Techzoom.TV
  • সর্বশেষ
  • প্রযুক্তি সংবাদ
  • টেলিকম
  • অটো
  • ফিচার
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • কিভাবে করবেন
  • শিক্ষা ও ক্যাম্পাস
  • অর্থ ও বাণিজ্য


No Result
View All Result
Techzoom.TV
  • সর্বশেষ
  • প্রযুক্তি সংবাদ
  • টেলিকম
  • অটো
  • ফিচার
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • কিভাবে করবেন
  • শিক্ষা ও ক্যাম্পাস
  • অর্থ ও বাণিজ্য
No Result
View All Result
Techzoom.TV
No Result
View All Result
ADVERTISEMENT

ময়মনসিংহের পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক, টেকজুম ডটটিভি by নিজস্ব প্রতিবেদক, টেকজুম ডটটিভি
মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১
ময়মনসিংহের পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
Share on FacebookShare on Twitter

আরিফা খাতুন ময়মনসিংহ প্রতিনিধি, টেকজুম ডটটিভি//  ই-কমার্স বলতেই আমরা অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্যকে বুঝি। কিন্তু ই-কমার্সে একটা বড় ভুমিকা রাখতে পারে আমাদের পর্যটন শিল্প। প্রায় দুশ বছরের পুরোনো বৃহত্তর এ ময়মনসিংহ শহর জুড়ে  ছড়িয়ে আছে অসংখ্য পর্যটন স্থাপত্য এবং এলাকা। এর মধ্যে রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপনা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা জায়গাসমূহ।

আমাদের অঞ্চলভিত্তিক এই দর্শনীয় স্থানগুলোকে তুলে ধরতে এবং সেই সাথে পর্যটন শিল্পের প্রসারে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে ই-কমার্স। গতানুগতিক পর্যটন অঞ্চলগুলো ছাড়াও যে আমাদের দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে সৌন্দর্যের আধার, সেই জায়গাগুলোকে তথ্যপূর্ণ করে তুলে ধরতে হবে। তেমন একটি প্রয়াসেই আজ আমরা জানবো ময়মনসিংহ জেলার কিছু সম্ভাবনাময় দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে যা ই-কমার্সে ভূমিকা রাখতে সক্ষম-

 

রাজা জমিদারের পদচারণায় মুখরিত এই ভূমিতে রয়েছে রাজবাড়ির স্মৃতিময় সাম্রাজ্য, যা কিনা ইতিহাস ঐতিহ্যের  ধারক ও বাহক হিসেবে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে আজো মাথা উঁচিয়ে।

রামগোপালপুর জমিদারবাড়ি

ময়মনসিংহ অঞ্চল একটা সময় শুধু জমিদারদের অধীনস্থ ছিলো। যার ফলে এই বিভাগে দর্শনীয় স্থান হিসাবে বেশকিছু জমিদারবাড়ির নাম চলে আসে স্বাভাবিকভাবেই। ই-কমার্সে সম্ভাবনাময় দর্শনীয় স্থান হিসেবে ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলায় অবস্থিত রামগোপালপুর জমিদারবাড়ির কথা বলতে হয়। ময়মনসিংহ জেলার জিরো পয়েন্ট হতে   ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গৌরীপুর উপজেলা। গৌরীপুর মহিলা কলেজ ও গৌরীপুর কলেজ হিসাবে ব্যবহৃত দালান দুটোই অতীতের আলিসান জমিদারবাড়ী। জমিদার আনন্দ কিশোরের বাসস্থান (গৌরীপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ) এবং জমিদার সুরেন্দ্র প্রসাদ লাহড়ীর প্রাসাদটি (গৌরীপুর কলেজ) সহ বেশকিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এই উপজেলায় অবস্থিত বলে এই জায়গাগুলোকে পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করার জন্য গৌরীপুরবাসী দাবী করে আসছে বহুদিন ধরেই। ১৭০০ শতাব্দীর দিকে তৈরি করা এই জমিদারবাড়ি দুটোর মূল প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে কেন তথ্য পাওয়া যায়নি। জমিদারবাড়ি দুটোর স্থাপত্য শৈলী ও শৈল্পিক কারুকাজ আমাদের প্রাচ্য এবং প্রাশ্চাত্যের সময়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। যদিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে এর রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার হয়ে আসছে, তবে পর্যটকদের জন্য এই জমিদারবাড়ি দুটোকে তৈরি করতে ঢালাওভাবে সংস্কার এবং তত্ত্বাবধায়ন প্রয়োজন। জমিদারবাড়ি দুটো ঘুরে আসতে চাইলে ট্রেন বা সিএনজিতে করে চলে যাওয়া যাবে সহজেই।

মুক্তাগাছা রাজবাড়ি

প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে এমন এক মূল্যবান স্থাপনা মুক্তাগাছা রাজ বাড়ি।

ময়মনসিংহ শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে ময়মনসিংহ টাঙ্গাইল ও টাঙ্গাইল জামালপুর মহাসড়কের সংযোগ স্থল থেকে ১ কিলোমিটার উত্তর পূর্বদিকে মুক্তাগাছার রাজ বাড়ি অবস্থিত। জমিদার আচার্য চৌধুরী মুক্তাগাছা শহরে গোড়া পত্তন করেন। আর তারপর তিনি এখানেই বসতি স্থাপন করেন।

