Techzoom.TV
  • সর্বশেষ
  • প্রযুক্তি সংবাদ
  • টেলিকম
  • অটো
  • ফিচার
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • কিভাবে করবেন
  • শিক্ষা ও ক্যাম্পাস
  • অর্থ ও বাণিজ্য


No Result
View All Result
Techzoom.TV
  • সর্বশেষ
  • প্রযুক্তি সংবাদ
  • টেলিকম
  • অটো
  • ফিচার
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • কিভাবে করবেন
  • শিক্ষা ও ক্যাম্পাস
  • অর্থ ও বাণিজ্য
No Result
View All Result
Techzoom.TV
No Result
View All Result
ADVERTISEMENT

 দর্শনীয় স্থানে ভরপুর মুন্সিগঞ্জ জেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, টেকজুম ডটটিভি by নিজস্ব প্রতিবেদক, টেকজুম ডটটিভি
মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট ২০২১
 দর্শনীয় স্থানে ভরপুর মুন্সিগঞ্জ জেলা
Share on FacebookShare on Twitter
ঢাকার খুব কাছাকাছি অবস্থিত একটি সমৃদ্ধ জেলার নাম মুন্সিগঞ্জ,যা অনেকের কাছে প্রাচীন বিক্রমপুর নামে পরিচিত।এই জেলা প্রাচীন বাংলার প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন,পদ্মা,ইছামতি,ধলেশ্বরী নদী ঘেরা সৌন্দর্যে ভরপুর।এই সৌন্দর্যকে আরো যত্ন করে গড়ে তুলেছে নানারকম দর্শনীয় স্থান। আজকের বিস্তারিত মুন্সিগঞ্জ জেলার এই দর্শনীয় স্থানগুলোকে নিয়ে।
পন্ডিতের ভিটাঃ
বৌদ্ধ ধর্মের গৌতম বুদ্ধের পর তাদের কাছে শ্রেষ্ঠ ধর্মভিক্ষু হচ্ছেন অতীশ দীপঙ্কর। অতীশ দীপঙ্কর পাল শাসনামলে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু ছিলেন।ভারতবর্ষ, তিব্বত,ইন্দোনেশিয়া সহ আরো বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধরা আজ ও তাকে সম্মানের উচু স্থানে রাখে।অপ্রিয় সত্যি বলতে গেলে,এই মানুষটির জন্ম বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জে হলেও,আমরা তার বস্তুভিটা টি ছাড়া আর তেমন কিছুই ধরে রাখতে পারিনি।অতীশ দীপঙ্কর ৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে মুন্সিগঞ্জ জেলার বজ্রযোগিনী গ্রামে গৌড়ীয় রাজ পরিবারে জন্মগ্রহন করেন।তার বাবার নাম রাজা কল্যান শ্রী এবং মায়ের নাম প্রভাবতী।তিনি তার বাবা মায়ের ২য় সন্তান ছিলেন।জন্মসূত্রে অতীশ একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন।সে সময় তার নাম ছিলো আদিনাথ চন্দ্রগর্ভ।অতীশ ছোটবেলা থেকেই ভীন্নধর্মী চিন্তা চেতনা নিয়ে বড় হয়েছিলেন,তার সেই চিন্তা তাকে এক সময় বৌদ্ধ ধর্মের একজন প্রানশক্তি বানিয়ে দিয়েছিলো।তার জন্মের সময় তার পৈত্রিক ভিটাটি তে একটি প্রাসাদ ছিলো,যার ঠিক পেছনের ছিলো আরেকটি প্রাসাদ,যেখানে রাজ্যের কর্মীরা থাকত।কথিত আছে,এই দুইটা প্রসাদের সাথে ব্রজাসন তথা বিক্রমপুরের বিহারের সাথে চলাচল করার মত একটা গোপন পথ ছিলো।সময়ের বিবর্তনে এগুলোর কিছুই নেই এখন।তার বদলে তার পৈত্রিক ভিটায়  এখন নির্মিত হয়েছে ‘অতীশ স্মৃতি চৈত্য স্থাপত্য’ এবং একটি লাইব্রেরি।লাইব্রেরি তে অতীশের লেখা বই ,বিভিন্ন ইতিহাসের বই,বৌদ্ধদের ত্রিপট সহ নানা রকম বই শোভা পেয়েছে।
এছাড়াও চারতলা কাঠামোর অতীশ স্মৃতি চৈত্যের নিচে রাখা আছে চীন থেকে নিয়ে আসা অতীশের দেহভস্ম। অতীশ স্মৃতি চৈত্য স্থাপত্যটি মূলত গোল আকৃতির।প্রায় ৬০ ফিট গভীরে অতীশ দীপঙ্করের ছাইভস্ম ফেলে সেখান থেকে পাইলিং কাজ শুরু করা হয় ২০১৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তে।চারতলা সমান কাঠামোর নান্দনিক অতীশ স্মৃতি চৈত্য স্থাপত্যে ৯টি তাক দেখা গেছে।
অতীশের এই দেহভষ্মের টানে নানা দেশ থেকে পর্যটনরা চলে আসেন এক নজর দেখতে।  বর্তমানে এই বাড়িটি পন্ডিটের ভিটা বা নাস্তিক পন্ডিতের ভিটা নামে সবচেয়ে বেশি পরিচিত।নাস্তিক শব্দটি আসার একটি কারন আছে, সে সময়ে বৌদ্ধদের বলা হত নাস্তিক,কারন বৌদ্ধরা কোন ইশ্বর মানতেন না। অতীশ তার নিজ ধর্ম রেখে বৌদ্ধ জ্ঞান করার ফলে তাকে অনেকেই নাস্তিক উপাধি দিয়েছিলো,সে থেকেই তার ভিটার নাম হয় নাস্তিক পন্ডিতের ভিটা।
বারো আউলিয়ার মাজারঃ
বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রাচীন ইতিহাসে ভরপুর একটি জেলা।অনেক পুরোনো ইতিহাস ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এই জেলাটিতে,সে ইতিহাসের প্রমানস্বরূপ দাঁড়িয়ে আছে অনেক নিদর্শন।তার মধ্যে একটি হচ্ছে বারো আউলিয়ার মাজার। ইসলামের প্রথম যুগে, সেই সময়ে বঙ্গের রাজধানী হিসেবে বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জে বেশ কয়েকজন সুফি দরবেশ ইসলামের দাওয়াত দিতে ও ইসলাম প্রচারের জন্য আগমন করেন এখানে,তারই প্রমানস্বরূপ আজকের এই বারো আউলিয়ার মাজার।
মুন্সিগঞ্জ জেলার  অন্তর্গত বড় কেওয়ার গ্রামে এই মাজারটি অবস্থিত।লোকমুখে শুনা যায়,১৯৭৪ সালে তেঁতুলতলা মাজারের সংস্কারের কাজ করার সময় এখানে এক খন্ড পাথরে আরবি ও ফার্সি ভাষায় লিখিত ১২ জন সূফী দরবেশ বা ধর্ম প্রচারকের নাম এবং একটি প্রাচীন শিলালিপি পাওয়া গিয়েছিল।সে শিলালিপি থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে এখানে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার জন্য একটি বড় কাফেলার আগমন ঘটেছিলো। সুদূর আরব দেশ হতে পবিত্র ইসলাম ধর্ম প্রচার করার জন্য মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর আনসার ও মুজাহিদ হিসেবে এই দরবেশগন বাংলাদেশের এই স্থান সহ নানা স্থানে ভ্রমন করতেন। পূর্বে এই স্থানটিতে কালীদাস সাগর ছিল। পরবর্তীতে জঙ্গলাপূর্ন পতিত ভূমিতে পরিনত হলে ১২ জন আউলিয়া এই স্থানটিকে দ্বীন ইসলাম প্রচারের কেন্দ্র হিসাবে এখানে ইমারত, দীঘি ও এবাদতখানা প্রতিষ্ঠিত করেন।  প্রাচীন শিলালিপিটিতে পাওয়া ১২ জন ধর্মপ্রচারক বা দরবেশের নামগুলো হলো___
 শাহ সুলতান হোসাইনী মাদানী (রহ), সুলতান সাব্বির হোসাইন (রহ), কবীর হাশিমি (রহ), আল হাসান (রহ), শেখ হোসাইন (রহ), আবুল হাশেম হোসাইনী (রহ), হাফেজ আবু বক্কর সিদ্দিক (রহ), হযরত ইয়াছিন (রহ), ওবায়েদ ইবনে মুসলিম আসাদী (রহ), আব্দুল হালিম (রহ), শাহদাত্ হোসাইনী (রহ) এবং আবুল কাহার আল বাগদাদী (রহ)।
ধারনা করা হয়, সেসময়ে এই অঞ্চলের শাসক শ্রীনাথ গুপ্তের রাজত্ব কাল ছিলো।সে কালে এই দরবেশরা এখানে এসে ইসলামের প্রচার কাজ করতো। তারা মুন্সিগঞ্জের এই গ্রামটিতে এসে মূলত বসতি স্থাপন করতো।তারা এই জেলার  সরস্বতী, কেওয়ার, মহাকালী, বজ্রযোগিনী, চাম্পাতলা, রাজাবাড়ী, শ্রীপুর, কার্তিকপুর অঞ্চলগুলোতে মূলত ইসলামের প্রচার কাজ করে গেছেন।এমনকি এও শুনা যায়, কেওয়ার এলাকার পানির অভাব দূরীকরণে তারা এখানে দীঘিও খনন করে গিয়েছিলেন। সেই ঐতিহাসিক দীঘিটি আজও আছে।মূলত, ১৯৭৪ সাল থেকে কেওয়ারের তেঁতুলতলা মাজারটিই বারো আউলিয়ার মাজার হিসেবে মুন্সীগঞ্জ জেলায় পরিচিতি লাভ করে। এটি স্থানীয়দের কাছে বারো আউলিয়ার মাজার বা কেওয়ার মাজার বা তেতুলতলা মাজার নামেই পরিচিত। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে  এমনকি ঢাকার কাছাকাছি অবস্থিত বলে  অনেকেই এখানে ঘুরতে আসেন।
তবে মুন্সিগঞ্জেই কেবল বারো আউলিয়া মাজার অবস্থিত না, পঞ্চগড়, চট্টগ্রাম জেলাতেও একই নামে দুইটি মাজার অবস্থিত রয়েছে।ধারনা করা যায়,এই ১২ জন দরবেশ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তেই ধর্ম প্রচার করার জন্য অবস্থান করতেন।এবং সে অবস্থানকৃত জায়গায় পরবর্তীতে মাজার স্থাপন করা হতো।
 মাওয়া ফেরি ঘাট ও পদ্মা সেতুঃ 
মুন্সিগঞ্জ জেলার,লৌহজং উপজেলার, মাওয়া ইউনিয়নে পদ্মার নদীর পাড়ের সবচেয়ে বড় ফেরি ঘাট হচ্ছে মাওয়া ফেরি ঘাট।বাংলাদেশের দক্ষিন অংশের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে এই মাওয়া ফেরি ঘাট।এই ফেরিঘাট টি বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম ফেরি ঘাট।এখানে একই সাথে তিনটি ফেরি চলাচল করে।তা হলো,রো রো ফেরি,ডাম্বো ফেরি,কে টাইপ ফেরি। এছাড়াও দিন-রাতব্যাপী সর্বোমোট ১৮ টি ফেরি এই পথে চলাচল করে।বাংলাদেশের দক্ষিন অংশের প্রায় ২১ টি জেলার যোগাযোগ সম্পন্ন হয় এই ফেরি ঘাটের সাথে।
