমরা এখন পর্যন্ত যা দেখেছি সেই তুলনায়এই মডেলটি তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী এবং সিম্পল।
ভিডিওর গুণমান: প্রথমত, খুব সহজেই HD ভিডিও রেকর্ডিং করতে পারবেন কারণ এই মডেলটিতে 1080p-এ ভিডিও নিতে কোনো সমস্যা নেই।
দূরত্বের ব্যাপ্তি: মডেল থেকে সর্বনিম্ন দূরত্ব প্রায় 50 থেকে 60 সেমি হতে পারে, অর্থ্যাৎ, আপনাকে ক্যামেরাটিকে অযৌক্তিকভাবে দূরে রাখতে হবে না ভালো ছবি তোলার জন্য!
ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন: এই ক্যামেরাটি একটি অপটিক্যাল স্ট্যাবিলাইজেশন সিস্টেমের সাথেও সজ্জিত, যা নড়াচড়ার সময় রেকর্ড করা আরও সহজ করে তোলে।
২) Sony HDRCX405
Sony এর এই মডেলটি গ্রাহকদের জন্য আরেকটি সাশ্রয়ী বিকল্প যারা তাদের YouTube চ্যানেল সেট আপ করার সময় অর্থ বাঁচাতে চান।
এটি কোনো সমস্যা ছাড়াই 60 fps-এ 1080p-এ রেকর্ড করতে পারে, এবং এর ওয়াইড-এঙ্গেল আপনাকে বেস্ট ভিউ টা দিতে সক্ষম হবে।
সেন্সর: এই ক্যামেরার সেন্সরটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে এটির জন্য খুন অল্প পরিমাণ জায়গার প্রয়োজন হয়।
পোর্টেবল: অনেক ফোল্ডিং ক্যামকর্ডারের মতো, Sony-এর এই মডেলটিকে খুব সহজেই ফোল্ড করা যায় এবং সহজ বহন যোগ্য ও।
ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন: SteadyShot প্রযুক্তির দ্বারা আপনাকে রেকর্ড করার সময় ক্যামেরার ঝাঁকুনি এবং অন্যান্য বিষয়গুলির সাথে যুদ্ধ করতে হবে না।
লাইট কন্ডিশন: ইন্টেলিজেন্ট অটো সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্যামেরা সেটিংসকে পরিবর্তন করতে সক্ষম আশেপাশের আলোর অবস্থার সাথে।
সাউন্ডঃ আশাপাশের অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দ বাদ দিয়ে লাউড এন্ড ক্লিয়ার শব্দ দিতে সক্ষম এর অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেম।
৩) Panasonic HC-V180k
Panasonic এর এই ভিডিও ক্যামেরাটি একই সাথে যেমন দাম কম ঠিক তার ই সাথে মানেও ভালো! দাম এবং মান এর এত সুন্দর সমন্বয় সাধারণত অন্য কোনো ক্যামকোর্ডে পাবেন না।
ক্যামকোর্ডটি হাতে নিয়ে আপনি প্রথম যে জিনিসটি লক্ষ্য করবেন তা হলো এর চিত্তাকর্ষক ভিডিও গুণমান, কারণ এই মডেলটি সম্পূর্ণ HD 1080p ভিডিও ধারণ করতে পারে।
অবশ্যই, এই সময়ে ফুল এইচডি প্রত্যাশিত কিছুই, তবে যা আমাদের সবচেয়ে অবাক করেছে তা হল এর সাধারণ বোতামগুলির পরিবর্তে থাকা টাচস্ক্রিন!