বর্তমানে মুক্তাগাছা শহর সহ মুক্তাগাছা উপজেলার বেশিরভাগই ছিল তৎকালীন আলাপসিং পরগণার আওতাভুক্ত। ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে শ্রীকান্ত আচার্য চৌধুরি ৪ ছেলে সহ বগুড়া থেকে আলাপাসিংএ এসে বসবাসের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। মুর্শিদ কুলি খাঁ এর কাছ থেকে শ্রীকৃষ্ণ আচার্য বিনোদ বাড়ির জমিদারি পান। মুক্তাগাছার পূর্ব নাম ছিল বিনোদবাড়ি।

মুক্তাগাছার জমিদারির মোট অংশ ১৬ টি। প্রায় ১০০ একর জায়গার উপর নির্মিত মুক্তাগাছার রাজ বাড়ি। প্রাচীন স্থাপনাশৈলীর অনন্য নির্দেশনা এই মুক্তাগাছার রাজ বাড়ি। যার প্রবেশ মূখে রয়েছে জমিদারের মায়ের ঘর, মন্দির, দরবার হল, কাছারিঘর, অতিথি ঘর, সিন্দুক ঘর এবং অন্যান্য ভবণ। প্রায় ১০,০০০ বইয়ের একটি  দুর্লভ লাইব্রেরী ছিল। যার কিছু অংশ বর্তমানে মুক্তাগাছার বাংলা একাডেমিতে রক্ষিত আছে।

 

বর্তমানে এই মুক্তাগাছার রাজবাড়ি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বোবধানে রয়েছে। শহরের বাহিরে মুক্তাগাছা  রাজবাড়ি হতে পারে ভ্রমণবিলাসের অন্যতম আকর্ষন।

শশী লজ

শশী লজ ময়মনসিংহ  শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। মহারাজা শশী কান্ত আচার্যের বাড়ি। যা ময়মনসিংহ  রাজবাড়ি নামেও সমধিক খ্যাত। মুক্তাগাছার  জমিদার সূর্যকান্তের পালিত পুত্র শশীকান্ত সেনের নামে বাড়িটির নাম রাখা হয়েছিল শশী লজ। ২০১৫ সালে ৪ এপ্রিল জাদুঘর স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর শশী লজটি অধিগ্রহণ করে।

এই শশী লজটি নির্মিত করা হয় ১৯০৫ সালে। এই পুরো বাড়িটি ৯ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত । মূল বাড়িটি নির্মাণ করেন মহারাজা সূর্যকান্ত। পরবর্তীতে তাঁর দত্তক পুত্র শশীকান্ত প্রাসাদটি পুননির্মান করেন, কারণ সূর্যকান্তের নির্মিত প্রাসাদটি ভূমিকম্পে আংশিক বা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছিল।

ময়মনসিংহ শশীলজ

শশী লজের মূল ফটকে রয়েছে ১৬ টি গম্বুজ। শশী লজের মূল ভবনের সামনে রয়েছে একটি বাগান যার মাঝখানে অবস্থান করছে একটি শ্বেত পাথরের ফোয়ারা। যা গ্রিক দেবি ভেনাসের অল্প কাপড় পরিহিতা ছবি। রয়েছে পদ্মবাগান, রয়েছে রঙ্গমহল।যার এক কিনারায় বিশ্রামঘর। যার কিছু দূরে রয়েছে আরেকটা ফোয়ারা আর শ্বেত পাথরের মূর্তি। ভেতরের প্রায় প্রতিটি ঘরেই রয়েছে ছাদ থেকে ঝুলন্ত প্রায় একই রকম দেখতে বেশ কয়েকটি ঝাড়বাতি।  রয়েছে অতি সুন্দর জলাশয়,সেখানে রয়েছে মনোহর স্নানঘাট যা দেখতে অনেক সুন্দর। এই শশী লজে রাখাল এবং হুমায়ুন  আহমেদের অয়োময় নাটকের শুটিং  করা হয়। যা বিটিভিতে প্রচার করা হয়েছিল।নাটক টি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এই রাজবাড়ির দরুন।

তারপর ১৯৫২ সাল থেকে শশী লজ ব্যবহৃত হচ্ছে মহিলা শিক্ষক প্রশিক্ষণ  কেন্দ্র হিসাবে। এই রাজবাড়িটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে খ্যাত। শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত এই স্থানটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে অনেক টুকু জায়গা দখল করে রেখেছে।

 

আলেকজান্ডার ক্যাসেল

ময়মনসিংহ শহরের এক উল্লেখযোগ্য এবং পুরোনো স্থাপনা আলেকজান্ডার ক্যাসেল বা আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল। এই স্থাপনাটি শহরের প্রান কেন্দ্রে অবস্থিত। মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য ১৮৭৯ সালে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা ব্যয় করে ততকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলেকজান্ডারের সম্পত্তি রক্ষার্থে এ প্রাসাদটি নির্মাণ করেছিলেন। প্রাসাদটিতে লোহার ব্যবহার বেশি করা হয়েছিল বলে এলাকাবাসী এটিকে ‘লোহার কুঠি’ নাম দিয়েছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভবনটিতে অনেক বরেণ্য ব্যক্তির পদধূলি পড়েছে। ১৯২৬ সালে  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ময়মনসিংহ সফরের সময়ে আলেকজান্ডার ক্যাসেলে কিছুদিন ছিলেন।

এছাড়া এখানে আরো এসেছিলেন লর্ড কার্জন, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ, কামাল পাশা প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ। আলেকজান্ডার ক্যাসেলটি বর্তমানে শিক্ষক প্রশিক্ষন কেন্দ্রের পাঠাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

যান্ত্রিকতা আর কৃত্রিমতার বেড়াজাল থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আপনাকে আসতে হবে ময়মনসিংহের “প্রকৃতিকন্যা” খ্যাত সবুজের অভয়ারণ্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ময়মনসিংহ শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম প্রান্তে প্রায় ১২০০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে এই নয়নাভিরাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