খুব শীঘ্রই হয়ত মাওয়া ফেরি ঘাটের এত জমজমাট বন্ধ হয়ে যাবে।কারন ফেরি ঘাটের গা ঘেষে পদ্মা সেতুর নির্মানের কাজ চলছে।একটা সময় পদ্মা সেতু দিয়ে পদ্মা নদী পার হওয়া যাবে।এছাড়াও শীতকালে কুয়াশার কারনে অনেক সময় ফেরি ঘাটের চলাচল বন্ধ করা লাগতো।পদ্মা সেতু অচিরেই এই অসুবিধাগুলোর লাঘব করতে পারবে।তবে ফেরি ঘাটের স্মৃতি হিসেবে রয়ে যাবে ইলিশ ভাজার হোটেল গুলো।এখানকার জমজমাট অবস্থার বেশ বড় একটা অংশ জুড়ে রয়েছে পদ্মার ইলিশ ভাজা খাওয়ার হোটেলগুলো।দূর দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসে এখানে ইলিশ ভাজা,ইলিশ এর লেজ ভর্তা,গরম ধোয়া উঠা ভাত খেতে।মুন্সিগঞ্জের জনপ্রিয় খাবারগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এই মাওয়া ঘাটের পদ্মার ইলিশ ভাজা।এই সুস্বাদু ইলিশ ভাজার জন্যই মাওয়া ফেরি ঘাট দর্শনীয় স্থানের তালিকায় জায়গা পেয়ে গেছে।ভবিষৎ-এ পদ্মা সেতুর চলাচল শুরু হলেও মাওয়া ফেরি ঘাট জমজমাট হয়ে থাকবে ইলিশ ভাজার কারনে।একটাসময় মুন্সিগঞ্জ জেলা একই সাথে মাওয়ার ইলিশ ভাজা ও পদ্মা সেতু নির্মানের ইতিহাস বহন করবে সগৌরবে।
ঐতিহ্যবাহী কাঠ ও টিনের বাড়ি-ঘরঃ
কাঠের বাড়ির জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় দেশ হচ্ছে জাপান,আর বাংলাদেশে কাঠের বাড়ির জন্য জনপ্রিয় জেলা হচ্ছে মুন্সিগঞ্জ।
কথাটা যে কতটা সত্যি,তা মুন্সিগঞ্জ না আসলে বুঝবেন না।মুন্সিগঞ্জ কাঠের দোচালা,চৌচালা বাড়ির জন্য অনেক বিখ্যাত।এখানে আসলেই চোখে পরবে বিভিন্ন উপজেলায় সারি সারি কাঠের দোচালা,চৌচালা বাড়ি এমনকি সাতচালা বাড়িও।
মুন্সিগঞ্জ জেলার একটা অংশ প্রতিবছরেই সর্বনাশা পদ্মা নদীর কবলে পরেন।সে নদী ভাঙনে হারিয়ে যায় মানুষের বসত বাড়ি।মূলত সেখান থেকে উঠে এসেছে কাঠের বাড়ি তৈরির প্রচলন।
এই বাড়ি গুলোর বিশেষত্ব হচ্ছে,খুব সহজেই জোড়ায় জোড়ায় খুলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়  স্থানান্তর করা যায়।ফলে নদী ভাঙনের সময় সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরানো যায় বাড়িগুলো।
মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার কাটাখালী,হাতিমারা৷ টংগী বাড়ি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও সিরাজদিখান উপজেলার প্রায় অনেক গুলো ইউনিয়নে গেলেই চোখে পরবে কাঠের বাড়িঘর।
মাটি, খড়,বাঁশ, বিভিন্ন জাতের কাঠ,প্লেইন শিট ইত্যাদি দিয়ে তৈরি কারুকাজ মিশ্রিত এই বাড়িগুলো যেনো রুচিশীলতারই প্রকাশ ঘটায়।
প্রতিবছর বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্যমাসে কাঠের বাড়ি বিক্রির হাট বসে।তৈরিকৃত কাঠের বাড়ি গুলোকে কিনে এনে অন্য জায়গায় স্থাপন করতে সময় লাগে মাত্র ৫/৬ দিন।সেটা অবশ্য বাড়ির সাইজের উপর নির্ভর করছে।প্রতিটি বাড়ির মূল্য দুই লক্ষ টাকা থেকে বিশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ও হয়ে থাকে।
বাড়ি গুলোর মূল্য দালান নির্মানের মূল্যের কাছাকাছি হলেও,জেলার অনেকেই শখের বসে একটা কাঠের বাড়ি বানায় নিজের জমিতে।
বাড়িগুলো বানানোর কাঠ সংগ্রহ করা হয় চট্টগ্রাম থেকে।শাল সেগুন,বাচালু,নাইজিরা,ওকান,লোহাকাঠ সহ নানা জাতের কাঠ দিয়ে বানানো হয় বাড়িগুলো।পাশাপাশি বাড়িগুলোর পরিচর্যার জন্যও প্রতিবছর কাঠে তেল, কাঁচা গাব ও রং ব্যবহার করা হয়। এতে করে বাড়িগুলোর সৌন্দর্য একই রকম থাকে বছরের পর পর।এমনকি পুরাতন হলে প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রিও করে দেয়া যায় বাড়ির কাঠ ও টিনগুলোকে।
 ঢালিস আম্বার নিবাস ( Dhali’s Amber Nivas)ঃ 
মুন্সিগঞ্জ জেলার বেশিরভাগ উপজেলা মানেই গ্রামীন পরিবেশ,গাছপালায় ঘেরা সবুজ গ্রাম,পাখির কলকাকলি।
