আমাদের আধুনিক জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে এসি, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে। অনেকে নতুন এসি কিনতে চাচ্ছেন। তবে জানেন কি, কোন এসি আপনার ঘরের জন্য উপযুক্ত। কোন এসি আপনার মাসের বিদ্যুৎ খরচ অনেক বেশি বাড়িয়ে দেবে না।
এসি কেনার সময় ইনভার্টার নাকি নন-ইনভার্টার কোন এসি কেনা ভালো হবে, কোনটায় কী পার্থক্য চলুন জেনে নেওয়া যাক-
কম্প্রেসারের পার্থক্য
ইনভার্টার এসিতে ব্যবহৃত কম্প্রেসারের গতি ঘরের তাপমাত্রা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হয়। এটি ধীরে ধীরে ঘর ঠান্ডা করে। কমপ্রেসর পুরোপুরি বন্ধ হয় না। ঘর ঠান্ডা হয়ে গেলে মোটর চলার গতি কমে যায়। নন-ইনভার্টার এসির ক্ষেত্রে কম্প্রেসার একটি নির্দিষ্ট গতিতে চলে এবং সম্পূর্ণ বন্ধ বা সম্পূর্ণ চালু হয়। ফলে এটি ঘনঘন অন-অফ হয় এবং বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে।
বিদ্যুৎ খরচ
ইনভার্টার এসি এগিয়ে বিদ্যুৎ খরচের ক্ষেত্রে। ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি বিদ্যুৎ খরচে অনেকটাই সাশ্রয়ী। কারণ এটি প্রয়োজন অনুসারে শক্তি খরচ করে। ঘরে কতজন মানুষ আছেন কিংবা বাইরের আবহাওয়া কেমন, সেই অনুযায়ী ইনভার্টার এসি নিজেকে মানিয়ে তবেই চলে।
ইনভার্টার এসিতে ব্যবহৃত ‘পালস উইথড মডুলেশন’ প্রযুক্তির ফলে কম্প্রেসার একটি নির্দিষ্ট গতিতে চলে। ফলে দ্রুত ঠান্ডা হয় ঘর, কম্প্রেসারের উপর চাপ পড়ে না। এসির আয়ু বৃদ্ধি পায়। রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনও কম হয়।
নন-ইনভার্টার এসিগুলিতে সাধারণত পুরোনো ধরনের রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করে বানানো হয়, যেগুলো পরিবেশবান্ধব নয়। ইনভার্টার এসিতে ব্যবহৃত হয় আর৩২-এর মতো পরিবেশবান্ধব রেফ্রিজারেন্ট।
আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর
ইনভার্টার এসি আর্দ্রতা দূর করতে কার্যকর, আর্দ্র পরিবেশে ইনভার্টার এসি দারুণ কার্যকর। তাপমাত্রার হঠাৎ পরিবর্তনের সঙ্গেও নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে, ফলে ঘর থাকে সমান ঠান্ডা। যদিও ইনভার্টার এসির প্রাথমিক দাম তুলনামূলক বেশি, তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম। নন-ইনভার্টার এসি কেনার সময় সস্তা হলেও ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে, রক্ষণাবেক্ষণ খরচও বেশ খানিকটা বেশি।
যদি আপনি দীর্ঘমেয়াদি সাশ্রয়ের কথা ভাবেন এবং পরিবেশবান্ধব ও উন্নত প্রযুক্তির এসি চান, তাহলে ইনভার্টার এসিই কিনতে পারেন। তবে কম খরচে প্রাথমিকভাবে এসি কিনতে চাইলে নন-ইনভার্টার এসিও কেনা যায়।