এই বিশাল ক্যাম্পাসের পুরো সৌন্দর্য অবলোকন করতে হলে একদিন সময়ে হবে না। এ ক্যাম্পাসে রয়েছে বোটানিক্যাল গার্ডেন, পৃথিবীখ্যাত জার্মপ্লাজম সেন্টার, মুক্তিযুদ্ধের সৃতিস্তম্ভ বিজয়-৭১, গনহত্যার স্মৃতিস্তম্ভ বদ্ধভূমি, শহীদ মিনার, নদের পাড়, বৈশাখী চত্বর, এক গম্ভুজ বিশিষ্ট দেশের বৃহৎ কেন্দ্রীয় মসজিদ, দেশের একমাত্র কৃষি মিউজিয়াম, ফিশ মিউজিয়াম, দেশের দুটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কেন্দ্র বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) ও বাংলাদেশ পরমাণু  কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা), আম বাগান, লিচু বাগান, নারিকেল বাগান, কলা বাগান, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ভবন, কেন্দ্রীয় গবেষনাগার, দুই হাজার আসন বিশিষ্ট আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন ভবন, প্রকৌশল ভবন, অতিথি ভবন, ক্লাব ভবন, ৬৫৭টি আবাসিক ইউনিট, ১২টি ফার্ম, ফিল্ড ল্যাব, ক্লিনিক, ওর্য়াকশপ, শিক্ষার্থীদের জন্য মনোরম ১৩টি হল, স্টেডিয়াম, জিমনেসিয়াম, ঈশাঁ খা হল লেক, বঙ্গবন্ধু চত্বর, প্রেম বারান্দা, মারন সাগর, ডরমেটরি, কমিউনিটি সেন্টার, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (কেবি কলেজ), কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হাই স্কুল (কেবি হাই স্কুল), নৈশ বিদ্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ উল্লেখযোগ্য আরও অনেক কিছু।

পুরো ক্যাম্পাস চত্বরেই বিভিন্ন জাতের ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। রেল লাইনে আনমনে আপনজনের হাত ধরে কিছুক্ষণ হাঁটতে পারেন অথবা লিচু বাগান, হর্টিকালচার সেন্টার, আম বাগান, কলা বাগানের রাস্তা ধরে হেঁটে বেড়াতে পারেন নির্বিঘ্নে। বঙ্গবন্ধু চত্বর ফ্যাকাল্টির কড়িডোর বা নদের পাড়ে বসে বসে ও ঘণ্টার পর ঘণ্টা সুন্দর সময় কাটিয়ে দিতে পারবেন অনায়াসে।  ঘুরতে ঘুরতে যখন বেলা পরে যাবে সেই গোধূলিলগ্নে আপনি চাইলে ঈঁশা খা লেকের পাড়ে বসে উপভোগ করতে পারেন প্রকৃতির নিবিড়তা। লেকের পাড়েই একটি খোলা চত্বর রয়েছে। চত্বরটি নাম লালন চত্বর। এর কাছেই রয়েছে জিটিআই সংলগ্ন লো অ্যান্ড ডাউন ব্রীজ, যা সংক্ষেপে লন্ডন ব্রীজ নামেই বেশি পরিচিত। সব মিলিয়ে এই চিরসবুজ ক্যাম্পাস আপনার মনে চিরকালের জন্য আবাস গড়ে নিবে প্রথম দর্শনেই।

ময়নার দ্বীপ

বর্তমানে ময়মনসিংহ জেলার জনপ্রিয় একটি বিনোদনের জায়গা হলো ‘ময়মনসিংহের আরশিনগর’ নামে খ্যাত, ময়নার দ্বীপ। ময়মনসিংহের জিরো পয়েন্ট থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ মোড়ের দক্ষিণে গৌরীপুরের ভাংনামারি ইউনিয়নের অনন্তগঞ্জ বাজার সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত ব্রহ্মপুত্রের দুটি ধারা কিছুদূর চলে গিয়ে আবার মিলিত হয়েছে। এর মাঝখানে তৈরি হয়েছে বিশাল বদ্বীপ, যার নাম ময়নার দ্বীপ।

ময়নার দ্বীপ নামকরণের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, এই এলাকায় বাস করতেন ময়না মিয়া নামের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত ব্যাক্তি, যিনি তার বাঁশির সুরে বিমোহিত করে দিত সবাইকে, মাছ ধরতেন, গরু চরাতেন। তার কাছে আসা লোকজনকে বৃটিশদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার জন্য অনুপ্রেরণা দিতেন, লোক মুখে তাই সেই দ্বীপের নাম হয়ে যায় ময়নার দ্বীপ। অপরদিকে বলা হয়, এই অঞ্চলে ময়না পাখির অভয়ারণ্য ছিলো বলেই চরটির নাম ধীরে ধীরে ময়নার দ্বীপ হয়ে গেছে। আরেকটি তথ্যসূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একজন সাহিত্যিক তার কিছু দলবল নিয়ে লেখালেখির জন্য এই কোলাহল বিহীন দ্বীপে আসেন। দ্বীপটির সৌন্দর্য্য আর পরিবেশ লেখকে মুগ্ধ করে, এবং তিনি মনপুরা সিনেমায় ব্যবহৃত ময়না দ্বীপের নামানুসারে এই বদ্বীপটির নামকরণ করেন। তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে দ্বীপটিকে বিনোদন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য আবেদন করেন। প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠিক রেখে হালকা অবকাঠামো নির্মাণ করে দ্বীপটিকে বিনোদন কেন্দ্র হিসাবে পাকাপোক্তভাবে গড়ে তোলা গেলে ময়মনসিংহের পর্যটন  ক্ষেত্রে বিশাল একটা ভূমিকা রাখতে পারে ময়নার দ্বীপ।