তেমনি একটি সবুজ ঘেরা উপজেলা হচ্ছে সিরাজদিখান,সে সবুজের মাঝে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে একটি রিসোর্ট, নাম “ঢালিস আম্বার নিভাস”। মুন্সিগঞ্জ জেলার, সিরাজদিখান উপজেলার,ইছাপুরা ইউনিয়ন এ এর অবস্থান।প্রায় ১৭ একর জমি নিয়ে অবস্থান করছে রিসোর্সটি। রিসোর্ট টির ভেতরের পরিবেশ খুবই সুন্দর।কৃত্রিম গাছ বাড়ি,দোলনা,লেক,কাঠের ব্রিজ,বসে আড্ডা দেয়ার মত নানান জায়গা সহ গাছগাছালি ঢাকা পরিবেশে শৈল্পিক ছোয়ার প্রকাশ বেশ ভালোভাবে হয়েছে।
এছাড়াও শহর ছেড়ে গ্রামে ছুটে এসে বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহন করা মানুষগুলোর জন্য রয়েছে হোটেল রুম,সুইমিং পুল,রেস্টুরেন্ট সহ নানা রকম সুযোগ সুবিধা,বাচ্চাদের খেলাধুলা করার জন্য আছে কিডস জোন।চাইলে একটি রাত আনন্দে কাটিয়ে দেয়া যাবে গ্রামীন পরিবেশের সাথে। তবে এগুলো ছাড়াও গাছগাছালির মাঝে দিব্যি একটি বেলা কাটিয়ে দেয়া যাবে।
বিক্রমপুর বিহারঃ
বিক্রমপুর বিহার হলো একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার।বিহারটি প্রাচীন বিহার হলেও এটি আবিষ্কার করা হয়,২০১৩ সালের ১৩ ই মার্চ।মুন্সিগঞ্জ জেলার রামপালের অন্তর্ভুক্ত,  রোঘুরামপুর গ্রামে এই বিহারটির নিদর্শন মিলে।
“অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন” নামের একটি সংগঠন ২০১৩ সালে এই বিহারটির আবিষ্কার করেন।তবে এই আবিষ্কারের সাথে সম্মলিত ভাবে যোগ দিয়েছিলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্মতত্ত বিভাগ।
বিহারটির ইতিহাস অনুযায়ী জানা যায়,এটি রাজা ধর্মপালের শাসনামলের একটি বিহার।আনুমানিক অষ্টাদশ খ্রীস্টাব্দীতে, বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জে তখন পাল শাসনামল ছিলো।বিহারটি সম্ভবত সেই সময়েরই একটি নিদর্শন।এবং এও বলা হয় যে,সে সময়ের প্রায় ৩০ টি উল্লেখযোগ্য বিহারের মধ্যে বিক্রমপুর বিহারটি অন্যতম।
তাছাড়া, মহারাজ ধর্মপালের শাসনামলে অতীশ দীপংকর ছিলেন একজন বৌদ্ধভিক্ষু।তিনি তখন পালের একটি বিহারে অবস্থান করে ধর্মচর্চা করতেন।ধারনা করা হয় এই বৌদ্ধবিহারটির সাথে তারও একটা সম্পর্ক রয়েছে।দীপংকর এর পন্ডিতের ভিটার খুব কাছাকাছি এই বিহারটি।ইতিহাস ঘেটে এখনো এমন কিছু তথ্য পাওয়া গেছে যে,অতীতে পাল রাজাদের শাসনামলে অতীশ দীপংকর বৌদ্ধ ধর্মচর্চা হিসেবে যে বিহারে অবস্থান করতেন,সেটি তার বাড়ির কাছাকাছিই ছিলো।এমনকি সে বিহারের সাথে তার বাড়ির একটি গোপন যোগসূত্র বা পথ ও ছিলো।যে গোপন পথ দিয়ে বাড়িতে যাতায়াত করা যেতো।সে বিহারটির পূর্ব নাম ছিলো বজ্রাসন বিহার।
তবে বিহারটি খননে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন এর ব্যপক অবদান রয়েছে। তারা দীর্ঘ ৪ বছর এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি অনুসন্ধানের পেছনে ব্যয় করেন।তবে, বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এই প্রত্নতাত্ত্বিক খননের জন্য অর্থের যোগান দেয়।
এখান থেকে এই পর্যন্ত প্রায় ১০০ এরও বেশি মূল্যবান মূর্তি ও ভাস্কর্য পাওয়া যায়,যা এখন বিক্রমপুর জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
 বিক্রমপুর জাদুঘরঃ
জাদুঘর মানেই হচ্ছে প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সংরক্ষনগার।বিক্রমপুর এর ঝুলি প্রাচীন ইতিহাস,প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর দিক থেকে অনেক ভারী,এই কথা কারো অজানা নয়।
সে নিদর্শন,ইতিহাস,ঐতিহ্য নিয়েই গড়ে উঠেছে বিক্রমপুর জাদুঘর।যদিও এখনো জাদুঘরটি সব কিছু সংরক্ষন করতে পারেনি,কালের বিবর্তনে ইতিহাস,নিদর্শনের প্রায় অনেক কিছুই মুছে যাচ্ছিলো,সে সময়টাতে এসেই, “অগ্রসর বিক্রমপুর” নামে একটি ফাউন্ডেশন এর হাত ধরে উঠে আসে বিক্রমপুর জাদুঘর।
মুন্সিগঞ্জ জেলার,শ্রীনগর উপজেলার, ভাগ্যকুল ইউনিয়নের উত্তর বালাশুর নামে একটি গ্রামে অবস্থান করছে দুইশত বছর পুরোনো এক জমিদার বাড়ি,নাম ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি।এই বাড়ির শেষ জমিদার ছিলেন রাজা যদুনাথ রায়,যিনি একটা সময় দেশ ছেড়ে চলে যান।এই বাড়ির আশেপাশে প্রচুর সম্পত্তি ছিলো।ছিলো ঘাটবাধানো বিশাল পুকুর।
