ফটোগ্রাফিও একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে তা ইতিমধ্যে অনেকেই বুঝতে শিখেছেন। তাইতো শখের এই কাজটিই এখন অনেকেই পেশা হিসেবে নিচ্ছেন। কেউ কেউ তো আবার দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ফটোগ্রাফি করে নিজেদের পাশাপাশি দেশকে পরিচিত করছেন। বর্তমান সময়ের তরুণ ফটোগ্রাফারদের মধ্যে বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন কাইফ তালুকদার আপন, ওয়েডিং ফটোগ্রাফির পাশাপাশি দেশের মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজ করছেন ফটোগ্রাফার হিসেবে। শুরুটা অবশ্য বন্ধুর বোনের গায়ে হলুদের অনুষ্টানে শখের বশে ছবি তোলার মধ্য দিয়ে। আজ তার মুখেই শুনবো কিভাবে তিনি এই পথে এলেন এবং পথচলা সম্পর্কে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি।
কাজের শুরু কবে থেকে:
বেশিরভাগ মানুষেরই গল্পের শুরুটা থাকে একদম সাদামাটাভাবে। নানা বাধা, প্রতিকূলতা অতিক্রম করে তবেই মানুষ তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। আপন জানান, তার কাজের শুরুটা মূলত ২০১৫ সাল থেকে, তখন শখের বশে টুকটাক ফটোগ্রাফি করতেন। তবে ওয়েডিং ফটোগ্রাফি শুরু করেন ২০১৭ সাল থেকে, বন্ধুর বোনের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে গিয়ে শখের বশে ছবি তুলেন। সেই ছবিগুলো সবাই পছন্দ করে, সেখান থেকেই প্রফেশনালি ফটোগ্রাফি শুরু করেন।
অনুপ্রেরণা:
একজন মানুষ যতই সফল হোক না কেন, তার এই সফল গল্পের পেছনে অবশ্যই অনুপ্রেরণা থাকা লাগে। আপন বলেন, তিনি সবসময় মা-বাবার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা এবং সাপোর্ট পেয়ে এসেছেন।
শুধু ওয়েডিং এবং মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতেই কেন:
ফটোগ্রাফিতে একাধিক ক্যাটাগরি রয়েছে। একেক ক্যাটাগরিতে একেকজন ভালো করে থাকে। কারো পছন্দ ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি, আবার কারো পছন্দ স্ট্রিট ফটোগ্রাফি। আবার কারো পছন্দ ফটোগ্রাফি। কিন্তু আপন শুধু ওয়েডিং ফটোগ্রাফি এবং মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতেই কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওয়েডিং ফটোগ্রাফিতে ক্রিয়েটিভ কিছু করা যায়, নিজের মতো করে কাজ করা যায়। আর মিডিয়াতে ফটোগ্রাফির ব্যাপারে বলেন, ফটোগ্রাফি যেহেতু শখের জায়গা থেকে এসেছে, তাই মিডিয়াতে কাজ করার একটা স্বপ্ন থাকেই। সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, প্রায় সব অভিনেতার সাথেই কাজ করা হয়েছে, এবং সবার কাছ থেকেই ভালো সাপোর্ট পেয়েছি।
নিজের সম্পর্কে আরও কিছু কথা:
বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের সেরা ফটোগ্রাফার প্রীত রেজা। ওয়েডিং ফটোগ্রাফি যে একটা সম্মানিত এবং লাভজনক পেশা, তা তিনিই এ দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আপন জানান, তার পছন্দের ফটোগ্রাফারদের মধ্যে প্রীত রেজা অন্যতম।
বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রকোপ এবং লকডাউনের কারণে কাজের পরিধি অনেক ছোট হয়ে গেছে। এখন আর আগের মতো করে বিয়ের অনুষ্ঠান কিংবা নাটক সিনেমার শুটিংও হচ্ছে না। তাই এখন আর আগের মতো কাজ নেই, তবে বর্তমানে কয়েকটি কাজ তার হাতে রয়েছে।
অবসরে কি করেন এই প্রশ্নের জবাবে আপন বলেন, ফটোগ্রাফারদের আসলে তেমন একটা অবসর থাকেনা। তবে যখন অবসর পান তখন তিনি নাটক সিনেমা দেখেন। নিজে নিজে ভিন্ন ভিন্ন আইডিয়ায় নতুন ছবি তুলে সে ব্যাপারে নিজেকে একটু পরীক্ষা করে নেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আপন বলেন, ফটোগ্রাফার হিসেবে নিজেকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই, এবং সবাইকে আরও ভালো ভালো ছবি উপহার দিতে চাই।
উল্লেখ্য, বেসরকারি টিভি চ্যানেল আরটিভি, এনটিভি এবং বাংলাভিশনসহ ব্রশ কয়েকটি টিভির প্রজেক্টে কাজ করেছেন আপন। এখন পর্যন্ত ফটোগ্রাফিতে কোন বড় পুরষ্কার জিততে না পারলেও অসংখ্য কন্টেস্টে পুরষ্কার জিতেছেন। ইতিমধ্যেই আপন সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফটোগ্রাফি (পাঠশালা) থেকে ফাউন্ডেশন কোর্স সম্পন্ন করেছেন।