বর্তমানে অনেকে শহরের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে বা একটু খোলা বাতাসে পরিবার বা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একান্তে সময় কাটাতে অথবা বনভোজন করতে ছুটে চলে যায় ময়নার দ্বীপে। ময়না দ্বীপে যাওয়ার জন্য রিক্সা বা অটো করে বাকৃবি এর শেষ মোড় এসে কাওকে জিজ্ঞেস করলেই ময়না দ্বীপের অবস্থান দেখিয়ে দেবে। যারা রোমাঞ্চপ্রেমী, তারা শহরের থানার ঘাট বা পার্কে নদীর ঘাট থেকে নৌকা নিয়েও যেতে পারেন ময়না দ্বীপে।

 

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালাঃ

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা ময়মনসিংহ  শহরের পুরাতন ব্রক্ষ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত।

১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে  পুরাতন ব্রক্ষ্মপুত্র  নদের তীর ঘেঁষে একটি ২ তলা দালান বিশিষ্ট এই সংগ্রহশালাটি গড়ে ওঠে। তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এই সংগ্রহশালার উদ্ভোধন করেন। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে সংগ্রহশালাটি নতুন করে সাজানো হয়।

ময়মনসিংহের গুণী ব্যক্তিদের মধ্যে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন অন্যতম। তিনি তাঁর চিত্রকর্ম ও কর্মগুণে এই জেলার নাম বিশ্বমণ্ডলে পরিচিত করেছেন। তাঁর একেকটি চিত্রকর্ম যেন একেকটি জীবন্ত ইতিহাস, বাস্তবের প্রতিফলন। রংতুলির আঁচড়ে দেশের সংস্কৃতি, প্রকৃতি, জীবন-জীবিকা, মানুষ, দুর্ভিক্ষসহ নানা বিষয় তুলে ধরেছেন তিনি। শিল্পাচার্যের এসব চিত্রকর্ম সংরক্ষিত রয়েছে ময়মনসিংহ শহরের ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে কাঁচিঝুলি সাহেব কোয়ার্টার এলাকার এই সংগ্রহশালায়।

৩ দশমিক ৬৯ একর জায়গাজুড়ে প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত স্থানে এই সংগ্রহশালাটির অবস্থান। পুরোনো একটি দ্বিতল ভবন রয়েছে এখানে। এর দ্বিতীয় তলায় দুটি গ্যালারিতে জয়নুলের হাতে আঁকা চিত্রকর্ম, ব্যবহৃত জিনিসপত্র, আলোকচিত্র ও তাঁর সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে। নিচতলায় দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং এর পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষ, বিক্রয়কেন্দ্র, সেমিনার কক্ষ ও একটি আর্ট গ্যালারি রয়েছে।

সংগ্রহশালায় শিল্পাচার্যের অসাধারণ সব চিত্রকর্ম দেখতে দেখতে আপনি হারিয়ে যাবেন সেই সব শিল্পের ভেতর।

সিলভার ক্যাসেল

ব্রহ্মপুত্র নদের একদম কোল ঘেঁষে, ময়মনসিংহ জেলার জিরো পয়েন্ট থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে, ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে খাগডহর এলাকায় অবস্থিত ‘সিলভার ক্যাসেল’ একটি নৈসর্গিক সৌন্দর্যমন্ডিত বিনোদন কেন্দ্র। ময়মনসিংহ শহরের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরতে আসা পর্যটকদের থাকার সুযোগ-সুবিধা করে দেয়ার উদ্দেশ্যে মরহুম আনোয়ারুল ইসলাম আনু বেগ ২০০৮ সালে পৈতৃক ভিটায় চারতলা বাড়ি স্থাপনের মাধ্যমে ‘রিভার প্যালেস’ নামের হোটেল গড়ে তুলেন। পরবর্তীতে হোটেলটিকে নতুনভাবে সাজিয়ে, আধুনিকতার স্পর্শে ও সুযোগ-সুবিধার উন্নয়ন ঘটিয়ে নতুন নামকরণ করা হয় ‘সিলভার ক্যাসেল হোটেল এন্ড স্পা’, যা বর্তমানে পিকনিক স্পট, বিলাসবহুল হোটেল, পার্টি সেন্টার, রেস্টুরেন্ট এবং শিশুদের বিনোদনের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সিলভার ক্যাসেল

ব্রক্ষ্মপুত্রের পানির ঘ্রাণ মিশ্রিত হাওয়া, চারদিকে সবুজের সৌন্দর্য , লাল-নীল আলোকসজ্জা এবং সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগের নেশায় মানুষ ছুটে যায় এই দৃষ্টিনন্দন হোটেলটিতে। হোটেলটির প্রবেশ পথেই পরে ছোট্ট একটি চিড়িয়াখানা, যেখানে খরগোশ, বানর আর বিভিন্ন ধরনের পাখির বসবাস। ময়মনসিংহের ব্যয়বহুল রিসোর্টের মাঝে এই হোটেল অন্যতম। বিভিন্ন অনুষ্ঠান ছাড়াও পর্যটক, দর্শনার্থী এবং ঘুরতে আসা মানুষ ও বাচ্চাদের জন্য রিসোর্টটি থাকে জনসমাগমে ভরপুর। রিসোর্টটিতে যাওয়ার ব্যবস্থা খুবই সহজ, শহরের যেকোনো স্থান থেকে রিক্সা বা অটোরিকশায় করে ২০/৩০ মিনিটের মধ্যে যাওয়া যায়।