টাচস্ক্রিনঃটাচস্ক্রীন এর সাহায্যে খুব সহজেই কমান্ড দিতে পারবেন, তাছাড়া দেখতেও বেশ স্মার্ট লুক দিবে।
ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন:আপনি যদি আপনার ভিডিও চলার সময় ঝাপসা বা নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার বিষয়ে চিন্তিত হন, তাহলে ফাইভ-অক্সিস ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন সিস্টেম ভিডিও স্থির রাখতে আপনাকে সাহায্য করবে।
মাইক্রোফোন:এই ক্যামেরার মাইক্রোফোনটিও আশ্চর্যজনকভাবে সক্ষম, কারণ এটি দূরের ভয়েস ও সুন্দর ভাবে রেকর্ড করতে পারে এবং এতে 2-চ্যানেল ফ্যাসিলিটিও রয়েছে।
লেভেল শট: এছাড়াও লেভেল শট কার্যকারিতা রয়েছে যা নিশ্চিত করে যে আপনি কৌণিক মাটিতে শুটিং করার সময় আপনার ভিডিওটি কাত হবে না।
কমপ্যাক্ট সাইজ:এই ক্যামকর্ডারের ছোট আকার এটিকে আউটডোর ভিডিও এবং অন্যান্য ধরণের ব্রডকাস্টিং এর জন্য নিয়ে যেতে সুবিধাজনক।
কম আলোর অবস্থা: এই ক্যামেরায় থাকা BSI সেন্সরগুলি আপনাকে রাতে ভিডিও করতে বাড়তি সুবিধা দিবে।
জুম:যদি আপনি যদি একজন ভ্লগার হন তবে অনেক পরিস্থিতিতে জুম কাজে আসবে না, তবে 50x অপটিক্যাল জুম এই মডেলের অন্যতম প্রধান আকর্ষণীয় দিক। ইন্টেলিজেন্ট জুম সেই পরিসরকে 90x পর্যন্ত প্রসারিত করতেও সক্ষম ফলে দূরের বস্তুও সহজে ভিডিও করতে পারবেন।
৪) Panasonic HC-V770
আপনি যদি ইউ টিউবার হন, এবং ফুল HD স্লো মোশন এর ভিডিও চান এই ক্যামকোর্ডার টি আপনার জন্যই। যদিও Panasonic HC-V770 এর বিভিন্ন কোয়ালিটির আছে।
স্মুথ ভিডিও:
ক্রিস্টাল ইঞ্জিন আপনার ভিডিওর অবাঞ্চিত শব্দ কমানোর জন্যও সাহায্য করবে, এবং সাউন্ড সিস্টেম ক্লিয়ার রাখবে।
nFC: NFC-এর ব্যবহার স্মার্ট ডিভাইস গুলোর সাথে সংযুক্ত করা ব্যাপারে আগের চেয়ে সহজ করে দিয়েছে। ফলে ক্যামেরার কাছে না যেয়েও শুধু মাত্র রিমোট টাচ এর দ্বারা আপনার কাজ করতে পারবেন।
কম আলোতে পারফরম্যান্স: BSI (ব্যাকসাইড ইলুমিনেশন) সেন্সরকে ধন্যবাদ, এই ক্যামেরাটি কম আলোর অবস্থার জন্যও উপযুক্ত। ফলে রাতে যারা শ্যুট করে তাদের জন্য ক্যামকোর্ডার টি লাইফ সেভার হিসেভে কাজ করে।
আকারঃ সহজেই পরিবহনযোগ্য সাইজ এর ফলে যেখানে ইচ্ছা নিয়ে যেতে পারবেন।
৫) Canon VIXIA HF G40
Canon VIXIA HF G40 একটি হাই-এন্ড মডেল যা বিগেনার থেকে প্রফেশনাল YouTubers হতে চান তাদের জন্য। দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে চাইলে এই ক্যামকর্ডার হতে পারে আপনার বেস্ট চয়েজ।
ভিডিওর গুণমান: এটি স্মুথ এবং HD ভিডিও রেকর্ডিং এর ক্ষেত্রে খুব ই ভালো পারফর্মেন্স দেয়।
সেন্সর: অত্যাধুনিক CMOS Pro সেন্সর ব্যবহার এর কারনে এক্সিলেন্ট কোয়ালিটি, ইমেজ শার্পনেস নিশ্চিত করে। এছাড়া অল্প আলো তে ভিডিও করতে ও সাহায্য করে কোনো সমস্যা ছাড়াই।
স্টোরেজ স্পেস: একাধিক SD কার্ড স্লট অন্তর্ভুক্ত করা আছে ফলে আপনি যদি এই মডেলে দুটি উচ্চ-ক্ষমতার SD কার্ড ব্যবহার করেন, তাহলে সাধারণত স্টোরেজ স্পেস নিয়ে আপনার খুব বেশি সমস্যা হবে না কারন কার্ডগুলি যখন ইচ্ছা অদলবদল করতে পারবেন।
ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন:
ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন সিস্টেম এর কারনে ছবিতে যে কোনও অস্পষ্টতা বা অন্য কোনও অনুরূপ সমস্যায় আপনাকে পরতে হবে না। powered অথবা Dynamic mood সিলেক্ট করে সহজেই ঝকঝকে ছবি পেতে পারেন যা আপনার ইউটিউবের ভিডিওর গ্রহনযোগ্যতাকে আরো বাড়িয়ে দিবে
এবার নিশ্চয় বুঝে গেছেন কোনটা ঠিক আপনার দরকার! বুদ্ধিমানের মতন এবার সঠিক যায়গায় ঠিক ক্যামকোর্ডার এ টাকা ইনভেস্ট করুন আশা করি ইউটিউবার হিসেবে আপনার যাত্রা মসৃণ হবে! আর একটা কথা মনে রাখবেন ঝকঝকে, স্মুক, আর হাই কোয়ালিটি সাউন্ড কিন্তু আপনার দর্শকদের খুব সহজেই আকৃষ্ট করে ভিউ বাড়াতে সাহায্য করবে!