করোনাকালীন সময়ে ১ কোটির বেশি মানুষকে সেবা প্রদান করেছে “স্বাস্থ্য বাতায়ন-১৬২৬৩”। ১ লা মার্চ থেকে ২০ শে অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ১,০১,৭৫,০৮০ জন মানুষ স্বাস্থ্য বাতায়ন থেকে বিভিন্ন পরিষেবা গ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে ৮৬,৪৮,৮১৮ জনই করোনাভাইরাস বিষয়ে ফোন করেছেন। করোনা কালীন সময়ে দেশের প্রতি ১৬ জন মানুষের মধ্যে একজন নিয়েছেন এই টেলিহেল্থ সেবা। ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সেবা গ্রহণ করেছেন ১ কোটি ৫২ লক্ষ মানুষ। স্বাস্থ্য বাতায়ন বাংলাদেশের প্রথম এবং বৃহত্তম টেলিহেল্থ সেন্টার যা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের উদ্যোগে এবং দেশের প্রথম স্তরের আইসিটি এবং ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান “সিনেসিস আইটি’র” সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিনেসিস হেলথ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ নিজামউদ্দিন আহমেদ বলেন, “করোনাকালীন সময়ে ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন” কল সেন্টারের মাধ্যমে বহুমাত্রিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে এবং সেবাটি মানুষের কল্যাণে ব্যাপকভাবে ভূমিকা রেখেছে। প্রতিদিন ২০০ ডাক্তার এই সেবা প্রদান করে আসছে এবং প্রতিদিন প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে সেবা প্রদান করার সক্ষমতা রাখে স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩। স্বাস্থ্য বাতায়নের মাধ্যমে ডাক্তারের চিকিৎসা ও পরামর্শ সেবার পাশাপাশি জরুরী অ্যাম্বুলেন্স সেবা, স্বাস্থ্য তথ্য সেবা, সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা সেবা সম্পর্কে অভিযোগ গ্রহণ, দুর্ঘটনা জনিত চিকিৎসা সেবা ইত্যাদি প্রদান করা হয়। এছাড়াও, বিশেষজ্ঞ সেবার জন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ কল সেন্টারে ফোন ট্রান্সফার করার ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের দ্বারা মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, মা ও শিশু বিশেষজ্ঞদের মাধমে সেবা প্রদান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য সেবা দেওয়া হয় স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং সিনেসিস হেল্থ থেকে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও যেন সবার মত স্বাস্থ্য সেবা পায় সে লক্ষ্যে স্বাস্থ্য বাতায়ন প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির সক্ষমতা দিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে সেবা প্রদান এবং করোনা কালীন সময়ে ১ কোটির ও বেশি মানুষকে সেবা প্রদান করা হয়েছে যাদের মধ্যে প্রায় ৮২ ভাগ মানুষ করোনা সংক্রান্ত সেবা গ্রহণ করেছেন। আমরা দেখেছি দেশে অসংক্রামক ব্যাধির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে ৬৭ ভাগ মানুষ বিভিন্ন অসংক্রামক ব্যাধিতে প্রতি বছর মারা যাচ্ছে, এ অবস্থায় করোনা সংক্রান্ত সেবা প্রদানের পাশা পাশি ভবিষ্যতে অসংক্রামক ব্যাধি যেমন ক্যান্সার, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি নিয়ে সেবা প্রদান করার পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য বাতায়নের।”
স্বাস্থ্য বাতায়ন সেবাটি ২০১৫ সাল থেকেই মানুষকে টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে আসছে। ল্যান্ড-লাইন বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে “১৬২৬৩”নাম্বারটিতে কল করার মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা ব্যাপী চিকিৎসকের পরামর্শসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাচ্ছে। চিকিৎসকেরা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন মুঠোফোনের মাধ্যমে। এরপর চিকিৎসকগণ স্বাস্থ্য বাতায়নের সিআরএম থেকে অটোমেটিক এস-এম-এস এর মাধ্যমে ই-প্রেসক্রিপশন পাঠিয়ে দিচ্ছেন এবং সে অনুযায়ী রোগীরা পরামর্শ গ্রহণ করছেন এবং ঔষধ সেবন করছেন। বর্তমানে স্বাস্থ্য বাতায়নের সক্ষমতা এবং পরিষেবাগুলো উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।