গারো পাহাড়

ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের সীমান্তে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা ‘সীমান্ত কন্যা’ নামে খ্যাত গারো পাহাড় ময়মনসিংহ অঞ্চলের একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান এবং পর্যটন অঞ্চল। এই শান্ত পাহাড়টির অনেকটা অংশ শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায় অবস্থিত হলেও ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট ও ধোবাউরা উপজেলায় এর উপস্থিতি দেখা যায়। হালুয়াঘাটের গাবরাখালী ও ধোবাউরার ঘোষগাঁও এলাকায় ১২ টি পাহাড় ও ৯৯ টি ছোট বড় টিলা যেন দাঁড়িয়ে আছে ধ্যানমগ্ন হয়ে। গারো আদিবাসীদের ছোট ছোট বাড়িঘর আর পাহাড়ের উপর থেকে চোখে পরা মেঘালয় রাজ্যের সৌন্দর্য পাহাড় প্রেমীদের মন কেড়ে নিতে যেন সদা প্রস্তুত।

সম্প্রতি ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের অধীনে হালুয়াঘাটের গাবরাখালীর গাজিরভিটা ইউনিয়নে গড়ে উঠছে ‘গাবরাখালী গারো পাহাড় পর্যটন কেন্দ্র’, যা হালুয়াঘাট উপজেলা থেকে ১৪ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে অবস্থিত। রেস্ট হাউজ, লেক, পিকনিক স্পট, শিশু পার্ক, ন্যাচারাল পার্ক, গারো জাদুঘর, মাছের চাষ ও প্রদর্শনী খামার, কাঠের ব্রীজ, ফুড পার্ক ইত্যাদির সমন্বয়ে গড়ে উঠা পর্যটন কেন্দ্রটিতে ইতিমধ্যেই দর্শনার্থী ও পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সবচেয়ে আকর্ষনীয় জায়গা হচ্ছে পাহাড়ের উপর গড়ে তোলা ষড়ভুজাকৃতির বিশাল ছাউনি, যাকে গারো ভাষায় বলে জারামবং। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায় এই ছাউনিতে বসে, সেই সাথে উপভোগ করা যায় মেঘালয়ের মেঘের খেলা৷ করোনাকালীন সময়ে এই পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে অনেকাংশেই। এই পর্যটন কেন্দ্রে যেতে হলে সিএনজি বা বাস অথবা মাইক্রোবাসযোগে প্রথমে সদর থেকে হালুয়াঘাট ও পরে মাইক্রোবাস বা মটরসাইকেলযোগে গাবরাখালী যেতে হবে।

নজরুল স্মৃতি কেন্দ্র

চল চল চল, ঊর্ধ গগনে বাজে মাদল। এ রণ সংগীত টির কথা  মনে পড়লেই  চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর কথা। সেই কবির স্মৃতি বিজরিত শৈশব, কৈশোর কেটেছে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল এর কাজির শিমলায়। তার স্মৃতি কে ধরে রাখতে এখানে স্থাপন করা হয়েছে নজরুল  স্মৃতি কেন্দ্র। ২০০৩ সাল থেকে নজরুল স্মৃতি কেন্দ্র টি পর্যটক শিল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রতিদিন দেশ বিদেশ থেকে অসংখ্য  পর্যটক এসে ভীড় করে এ পর্যটন  স্থানে।

আব্দুল জব্বার জাদুঘর, গফরগাঁও

ময়মনসিংহের পর্যটন  আকর্ষণের মধ্যে  অন্যতম পর্যটন নিদর্শন হিসাবে  স্থান করে নিয়েছে আব্দুল জব্বার জাদুঘর। ২০০৭ সালে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও  উপজেলার কাচুয়া গ্রামে শহীদ জব্বারের বাড়ির পাশেই নিমাণ করা হয় শহীদ  জব্বার জাদুঘর টি।১৯৫২ সালের ভাষা শহীদের স্মরণে আবদুল জব্বার এর  যাদুঘরটি দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ  আসে ও শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে দেশের বীর সন্তান শহীদ  আবদুল জব্বার কে।

কুমির প্রজনন কেন্দ্র, ভালুকাঃ–

ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে ভালুকার কুমির এর  খামার বেশ আকর্ষণীয়।ছোট বেলার বইয়ের আকা গল্পের কুমির টা যখন বাস্তবে দেখা যায় তখন অনেক রোমাঞ্চকর অনুভূতি কাজ করে নিজের মাঝে।

২০০৪ সালে ভাবে কুমির চাষের জন্যে অনুমোদন নিয়ে যাত্রা শুরু  করে রেপটাইলস ফার্মস।প্রায় ১৪ একর জমির ওপর অসংখ্য পুকুর খনন করে প্রথমে ৭৫ টি কুমির  দিয়ে কুমির এর খামার শুরু করা হয়। বর্তমানে এখানে কুমির এর সংখ্যা প্রায় তিন হাজার।বর্ষাকাল কুমিরের প্রজনন মৌসুম থাকে তাই এই সময় দর্শনাথীদের খুব নিরিবিলিতে থাকতে হয়। প্রজনন মৌসুম বাদে পর্যটকদের প্রচুর ভীড় হয় কুমির প্রজনন খামারে।প্রকৃতির হিংস্র এ প্রানীকে কাছ থেকে দেখার লোভ সামলানো বেশ কঠিন।

