সময়ের ধারাবাহিকতায় মানুষ এখন তথ্যপ্রযুক্তি এবং যোগাযোগের মাধ্যমগুলো সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন। নতুন নতুন উদ্ভাবন ও সেরা প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুততর যোগাযোগ রক্ষা করাই এখন সবার অন্যতম লক্ষ্য । এজন্যে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম স্মার্টফোনের চাহিদাও এখন আরও অকল্পনীয়ভাবে বেড়েছে। এমনকি মহামারি করোনার প্রকোপ শুরু হবার পর, এখন সাধারণ স্মার্টফোনের পাশাপাশি ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনের চাহিদাও ব্যাপক হারে বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন হলো কোনো ব্রান্ডের, তাদের নিজস্ব যেকোনো একটি নির্দিষ্ট সিরিজের সবচেয়ে উন্নত ও সেরা প্রযুক্তির অত্যাধুনিক স্মার্টফোন। তাই রুচি ও প্রয়োজনের সঙ্গে আর্থিক সঙ্গতি থাকলেই এখন গ্রাহকদের প্রথম পছন্দ ফ্ল্যাগশিপ সিরিজের স্মার্টফোন। এই মুহূর্তে দেশের বাজারে থাকা সেরা ৩টি ফ্লাগশিপ স্মার্টফোন নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।
ওয়ানপ্লাস ৯ আরটি : গত বছর অক্টোবর মাসে চীনের বাজারে পা রাখে ওয়ানপ্লাস ৯ আরটি স্মার্টফোনটি। এই মিড রেঞ্জ ফোনের চীনা ভ্যারিয়েন্টে রয়েছে ৬.৬২ ইঞ্চির ফুল এইচডি+ (১,০৮০×২,৪০০ পিক্সেল) স্যামসাং ই৪ অ্যামোলেড ডিসপ্লে। এই ডিসপ্লের রিফ্রেশ রেট ১২০ হার্টজ ও অ্যাসপেক্ট রেশিও ২০:৯।
পারফরম্যান্সের জন্য এই ফোনে ব্যবহার করা হয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮ প্রসেসর। ফোনটি সর্বাধিক ১২ জিবি এলপিডিডিআর৫ র্যাম ও ২৫৬ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজে সহ চীনা বাজারে উপলব্ধ এবং ওয়ানপ্লাস ৯ আরটি রান করে অ্যান্ড্রয়েড ১১ ভিত্তিক কালারওএস কাস্টম স্কিনে।
ফটোগ্রাফির জন্য ওয়ানপ্লাস ৯ আরটি ফোনে রয়েছে ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা ইউনিট। ক্যামেরা গুলি হল – ৫০ মেগাপিক্সেলের সনি আইএমএক্স৭৬৬ প্রাইমারি ক্যামেরা সেন্সর, ১৬ মেগাপিক্সলের সেকেন্ডারি সেন্সর ও ২ মেগাপিক্সেলের ম্যাক্রো শুটার। এছাড়াও, এই ফোনে সেলফি ও ভিডিও কলিংয়ের জন্য দেওয়া হয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেলের সনি আইএমএক্স৪৭১ ক্যামেরা সেন্সর।
পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য ওয়ানপ্লাসের এই ফোনে পাওয়া যাবে ৬৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট সহ ৪,৫০০ এমএএইচ ব্যাটারি।
শাওমি ১১ টি প্রো : ইউরোপ ভিত্তিক শাওমি শাওমি ১১ টি প্রো স্মার্টফোনে রয়েছে ৬.৬৭ ইঞ্চি ১০ বিট অ্যামোলেড ডিসপ্লে সঙ্গে ১২০ হার্জ রিফ্রেশ রেট। এই ডিসপ্লে, ১২০ হার্টজ ডায়নামিক রিফ্রেশ রেট, ৪৮০ হার্টজ টাচ স্যাম্পলিং রেট, ১,০০০ নিট পিক ব্রাইটনেস ও ডলবি ভিশন সাপোর্ট করে। উন্নত পারফরম্যান্সের জন্য শাওমির এই ৫জি ফোনে এড্রেনো ৬৬০ জিপিইউ ও কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া আছে ১০৮ মেগাপিক্সেল ট্রিপল রেয়ার ক্যামেরা। ৮ মেগা পিক্সেল উল্ট্রা ওয়াড স্যুটার এবং টেলিফটো সুটার। আরও আছে ১৬ মেগা পিক্সেল সেলফি ক্যামেরা। পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য ফোনটি ১২০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট সহ ৫,০০০ এমএএইচ ক্যাপাসিটির ব্যাটারি অফার করবে। এই মডেলটি সাইড-ফেসিং ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার সহ এসেছে।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২১ এফই: জানুয়ারি মাসে আগত স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২১ এফই ৫জি ফোনে কর্নি গরিলা গ্লাস ভিক্টাস প্রোটেকশন সহ একটি ৬.৪ ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস ডায়নামিক অ্যামোলেড ২এক্স ডিসপ্লে দেওয়া হয়েছে। এই ডিসপ্লের ডিজাইন পাঞ্চ-হোল স্টাইল এবং এটি ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট ও ২৪০ হার্টজ টাচ স্যাম্পলিং রেট অফার করবে।
অন্যদিকে, ফাস্ট পারফরম্যান্স ও মাল্টিটাস্কিংয়ের জন্য স্যামসাংয়ের এই ফোনটি এক্সিনস ২১০০ প্রসেসর সহ এসেছে। এটি অ্যান্ড্রয়েড ১২ ভিত্তিক ওয়ান ইউআই ৪.০ কাস্টম ওএস দ্বারা চালিত।
আবার এই ৫জি ফোনে – ১২ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর, ১২ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স ও ৮ মেগাপিক্সেল টেলিফটো শুটার সহ ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ বর্তমান। এছাড়া, ফোনের পাঞ্চ হোল কাটআউটের মধ্যে থাকছে ৩২ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২১ এফই ৫জি স্মার্টফোন, ৪,৫০০ এমএএইচ ব্যাটারি সহ এসেছে, যা ২৫ ওয়াট সুপার-ফাস্ট ওয়্যারড ফাস্ট চার্জিং, ১৫ ওয়াট ওয়্যারলেস চার্জিং এবং রিভার্স চার্জিং টেকনোলজি সমর্থন করে। আইপি৬৮ সার্টিফায়েড এই ফোনে সিকিউরিটির জন্য ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার উপস্থিত।