সে বাড়ি ও পুকুরের পাশে প্রায় ১৩ একর জমি নিয়ে ২০১৪ সালে গঠিত হয়েছে বিক্রমপুর জাদুঘর। জাদুঘরটি নির্মানে সরকারের অর্থায়ন ও বেশ সহযোগীতা করেছিলো।এমনকি জাদুঘরটির ভিত্তিপ্রস্তর ও নির্মান করেন বাংলাদেশ সরকার।জেলার বিভিন্ন ব্যাক্তিত্বদের পরিচিতি,জেলার বিভিন্ন ইতিহাস, পরিচিতি নিয়ে গড়ে উঠেছে বিক্রমপুর জাদুঘর টি।
জাদুঘরটি তিনতলা ভবনের। যার মূল প্রবেশপথে রয়েছে দু’পাশে দু’টি বড় মাটির পাতিল। নিচতলার বাঁ পাশের গ্যালারিটি হয়েছে জমিদার যদুনাথ রায়ের নামে,এবং ডান পাশের গ্যালারিটি হয়েছে স্যার জগদীশ চন্দ্রবসুর নামে।দ্বিতীয় তলার সম্পূর্ন গ্যালারিটি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারী নামকরনে।
এছাড়াও জাদুঘরটিতে রয়েছে বিক্রমপুরের প্রাচীন মানচিত্র, জেলার বিভিন্ন প্রত্নসামগ্রীর আলোকচিত্র, বৌদ্ধবিহার, হযরত বাবা আদম (রা.) শহীদ মসজিদ, ইন্দ্রাকপুর কেল্লা, অতীশ দীপঙ্করের পরিচিতিমূলক আলোকচিত্র।
 এছাড়া অন্যদিকে রয়েছে,জাতীয় জাদুঘর, বরেন্দ্র জাদুঘর ও কলকাতা জাদুঘরে সংরক্ষিত কষ্টিপাথরের মূর্তিগুলোর আলোকচিত্র।রঘুরামপুর, নাটেশ্বরসহ বিক্রমপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া পোড়ামাটির নল, মাটির পাত্র, পোড়ামাটিবিক্রমপুরের বিভিন্ন মনীষীদের পরিচিতিসহ আলোকচিত্র, বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান, মঠ ও মন্দিরের আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে জাদুঘরে।
জাদুঘর টির কাজ এখনো শেষ হয়নি,জেলার কিছু গন্যমান্য লোকরাই জানিয়েছেন জাদুঘরের সামনের খালি অংশটিও কাজে লাগানো হবে।সেখানে হবে মুক্ত প্রদর্শনী,যেখানে প্রদর্শন করা হবে গ্রাম বাংলা বিভিন্ন ঐতিহ্য ও ,বিলুপ্তপ্রায় পণ্যকে।
 শ্যামসিদ্ধির মঠঃ
“মঠ” শব্দটি আসলেই অনেকের মাথায় চলে আসে দিল্লীর “কুতুব মিনার” এর কথা।ধারনা মতে অনেকেই বলে থাকেন,এটা ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে উচ্চ মঠ,এইরকম উচ্চতার আর কোন মঠ ভারতের আশেপাশেও নেই।কিন্তু এই ধারনাটি ভুল।
সবচেয়ে উচ্চ বা লম্বায় বড় মঠ হচ্ছে মুন্সিগঞ্জের শ্যামসিদ্ধির মঠ।মুন্সিগঞ্জ জেলা শ্রীনগর উপজেলার শ্যামসিদ্ধি গ্রামে এই মঠের অবস্থান।
আনুমানিক ২৪৭ বছরের পুরনো এই মঠটি। কুতুব মিনারের উচ্চতা ২৩৬ ফুট,অন্যদিকে শ্যামসিদ্ধির মঠের উচ্চতা ২৪১ ফুট।তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়,এটি ভারত উপমহাদেশের সর্বোচ্চ মঠ এবং সর্বোচ্চ স্মৃতিস্তম্ভ।
মঠটির দক্ষিণদিকের প্রবেশদ্বারের উপর  একটি বাংলা শিলালিপির তথ্যানুযায়ী, মঠটি নির্মান করা হয় বাংলা ১২৪৩ সালে এবং এর নির্মাতা হচ্ছেন সে সময়ের ধর্নাঢ্য ব্যাক্তি সম্ভুনাথ মজুমদার।
লোকমুখে শোনা যায়,সম্ভুনাথ মজুমদার স্বপ্নে দেখেছিলেম,তার বাবার চিতার উপরে একটি মঠ স্থাপন করতে হবে, পরে সে নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি এই মঠটি স্থাপন করেন।
মঠটি অষ্টভুজ আকৃতির।এর আয়তন দৈর্ঘ্যে ২১ ফুট ও প্রস্থে ২১ ফুট।বাইরের দিকে এর প্রতিবাহুর পরিমাপ ৬ মিটার এবং দেয়ালগুলি ১ মিটার প্রশস্ত। ইটের তৈরী প্রায় ২০ মিটার উঁচু মঠটি ১.২০ মিটার উঁচু একটি প্লাটফর্মের উপর দাঁড়িয়ে আছে।
মঠটি তিনটি স্তরে বিভক্ত। নিচের অংশটি মূল গর্ভগৃহ। এর দক্ষিণ দিকে কৌণিক খিলান দ্বারা তৈরী একটি প্রবেশদ্বার আছে, উভয়পাশে রয়েছে আয়তাকার প্যানেল; পক্ষান্তরে অন্য তিনদিকের প্রতি দিকের দেয়াল পলেস্তরায় তিনটি করে প্যানেল ধারণ করে আছে।সবগুলি দেয়ালই মূলত পলেস্তরা করা ছিল, কিন্তু বর্তমানে এগুলি বহুলাংশে ক্ষতিগ্রস্ত। গর্ভগৃহটি একটি গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত, যার উপর ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া শিখরটির ভিত মঠের দ্বিতীয় স্তরে অষ্টকোণাকার আকৃতিতে রুপান্তরিত হয়েছে। অভ্যন্তরভাগে গম্বুজটি বহু খাঁজবিশিষ্ট খিলানের স্কুইঞ্চের সমর্থনে তৈরী। পক্ষান্তরে পাশের দেয়ালগুলি অলঙ্কৃতি খিলান প্যানেলে চিত্রিত। এই খিলান প্যানেল ও কোণার খিলানগুলির উপরে মেজলিয়ান চিত্রায়ণ করা হয়েছে। গম্বুজের ভেতরের দিকে এর ভিত দুসারি ফুলেল বন্ধনী দ্বারা অলংকৃত।