এই সব পর্যটন স্থান গুলোর আরও প্রচারণা ও প্রসার ঘটাতে পারলে ময়মনসিংহের ই কমার্স এর ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হবে। এসব খাতে নতুন নতুন উদ্যোগক্তা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি পর্যটন স্থানে কর্মসংস্থানও বৃষ্টি পাবে। ফলে বেকারত্ব লাঘব হবে অনেকাংশে।। ময়মনসিংহের ই কমার্স এ এসব পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা প্রচুর। তাই  আমরা যত এসব পর্যটন স্থানগুলো তুলে ধরব ততই এদের পরিচিত বৃদ্ধি পাবে।

তেপান্তর পিকনিক স্পট, ভালুকাঃ

দেশের অন্যতম ও বৃহত্তর পিকনিক স্পটগুলোর মধ্যে তেপান্তর পিকনিক স্পট অন্যতম, যা ময়মনসিংহের ভালুকায়। প্রকৃতি যেনো নিজ হাতে গড়ে তুলেছে এই স্থানটিকে।এই স্থানটি মূলত শুটিং এর জন্যই বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এছাড়া পিকনিক পার্টির জন্যও এই স্থানটি ভাড়া দেওয়া যায়। তাই এখানে ঘুরতে এসে প্রকৃতির নিবিড় ছোঁয়ার সাথে দেখা মিলে যেতে পারে কোনো তারকার সাথে।

অর্কিড বাগান

বাংলাদেশের একমাত্র অর্কিড বাগানটি অবস্হিত ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায়। ময়মনসিংহ জেলা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ফুলবাড়িয়া উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের দুলমা গ্রামে সর্ম্পূণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ২০ একর জমি নিয়ে গড়ে উঠেছে এই বাগানটি।এটি দীপ্ত অর্কিড ফুলের বাগান নামেও পরিচিত। বর্তমানে এখানে বিশাল এলাকাজুড়ে বাণিজ্যিকভাবে অর্কিডের উৎপাদন হচ্ছে।

২০০৩ সালে ইত্তেমাদ উদ দৌলা নামে এক ব্যক্তি প্রথমে তিন একর জমিতে থাইল্যান্ড থেকে আসা একজন বিশেষজ্ঞের সহায়তায় দেশে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে অর্কিডের উৎপাদন শুরু করেন। লাল মাটির পাহাড়ি নির্জন নিভৃত এলাকায় গড়ে উঠেছে সবুজ গাছগাছালি দ্বারা বিস্তীর্ণ এই বাগানটি। যেতে যেতে চোখে পড়বে সাদা, লাল, নীল, হলুদ ও বেগুনি অর্কিডের গাছ ও ফুলের সমাহার। বাগানের অর্কিডের অংশটি দেখতে অনেকটা টিউলিপ বাগানের মতো মনে হয়। বর্তমানে অর্কিড বাগানে দুই শতাধিক প্রজাতির অর্কিড চাষ হয়। এই বাগান থেকেই ফুল সবরবরাহ করা হয় ঢাকার শাহবাগ সহ চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার, ও দেশের বিভিন্ন পাঁচতারকা হোটেলসহ দেশের  বিভিন্ন স্থানে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা দেখা যায় ভ্যালেন্টাইন ডে বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে।

২০১৪ সালে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা এই বাগানটি পরিদর্শন করেন এবং বেশ কয়েক বছর এ বাগানের অর্কিড সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে রপ্তানি হয়েছিল।

কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখতে পারেন যে কেউ। তাই প্রতিদিনই এই বাগান পরিদর্শন করতে আসেন অসংখ্য দর্শনার্থী। সবচেয়ে বড় সুবিধা এই বাগানে থাকারো ব্যবস্হা রয়েছে।নন এসি, এসি, এসি ডিলাক্স সব ধরনের সুবিধাই রয়েছে।  পিকনিক প্যাকেজ সহ সকল রাইডস্ ও দুপুরের খাবার কর্পোরেট বা ফ্যামিলি প্যাকেজ,কলেজ ও স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্হা রয়েছে।

ময়মনসিংহ হতে বাস অথবা সিএনজি যোগে ফুলবাড়ীয়া উপজেলা সদরে আসতে হবে; দূরত্ব ২০ কিঃ মিঃ। ফুলবাড়ীয়া হতে সিএনজি যোগে এনায়েতপুরস্থ অর্কিড বাগানে যেতে হবে; দূরত্ব প্রায় ১২ কিঃ মিঃ।

 

সন্তোষপুর রাবার বাগান:

সবুজের সমারোহে ঘেরা সন্তোষপুর রাবার বাগানের ভিতর দিয়ে ঘুরে ভ্রমণ প্রেমিকেরা বরাবরই সন্তুষ্ট হয়ে ফিরে। আঁকাবাঁকা গ্রামীণ মেঠোপথ পেরোলে চোখে পড়বে নয়নাভিরাম পাহাড়ি বনাঞ্চল সন্তোষপুর। গ্রামটি ঘিরে রয়েছে বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের নিপুণ হাতে তৈরি রাবার বাগান। সবুজ বনায়ন ও প্রকৃতির সৌন্দর্য শাল-গজারি গাছ, বন্যপ্রাণী, পাখিদের কিচির-মিচির শব্দ যেকোনো মানুষকে দিবে নির্মল আনন্দ।

