কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) যুগে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ থাকাটা বেশ জরুরি। সাধারণ বা পেশাদার কাজ যেমনই হোক, ইন্টারনেট সংযোগে ব্যাঘাত মানে পিছিয়ে পড়া। ঘরে কিংবা অফিসে ইন্টারনেটের জন্য নির্ভর করতে হয় ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের ওপর। ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে যে প্যাকেজ নেয়া হয় তার ওপর যেমন ইন্টারনেটের গতি নির্ভর করে, একইভাবে নির্ভর করে ঘরে বা অফিসে থাকা ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে। এজন্য কিছু বিষয় লক্ষ রাখতে হয়। গিজচায়নার প্রতিবেদনে এমনই টিপস বা পরামর্শের কথা বলা হয়েছে যেগুলো অনুসরণ করলে ভালো ইন্টারনেট গতি পাওয়া যাবে।
রাউটার উপযুক্ত স্থানে রাখা: আবদ্ধ বা ওয়াই-ফাই সিগন্যাল বাধা পেতে পারে এমন স্থানে না রেখে যতটা সম্ভব খোলামেলা স্থানে রাখতে হবে। সম্ভব হলে সমতলে, নয়তো দেয়ালে কিছুটা ওপরে টাঙানো যেতে পারে। তবে লক্ষ রাখতে হবে, যেসব ডিভাইসে বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয় সেগুলোর কাছাকাছি যেন রাউটার থাকে।
ইথারনেট কেবলের ব্যবহার: ঝামেলামুক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়ে থাকে যাতে তারের ঝামেলা পোহাতে না হয়। তবে রাউটার থেকে ইথারনেট কেবল ব্যবহার করলে আরো বেশি স্থিতিশীল ইন্টারনেট পাওয়া যাবে। ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, সেটটপ বক্সের মতো কিছু ডিভাইসে ইথারনেট সংযোগের ব্যবস্থা থাকে। এসব ক্ষেত্রে ভালোমানের কেবল কিনলে ওয়াই-ফাই সিগন্যালের চেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে।
চ্যানেল বা ব্যান্ডে পরিবর্তন: ওয়াই-ফাই সিগন্যালে ১, ৬ ও ১১ চ্যানেল থাকে। পাশাপাশি একাধিক রাউটারে যদি একই চ্যানেল ব্যবহার করা হয় তাহলে ইন্টারনেটের গতি কমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে ভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া অধিকাংশ রাউটারে ডুয়াল ব্যান্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন ২ দশমিক ৪ ও ৫ গিগাহার্টজ। রাউটারের সেটিংস থেকে জানা যাবে ডুয়াল প্রযুক্তি আছে কিনা। ২ দশমিক ৪ গিগাহার্টজের রাউটার বড় অংশজুড়ে ইন্টারনেট দিতে পারলেও গতি কম থাকে। আর ৫ গিগাহার্টজ এর ভিন্ন। তাই প্রয়োজন অনুসারে পরিবর্তন করা যেতে পারে।
রাউটার পরিবর্তন: দামভেদে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রাউটারগুলো নানা সুবিধা দিয়ে থাকে। তবে মোটা দাগে কতগুলো ডিভাইসকে ও কত এলাকাজুড়ে ইন্টারনেট সংযোগ দিতে পারছে এটিই মুখ্য বিষয়। এক থেকে একাধিক অ্যান্টেনার রাউটার বাজারে পাওয়া যায়। একটি রাউটার অনেকদিন ব্যবহার করলে ইন্টারনেট গতি কম পাওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি প্রয়োজন অনুসারে পরিবর্তন করা যেতে পারে রাউটার।
ওয়াই-ফাই ভার্সন: ওয়াই-ফাই ৬, ৬ই ও ৭ ভার্সন সম্পর্কে জানাশোনা থাকলে ইন্টারনেট গতি বেশি পাওয়া যেতে পারে। প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে ততই বিভিন্ন ভার্সনের ডিভাইস আসছে। সে হিসেবে ইন্টারনেট গ্রহণ করার ক্ষমতাও বাড়ছে। তাই রাউটারের ভার্সন সম্পর্কে জানা জরুরি। স্বাভাবিকভাবেই ভার্সন যত বেশি হবে তত ভালো সেবা পাওয়া যাবে। তবে সাধারণ ব্যবহারে ওয়াই-ফাই ৬ যথেষ্ট। তবে অনেক ডিভাইসে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পেতে ভার্সন ৬ই ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্যদিকে ক্লাউড কম্পিউটিং, অগমেন্টেড রিয়েলিটিসহ উচ্চ রেজল্যুশনের স্ট্রিমিংয়ের জন্য ভার্সন ৭ উপযুক্ত।
ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ডার: দুর্বল কাভারেজ এবং একাধিক রাউটারের ঝামেলা থেকে রেহাই দিতে পারে ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ডার। বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে যুক্ত করলেই বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাবে।
অব্যবহৃত ডিভাইস বিচ্ছিন্ন: এক রাউটারে অনেকগুলো ডিভাইস যুক্ত থাকতে পারে। একটা সময় পর সেগুলোর অনেকটাই ব্যবহৃত হয় না। এক্ষেত্রে সেগুলো বিচ্ছিন্ন করাই শ্রেয়। এতে নেটওয়ার্কে চাপ কমবে, গতি বেশি পাওয়া যাবে।