অষ্টকোণাকার দ্বিতীয় স্তরের আটকোণে আটটি নিমগ্নস্তম্ভ রয়েছে এবং প্রত্যেক দিকের বড় আয়তাকার অংশটি বদ্ধ ঝাপসহ বড় জানালা প্যানেল দ্বারা অলংকৃত। জানালা প্যানেলের উপরে চলমান প্যানেলগুলি আটদিক ঘিরেই পরপর একটি করে একগুচ্ছ নাগমুন্ডু বা ফুল-পাতার নকশা ধারণ করে রয়েছে। আট দিকের প্রতিটির উপরে বক্রচালা অলঙ্করণ আছে, যার উপর থেকেই মঠের সবচেয়ে উপরের স্তর ক্রমশ সরু হয়ে উপরে উঠে গেছে। শিখরটির শীর্ষ কলস ফিনিয়ালে পরিশোভিত ছিল; বর্তমানে বিলুপ্ত, কিন্তু একটি লোহার ত্রিশূল এখনও দাঁড়িয়ে আছে।
মঠটি কুতুব মিনারের তুলনায় বড় হলেও, তার মত এটি সংরক্ষিত নয়। এখন কেবল মঠটির ধ্বংসাবশেষই অবশিষ্ট রয়েছে। মঠের গায়ের মূল্যবান পাথর এবং পিতলের কলসির এখন আর অস্তিত্ব নেই, এর মূল কাঠামো নকশা করা দরজা জানালা অনেক আগেই চুরি হয়ে গেছে।
 রাজা শ্রীনাথ রায়ের বাড়িঃ
মুন্সিগঞ্জ এর পূর্ব নাম বিক্রমপুর ছিলো।কালের বিভিন্ন ইতিহাস,ঐতিহ্য বহন করে আসছে এই জেলা।নানা রকম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এই জেলায়।
ধারনা করা যায়,আনুমানিক দেড়শ/দুইশ বছর আগে বিভিন্ন জমিদারের আয়ত্তে ছিলো এই জেলা।তার মধ্যে একজন হচ্ছেন রাজা শ্রীনাথ রায়।
রাজা শ্রীনাথ রায় একজন ধনী ও দানশীল ব্যাক্তি ছিলেন।তার এই বৈশিষ্ট্যের জন্য তাকে রায় বাহাদুর উপাধিও দেয়া হয়।
তারই চিহ্নস্বরূপ রয়ে গেছে দুইশত বছরের পুরোনো তার বসবাসরত জমিদার বাড়িটি।
বাড়িটি অবস্থান করছে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার শেখের নগর গ্রামে। বাড়িটির কিছুটা পাশেই বয়ে চলছে  ইছামতি নদী। শেখেরনগর রায়বাহাদুর ইনস্টিটিউশন থেকে আধা কিলোমিটার পূর্বে অবস্থান করছে এই জমিদার  বাড়িটি।গাছগাছালির ছায়া ঢাকা গ্রামটির প্রায় কয়েক একর জমির উপর বাড়িটি কালের সাক্ষী হয়ে নিজের অস্তিত্বের ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে।ইতিহাস বলে,বাংলা ২১ শ্রাবণ ১৩২২ সালে বঙ্গেশ্বর লর্ডকারমাইকেল এই বাড়িতে এসেছিলেন। তার আসার উদ্দেশ্য ছিল একটি দাতব্য চিকিৎসালয় উদ্বোধন করা।
 বাড়িটির নকশা বর্গাকৃতির। পূর্ব পাশে দুইতলা দালান ঘরটি ৪০- ২০ ফুটের মতো হবে। উত্তর পাশের একতলা দালানটি ২০-২০ ফুট হবে হয়তো। পশ্চিম পাশে ২০ -১৫ ফুট এবং দক্ষিণ পাশের একতলা দালানটিতে ২০- ১৫ ফুট আয়তনের হবে বলে ধারনা করা হয়।ইট-সুরকি-চুনা দিয়ে নির্মিত করা হয়েছিলো বাড়িটিকে।
পুরাতন রাজবাড়ি মানেই বাড়ির সম্মুখে একটি পুকুর ঘাট থাকবে।এই বাড়িটিতেও তার ব্যাতিক্রম নয়।বাড়ির পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের দুটি পুকুরে শানবাধানো ঘাট রয়েছে।
লোকমুখে শুনা যায়, ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় রাজা শ্রীনাথ রায়ের সকল পরিবার সদস্যরা কলকাতা চলে যান।
তবে কয়েকবছর আগে স্কুলের শতবছর পূর্তিতে তার নাতি, পুতিরা সিরাজদিখান এসেছিলেন বলে জানান স্থানীয় লোকজন।
তবে সংরক্ষনের অভাবে বর্তমানে বাড়িটির অবস্থা খুবই নাজুক। প্রত্ম অধিদপ্তরের উচিত তাদের অধিভুক্ত করা বাড়িটিকে।নয়ত মুন্সিগঞ্জ এভাবে কালে কালে তাদের ইতিহাসের চিহ্নগুলো হারিয়ে ফেলবে।
মাওয়া রিসোর্টঃ
শহরে ব্যস্ত জীবন পার করা মানুষগুলো সুযোগ পেলেই ছুটে আসে গ্রামে বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহন করতে।গ্রামীন পরিবেশ টানলেও, তাদের অভ্যস্ত জীবনযাপন চায় একটু আরামদায়ক সুযোগ সুবিধা।মূলত এই মানুষগুলোর জন্যই বিভিন্ন রিসোর্ট নির্মান করা হয়।তেমনি একটি রিসোর্ট হচ্ছে মাওয়া রিসোর্ট।
মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার মাওয়া ১ নং ফেরিঘাট থেকে সামান্য দক্ষিনে কান্দিপাড়া গ্রামে এ রিসোর্ট এর অবস্থান।রিসোর্ট টি একদম পদ্মার গা ঘেষেই দাঁড়িয়ে আছেন।মূল প্রবেশ পথেই দেখা যায় একটি বিশাল দিঘি,যেখানে বাধানো দুটি পাকা ঘাট,সে দিঘির পাড়ে নানা রকম গাছপালা দাঁড়িয়ে আছে স্বাগতম জানানোর জন্য।ইচ্ছে করলে যন্ত্রচালিত  নৌকা ব্যবহার করে দিঘির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