বাংলাদেশের মোট ১৭ টি রাবার বাগানের মধ্যে একটি হলো ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় অবস্থিত এই সন্তোষপুর রাবার বাগান। ফুলবাড়ীয়া উপজেলার কেশরগঞ্জ বাজার থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে  প্রায় ১০৬ একর জমি নিয়ে এর বিস্তার। রাবার গাছ থেকে শ্রমিকদের কষ আহরণের দৃশ্য এবং রাবার কষ থেকে রাবার উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। রাবার বাগান থেকে সংগৃহীত রাবার প্রক্রিয়াজাত করে দেশ-বিদেশে রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রচুর রাজস্ব মূদ্রা আয় করে।

বাগানের ভেতরেই আছে প্রায় ৫ শতাধিক বিরল প্রজাতির বানর, যা দেখতে প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থী ভিড় করে। এই বানরগুলোই সন্তোষপুর রাবার বাহানের বিশেষ আকর্ষণ। বানরগুলো দর্শনার্থীদের মাথায় ও কাঁধে উঠে খাবার নেয়। ছোট শিশুরা বন্যপ্রাণীর সঙ্গে দুষ্টুমি করলেও কামড় বা আঁচড় দেয় না। তাদের আচরণ দর্শনার্থীদের জন্যে খুবই  উপভোগ্য। সেইজন্য বানরগুলোকে দর্শনার্থীরা নাম দিয়েছেন ‘সামাজিক বানর’। বন বিভাগ থেকে এদের তদারকির ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এদের খাবারের জন্যে আলাদা বরাদ্দও রয়েছে,  তবে সেটি বেশ অপ্রতুল। তাই দর্শনার্থীরা বানরদের বাদাম, কলা খাওয়ায় এবং এটা করতে পেরে দর্শনার্থীরাও বেশ মজা পায়।

 

দেশের অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সৌখিনতা ও ভ্রমণবিলাসের প্রবণতা বাড়ছে। দেশের মধ্যবিত্ত এমনকি নিম্নবিত্তরাও সময়-সুযোগ পেলেই পরিবার পরিজন নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে। ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে পর্যটনের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির ক্ষেত্রে ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক মাধ্যমগুলো বিরাট ভূমিকা রাখছে। বিশেষত ফেসবুকের কল্যাণে ভ্রমণপিপাসু মানুষের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানোর ছবি ও ভিডিও ক্লিপগুলো সর্বসাধারণকে ভ্রমণে উৎসাহী করে তুলছে। এছাড়া পর্যটন নিয়ে কন্টেন্ট আর্টকেল লেখার মাধ্যমে জানানোর সুযোগ হচ্ছে। এসবের মাধ্যমে নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্রের আবিষ্কার এবং ভ্রমণে এসব স্থান ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

এভাবেই সারাবিশ্বের মানুষের কাছে আমাদের পর্যটনের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরতে আমাদের সাহায্য নিতে হবে তথ্যপ্রযুক্তির। ওয়েবসাইট গুলোকে পর্যটকবান্ধব করে গড়ে তুলতে হবে বাংলা ইংরেজী উভয় ভাষায় পর্যাপ্ত তথ্য যুক্ত করার মাধ্যমে, যেন দেশী বিদেশী উভয় শ্রেণির পর্যটকরা সহজে তথ্য পেতে পারে।

আমাদের অঞ্চলের এই পর্যটন সেক্টরের প্রসার সবচেয়ে দ্রুত করতে হলে একে ঘিরে ই-কমার্স সেক্টরে শিক্ষিত এবং দক্ষ উদ্যোক্তা তৈরী হওয়া দরকার। তরুণ তরুণীরা চাইলেই গ্রুপ করে ই-কমার্স কেন্দ্রিক ট্র্যাভেল এজেন্সী সার্ভিস চালু করতে পারে, যারা ওয়েবসাইট, ফেসবুক, ইউটিউবের মাধ্যমে পর্যটন এলাকাগুলোর প্রচার করতে পারে, পর্যটক আকৃষ্ট করতে পারে এর সৌন্দর্য লেখা, ছবি আর ভিডিওর মাধ্যমে তুলে ধরে এবং ভ্রমণ গাইড হিসেবে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারে। পর্যটন এলাকাগুলো কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে পারে অনেক কর্মসংস্থান, পাশাপাশি বদলে যেতে পারে পুরো অঞ্চলের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ। এখনই সময় পর্যটন শিল্পের সমৃদ্ধির জন্য কাজ করার।

লেখক,
আরিফা খাতুন, খাতুনে জান্নাত আশা, শামীমা নাসরিন রিতু, দিলরুবা আফরোজা, ফারজানা আক্তার রুমা, রুকসানা সুলতানা

Tags: দেশি পণ্যে ই-কমার্সদেশিপণ্যের ই-কমার্সনারী উদ্যোক্তা
ADVERTISEMENT

এই বিভাগ থেকে আরও পড়ুন

বাংলাদেশিরা মাত্র ১ দিনেই পাবেন ভারতের ভিসা!
বিবিধ

ট্যুরিস্ট ভিসায় ভারত ভ্রমণ করতে পারবেন না বাংলাদেশিরা

ই-ট্যুরিজমে ময়মনসিংহে নির্মিত দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ
বিবিধ

ই-ট্যুরিজমে ময়মনসিংহে নির্মিত দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো ২১তম এয়ারক্রাফট
বিবিধ

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো ২১তম এয়ারক্রাফট

দেশীয় পন্যের চাহিদা করোনাকালীন সময়ে বেড়েছে বহুগুণ
বিবিধ

দেশীয় পন্যের চাহিদা করোনাকালীন সময়ে বেড়েছে বহুগুণ

মোস্তাফা জব্বার এর সহযোগিতায় অপহৃত বিটিসিএল কর্মী উদ্ধার
বিবিধ

মোস্তাফা জব্বার এর সহযোগিতায় অপহৃত বিটিসিএল কর্মী উদ্ধার

বইমেলায় রাহিতুল ইসলামের বই ‘হ্যাকার হিমেল’
বিবিধ

বইমেলায় রাহিতুল ইসলামের বই ‘হ্যাকার হিমেল’

