ব্যক্তিগত ভ্রমণ কোটার বিপরীতে গ্রাহকদের ব্যাংক হিসাবের বিপরীতে আন্তর্জাতিক ডেবিট কার্ড ইস্যু করার সুযোগ দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কার্ডেও আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের মতোই সব ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে। ভ্রমণ কোটার বৈদেশিক মুদ্রা নেওয়ার বার্ষিক সীমা এই কার্ডের ব্যবহার করা যাবে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বর্তমানে ডেবিট ও ক্রেডিট দুই ধরনের কার্ড প্রচলিত আছে। ক্রেডিট কার্ডে ঋণ নিয়ে ব্যয় করতে হয়। আর ডেবিট কার্ডে ব্যাংক হিসাবে গ্রাহকের জমা টাকা খরচ করা যায়। আগে ডেবিট কার্ড আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যবহার করা যেত না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন সিন্ধান্তের ফলে এখন থেকে ডেবিট কার্ড স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবেও ব্যবহার করা যাবে। তবে এ জন্য ডেবিট কার্ডকে আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তর করে নিতে হবে।
করোনার নেতিবাচক প্রভাব থেকে অর্থনীতিকে সচল করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সিন্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে দেশে বিদেশে বাংলাদেশিদের অর্থের লেনদেনও বাড়বে। একই সঙ্গে বিদেশে যারা আটকে রয়েছেন এদের মধ্যে যাদের ডেবিট কার্ড আছে তারা তাদের নিজস্ব ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থ খরচ করতে পারবেন। তবে নির্ধারিত কোটার মধ্যেই অর্থ খরচ করতে হবে। এর বেশি খরচ করতে হলে প্রচলিত নীতিমালা অনুযায়ী বাড়তি অর্থ সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে সংগ্রহ করতে হবে।
বর্তমানে ভ্রমণ কোটায় বছরে ১২ হাজার ডলার খরচ করার কোটা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ডেবিট কার্ড ইসুর সুযোগ মেলায় ব্যাংকগুলো বেশি সুবিধা ভোগ করবে। কারণ ডেবিট কার্ডের বিপরীতে কোন ক্রেডিট লিমিট দিতে হবে না, যে ক্রেডিট কার্ডের বিপরীতে দিতে হয়।
জানা গেছে, প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে বিদেশী খাতের এইচএসবিসিসহ হাতেগোনা কয়েকটি ব্যাংক এ ধরনের কার্ড ইস্যুর সক্ষমতা রয়েছে। তবে এখন সুযোগ দেওয়ায় অন্যান্য ব্যাংক এ ধরনের কার্ড ইস্যুর প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জনে সচেষ্ট হবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ভ্রমণ ব্যবস্থার আওতায় কার্যত ইন্টারন্যাশনাল ডেবিট কার্ড বাজারে নেই। বর্তমানে কিছু কিছু ব্যাংক সীমিত আকারে এই কাজে সফলতা অর্জন করেছে। এর প্রেক্ষিতে এই কার্ড চালুর সুযোগ দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, ভ্রমণ কোটার আওতায় গ্রাহকের স্থানীয় মুদ্রায় খোলা ব্যাংক হিসাবের বিপরীতে আন্তর্জাতিক ডেবিট কার্ড ইস্যু করতে পারবে ব্যাংকগুলো। বার্ষিক ভ্রমণ কোটার ডলার পাসপোর্ট এন্ডোসম্যান্ট হতে হবে। পাসপোর্টে এন্ডোসের অতিরিক্ত ডলার ব্যবহার করতে পারবে না গ্রাহক। গ্রাহকের স্থানীয় মুদ্রায় যে হিসাবের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ডেবিট কার্ড সংযুক্ত থাকবে, সেই হিসাবে পর্যাপ্ত অর্থ থাকতে হবে, যাতে কার্ড দিয়ে খরচ করা অর্থ সমন্বয় করা সম্ভব হয়।