আরো রয়েছে ১৮ টি কটেজ।কটেজগুলোর ডেকোরেশন চমৎকার।ইটের দেয়াল ঘেরা,মাথার উপরে গোলপাতার ছাদ, পাশাপাশি বাশ বেত দিয়ে চমৎকার কারূকার্য করা কটেজ।আরো রয়েছে খাবারের ব্যবস্থা হিসেবে একটি রেস্টুরেন্ট বা ক্যাফেটেরিয়া ,যেখানে পদ্মার ইলিশের স্বাদ ও পাওয়া যাবে।
রিসোর্ট টিতে রাতে অবস্থান করলে পদ্মার বাতাস,জোনাকি পোকার আলো সহ আরো দারুন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।এই চমৎকার রিসোর্টটি ঢাকা থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
 স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর পৈত্রিক বাড়ি ও স্মৃতি জাদুঘরঃ
উদ্ভিদবিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, যিনি প্রথম প্রমান করেন,”উদ্ভিদের ও যে প্রান আছে”। গবেষনাকালে এই বিজ্ঞানী পুরোটা সময়ই কাটিয়েছেন ভারতে।কিন্তু এই বিজ্ঞানীর পৈত্রিক নিবাস ছিলো মুন্সিগঞ্জে।মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়ীখাল গ্রামে ছিলো তার পৈত্রিক নিবাস।বিপুল সম্পত্তিও ছিলো সেখানে।তার কিছু কিছু তিনি বিক্রিও করেছেন গবেষনার জন্য টাকার প্রয়োজন পরায়।পরবর্তীতে ভারতে নিজের একটা অবস্থান তৈরি হয়ে যাওয়ার পর পৈত্রিক সম্পত্তির পুরোটাই দান করে দেন জনসেবামূলক কাজে।
সে জমির প্রায় ৩০ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত হয়েছে জগদীশ চন্দ্র বসু কলেজ ও কমপ্লেক্স।কমপ্লেক্স টি নির্মান করা হয় ২০১১ সালে,যা বর্তমানে জগদীশ চন্দ্র বসু ইনস্টিটিউট এর অধীনে আছেন।
জগদীশ চন্দ্র বসুর মূল বাড়িটি ৬ কক্ষ বিশিষ্ট।সে ছয় কক্ষের একটি কক্ষেই নির্মিত হয়েছে জগদীশ চন্দ্র বসু স্মৃতি জাদুঘর।আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জমিতে আরো নির্মিত হয়েছে পশু পাখির ম্যুরাল,কৃত্রিম পাহাড়-ঝড়না,সিড়ি বাধানো পুকুর ঘাট।এছাড়া ৬ টি দিঘি ও রয়েছে এখানে।এইসব তো ইদানিং এর কথা।তার আরো আগে, ১৯২১ সালে নির্মিত হয় তার মায়ের নামে সুরুজ বালা সাহা বিদ্যালয়, ও পরে ১৯৯১ সালে জগদীশ চন্দ্র বসু ইনস্টিটিউশন ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
তবে নিঃসন্দেহে ২০১১ সালে নির্মিত জাদুঘরটি প্রত্নতাত্ত্বিক প্রদর্শন এর মধ্যে অন্যতম।সেখানে স্থান পেয়েছে জগদীশ চন্দ্র বসুর পোট্রেট, গবেষণাপত্র, হাতে লেখা পান্ডুলিপি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাপ্তিতে তাকে লেখা চিঠি,  তেল রং দিয়ে অাঁকা ১৭টি দুর্লভ ছবি, রয়্যাল সোসাইটিতে দেওয়া বক্তৃতার কপি ও আরো নানারকম দুর্লভ জিনিস।
পদ্মহেম ধাম,লালন আখড়াঃ
ইছামতী নদী ঠিক এই জায়গাটিতে এসেই তিন দিকে তিনটি বাক নিয়ে তৈরি করেছে এক চমৎকার মোহনা,এই চমৎকার মোহনার  পাশে মাঠ,সে মাঠের পাশেই এক চিলতে জায়গা।এক চিলতে জায়গা না বলে এক চিলতে সুখ ও বলা যেতে পারে,যেখানে প্রকৃতি প্রেমীরা,মানবপ্রেমীরা আসেন সময় কাটাতে।জায়গাটির নাম পদ্মহেম ধাম,লালনসাই আখড়া।তবে স্থানীয় অনেকে এটাকে বাউল বাড়ি হিসেবেই বেশি চেনেন।আখড়াটির অবস্থান মুন্সিগঞ্জ জেলার, সিরাজদিখান উপজেলার, দোসর পাড়া গ্রামে।লালনসাই এর আখড়া হলেও,এখানে কখনো সাঁইজির পদার্পণ পরে নি।কিন্তু তিনি না আসলেও আমরা জানি যে,তার দর্শন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন জেলায়।সে ভালোবাসায়ই জর্জোরিত ব্যাক্তিদের মধ্যে একজন হচ্ছেন প্রথম আলো পত্রিকার আলোকচিত্রকর সাংবাদিক কবির হোসেন।এই মানবধর্ম প্রেমীর দাদাবাড়ি হচ্ছে মুন্সিগঞ্জ।মানবধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে, তারই উদ্যেগে এখানে গড়ে উঠেছে লালন প্রেমের আখড়া।যেখানে প্রতিবছর হয় সাধুসঙ্গ।