Load More
ADVERTISEMENT

ট্রেন্ডিং টপিক

ইউরো ফাইটার টাইফুন উড়ালেন বাংলাদেশী পাইলটরা
প্রযুক্তি সংবাদ

ইউরো ফাইটার টাইফুন উড়ালেন বাংলাদেশী পাইলটরা

আইএসপিএবি নির্বাচন শনিবার: আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনে প্রশাসক চায় না সদস্যরা
টেলিকম

আইএসপিএবি নির্বাচন শনিবার: আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনে প্রশাসক চায় না সদস্যরা

২০২৭-এ আসছে বাঁকানো ডিসপ্লে ও কাচের আইফোন
নির্বাচিত

২০২৭-এ আসছে বাঁকানো ডিসপ্লে ও কাচের আইফোন

ইন্টারনেটবিহীন পৃথিবীতে বাস করতে চায় যুক্তরাজ্যের অর্ধেক তরুণ–তরুণী
প্রযুক্তি সংবাদ

ইন্টারনেটবিহীন পৃথিবীতে বাস করতে চায় যুক্তরাজ্যের অর্ধেক তরুণ–তরুণী

সপ্তাহের সবচেয়ে পঠিত

ভিভো স্মার্টফোন দাম বাংলাদেশ

২০২৫ সালে Vivo’র সেরা ৫টি স্মার্টফোন

বাংলাদেশে স্মার্টফোনপ্রেমীদের মন জয় করল স্যামসাং গ্যালাক্সি A06

বাংলাদেশে স্মার্টফোনপ্রেমীদের মন জয় করল স্যামসাং গ্যালাক্সি A06

২০২৫ সালের সেরা ৫ ফিচার ফোন

২০২৫ সালের সেরা ৫ ফিচার ফোন

২০২৫ সালে ৪০ হাজার টাকায় সেরা ৫টি স্মার্টফোন

২০২৫ সালে ৪০ হাজার টাকায় সেরা ৫টি স্মার্টফোন

ADVERTISEMENT

সর্বশেষ সংযোজন

চ্যাটজিপিটি
প্রযুক্তি সংবাদ

চ্যাটজিপিটিতে এখন ডিপ রিসার্চ পিডিএফ আকারে পাবেন

চ্যাটজিপিটি রেসিপি থেকে শুরু করে গণিত সমাধান, ভার্সিটির...

ঈদুল আজহায় অপোর আকর্ষণীয় অফার, বাজারে মিলছে নতুন এ৫এক্স

ঈদুল আজহায় অপোর আকর্ষণীয় অফার, বাজারে মিলছে নতুন এ৫এক্স

ইন্টারনেটবিহীন পৃথিবীতে বাস করতে চায় যুক্তরাজ্যের অর্ধেক তরুণ–তরুণী

ইন্টারনেটবিহীন পৃথিবীতে বাস করতে চায় যুক্তরাজ্যের অর্ধেক তরুণ–তরুণী

২০২৭-এ আসছে বাঁকানো ডিসপ্লে ও কাচের আইফোন

২০২৭-এ আসছে বাঁকানো ডিসপ্লে ও কাচের আইফোন

মাসের সবচেয়ে পঠিত

বাংলাদেশে স্মার্টফোনপ্রেমীদের মন জয় করল স্যামসাং গ্যালাক্সি A06

বাংলাদেশে স্মার্টফোনপ্রেমীদের মন জয় করল স্যামসাং গ্যালাক্সি A06

২০২৫ সালে কম দামে ভালো মোবাইল: আপনার বাজেটের মধ্যে সেরা অপশন

২০২৫ সালে কম দামে ভালো মোবাইল: আপনার বাজেটের মধ্যে সেরা অপশন

২০২৫ সালের সেরা ৫ স্মার্টফোন

২০২৫ সালের সেরা ৫ স্মার্টফোন

দামে সেরা ৫জি ফোন: অনার পাওয়ার ৫জি

দামে সেরা ৫জি ফোন: অনার পাওয়ার ৫জি

Facebook Twitter Instagram Youtube
Techzoom.TV

টেকজুম প্রথম বাংলা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক ২৪/৭ মাল্টিমিডয়া পোর্টাল। প্রায় ১৫ বছর ধরে টেকজুম বিশ্বস্ত ডিজিটাল মিডিয়া প্রকাশনা হিসেবে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং ফিনটেক সংক্রান্ত নানা বিস্তৃত বিষয় কভার করেছে। এটি বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে ডিজিটাল মিডিয়া প্রকাশনাটি। বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদক ও প্রকাশক:

মো. ওয়াশিকুর রহমান

অনুসরণ করুন

যোগাযোগ

নিউজরুম
+88016 777 00 555
+88016 23 844 776
ই-মেইল: [email protected]

সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং
+88017 98 07 99 88
+88017 41 54 70 47
ই-মেইল: [email protected]

স্বত্ব © ২০২৪ টেকজুম | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed and Maintained by Team MediaTix

No Result
View All Result
  • সর্বশেষ
  • প্রযুক্তি সংবাদ
  • টেলিকম
  • অটো
  • ফিচার
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • কিভাবে করবেন
  • শিক্ষা ও ক্যাম্পাস
  • অর্থ ও বাণিজ্য

স্বত্ব © ২০২৪ টেকজুম | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed and Maintained by Team MediaTix