গেরিলা মার্কেটের প্রবক্তা হলেন জে কনরাড লেভিন্সন। তিনি ১৯৮৪ সালে ‘গেরিলা এডভার্টাইজিং’ নামে একটি বই প্রকাশের মাধ্যমে এই পদ্ধতিকে জনসম্মুখে নিয়ে আসেন।
পণ্যের মার্কেটিংয়ের একটি অন্যতম শক্তিশালী কৌশল হলো গেরিলা মার্কেটিং। কম খরচে বেশি জনসাধারণের মাঝে প্রচার করার কৌশল পক্রিয়া গেরিলা মার্কেটিং।
ফেসবুক, টুইটার বা সামাজিক যোগাযোগ ব্যবহার করেও গেরিলা মার্কেটিং করা যায়। ইউটিউব বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যা সাধারণত সহজেই পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করা যায় যা সহজেই কম সময়ে অনেক মানুষের নিকট পণ্যকে তুলে ধরে।
এছাড়াও এই ধরনের বিজ্ঞাপন রাস্তায় বা ফাঁকা জায়গায় প্রচার করা হয়। যেমন ম্যাগি বা মামা নুডুলস। এদের কমন নামের ভিত্তিতে প্রচার ও প্রসারের পাশাপাশি চমকদার ছোট ছোট বিজ্ঞাপন সহজেই ছোট বড় সকলকেই আকৃষ্ট করে। নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য টার্গেটেড কাস্টমারকে আকৃষ্ট করায় হলো এই গেরিলা মার্কেটিং এর অভিনবত্ব।
এটি ছোট কোম্পানির জন্য জনপ্রিয় পদ্ধতি। মূলত একটা নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য সহজ ক্যাম্পেইন করার মাধ্যম হলো গেরিলা পদ্ধতি।
ট্রেডিশনাল মার্কেটিং ও গেরিলা মার্কেটিংয়ের বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে।
ট্রেডিশন মার্কেটিং হলো পণ্যের গতানুগতিক বিজ্ঞাপন দিয়ে কাস্টমারকে জানানো ও ক্রয়ের জন্য আহবান করা। এই পদ্ধতিতে বেশি সেল করাকে ফোকাস করে। কিন্তু গেরিলা মার্কেটিং পণ্যের গুণাগুণ অন্যের নিকট সহজে জানতে পারে। এর সারমর্ম খুব হৃদয়াঙ্গম বা মেমোরিয়াবল থাকে। মানুষের মনে অবচেতন ভাবে তা বারবার মনে করিয়ে দেয়। এই পদ্ধতিতে পণ্যের ক্ষেত্রে রিপিটিশন বা ভ্যারাইটিস ডিজাইন, ইউনিকত্ব প্রদান করে থাকে। বিজ্ঞাপন দীর্ঘমেয়াদী সময় ধরে মানুষের মনে জাগ্রত থাকে। এটিই এই গেরিলা মার্কেটিংয়ে পণ্যের প্রমোট করার নতুনত্ব সিস্টেম।
ট্রেডিশনাল মার্কেটিংয়ে বিভিন্ন পণ্য বিলবোর্ড, ফ্যাশন শো, টেলিভিশন নিউজপেপার বা অন্যান্য নির্দিষ্ট প্রচার মাধ্যমে এড দেওয়া হয় ফলে অনেকেই তা জানতে পারে না বা মনে রাখতে পারে না। কিন্তু গেরিলা মার্কেটিংয়ে মাল্টিপোল প্রমোট সার্ভিস সিস্টেম প্রয়োগ করা হয় যা সহজেই ইমোশনালী এটাচড করে। ফলে সেলস বৃদ্ধি পায়।
ট্রেডিশনালের তুলনায় খরচ কম। যেমন ম্যাকডোনালডস রাস্তার মোডে মোড়ে তাদের পণ্য বিজ্ঞাপন দেয়। তারা বিক্রির জন্য আহ্বান করে না কিন্তু বারবার মনে করিয়ে দেয়। ফলে মানুষ অবচেতনভাবেই পণ্য ক্রয়ের দিকে মনোযোগী হয়। আর এটাই গেরিলা মার্কেটিংয়ের নতুনত্ব বা বিশেষত্ব।
কোকাকোলা ২০১০ সালে ‘হ্যাপিনেস মেসিন’ নামে একটি ইউটিউব ভিডিও করে যা ৪.৫ মিলিয়ন বার ভিউ হয়। এতে মানুষ সহজেই পণ্যটির প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং বিক্রয়ও বৃদ্ধি পায়।
এছাডাও রোড শো বা শো ডাউন পণ্যকে সহজেই অন্যের নিকট পরিচিত করে তুলে। ‘ওয়াকা ওয়াকা’ গানটি শো-ডাওনের মাধ্যমে পারফর্ম করায় অনেকেই এ গানটি সম্পর্কে জানতে পেরেছে। বিশ্বকাপ খেলার পরেও এর সমান গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
বাংলাদেশে এর প্রচার এখন একটু কম হলেও আস্তে আস্তে তা বৃদ্ধি পাবে এবং পণ্যের বিজ্ঞাপনে নতুন মাত্রা যুক্ত করবে।
লেখক : নাজমুন নাহার নূপুর, কন্টেন্ট রাইটার, ডিজিটাল স্কিলস ফর বাংলাদেশ গ্রুপ