লালন প্রেমচর্চার এই জায়গাটির আরো শোভা বাড়িয়েছে বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী দোতালা ঘরের একটি বৈঠকখানা,একটি বটতলা ও লালন প্রেমীর প্রতীকস্বরূপ বিশাল আকৃতির একটি একতারা গেইট,একতারাটি “সাধুসঙ্গ ১৪২১” উপলক্ষ্যে বটতলা লালন সাই সড়কে উদ্ভোদন  করা হয় ।এছাড়াও আখড়ার চারপাশের পরিবেশ গাছাগাছালির ছায়ায় ঢাকা, যা এক প্রকার মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।
সোনারং জোড়া মঠঃ
প্রাচীন বাংলায় অনেক ধর্মীয়চর্চা হতো। তারই প্রমান স্বরূপ ছড়িতে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন রকম মন্দির,মঠ।মঠ হচ্ছে মূলত এক ধরনের অবকাঠামো,যেখানে ধর্মপ্রান মানুষেরা ধর্মচর্চা বা অনুশীলন করতেন।  তেমনি এক জোড়া মঠ রয়েছে মুন্সিগঞ্জ জেলায়,নাম “সোনারং জোড়া মঠ”।মুন্সিগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ি উপজেলার সোনারং গ্রামে এই মঠ জোড়ার অবস্থান।এই মঠ জোড়া অষ্টদশ শতাব্দীর ইতিহাসের প্রমানস্বরূপ দাঁড়িয়ে আছে।  অনেকে আবার একে মঠ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন না।তাদের ধারনায় এই জোড়া অবকাঠামো দুটো মন্দির মূলত।
বড়টি কালীমন্দির,ছোটটি শিব মন্দির হিসেবে পরিচিত।অতীতে এক সময় সোনারং গ্রামে হিন্দুদের আধিপত্য ছিলো বেশি। মন্দিরের একটি প্রস্তর লিপি থেকে জানা যায়, এলাকার রূপচন্দ্র নামে হিন্দু বনিক লোক ১৮৪৩ সালে ও  ১৮৮৬ সালে যথাক্রমের মন্দির দুটি নির্মাণ করেন।এবং সে লোক মারা যাওয়ার পর তার অন্তিম সংস্কার ও হয় এই মন্দিরে।
দুটো মন্দিরের মধ্যে একটি মন্দির বড়(কালীমন্দির),  যার উচ্চতা প্রায় ২৪১ ফুট।ধারনা করা হয়, এই মঠ বা মন্দিরটি,  দিল্লীর কুতুব মিনারের চেয়েও উচ্চতায় বড়।তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, এটি ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে বড়  মঠ।মঠটির আকৃতি দেখতে অষ্টভুজ এর মত।মঠ দুটির মুল উপাসনালয় কক্ষের সঙ্গের রয়েছে একটি বারান্দা।সামনে রয়েছে বেশ  বড় আকারের একটি পুকুর।বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর  দিক থেকে অনেক সমৃদ্ধ।কিন্তু কালের বিবর্তনে অনেক কিছুই সংরক্ষন করে রাখতে পারেনি,এখন যতটুকু চিহ্ন আছে সেগুলো ধরে রাখলে পরবর্তী প্রজন্মের কাছেও এই নিদর্শন ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে ধরা দিবে।
ভাগ্যকুল জমিদার বাড়িঃ
উনিশ শতকের সময়,ব্রিটিশ আমলে বাঙালীদের মধ্যে অনেক উচ্চ শিক্ষিত ধনী পরিবার ছিলো।যাদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের কর্মযজ্ঞের কারনে জমিদার উপাধি পান।এমনি উপাধি পাওয়া এক জমিদার হচ্ছে যদুনাথ সাহা।
যদুনাথ সাহা উনিশ শতকের দিকে মুন্সিগঞ্জ জেলার,শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল গ্রামে কয়েকটি জমিদার বাড়ি তৈরি করেন।কালক্রমে বান্দুরায় একটি জমিদার বাড়ি এখনো টিকে আছে।যাকে ভাগ্যকুলের জমিদার বাড়ি হিসেবে চেনা যায়।
যদুনাথ সাহা একজন ধনী ব্যবসায়ী ছিলেন।বরিশাল থেকে শাড়ি,লবন,সুপারি এনে তিনি ভারত,মুর্শিদাবাদ বিক্রি করতেন।
তার ৫ সন্তান ছিলো। যাদের প্রত্যেকের জন্যই তিনি ৪০/৫০ গজের দূরত্বে জমিদার বাড়ি তৈরি করেন।সবচেয়ে ছোট সন্তানকে দেন ভাগ্যকুলের এই জমিদার বাড়িটি।কিন্তু তার সন্তান,আত্মীয়-স্বজন এমনকি তৎকালীন  আরো অনেক জমিদাররাই এখানে বেশিদিন থাকেন নি।সবাক ভারতের মুর্শিদাবাদ এ বাসস্থান গড়েছেন।কিন্তু জীবনের একদম শেষ কাল পর্যন্ত যদুনাথ সাহা জমিদার বাড়িতে ছিলেন।পরে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় তার আত্মীয়-স্বজনরা এক প্রকার জোরপূর্বক তাকে ভারত নিয়ে যান।ভারত যাওয়ার কিছুদিন পরই তিনি মৃত্যুবরন করেন।
তিনি যাওয়ার পর থেকেই জমিদার বাড়িটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরে থাকে। জমিদার বাড়িটি ছিলো দ্বীতলা বিশিষ্ট।২য় তলায় উঠার জন্য কাঠের সিড়ি ব্যবহার করা হত।পুরো বাড়ির অভ্যন্তরে ছিলো নানারকম ফুল,পাখির নকশা করা।মূলত বাড়িটি গ্রীক স্থাপত্যের আদলে তৈরি করা হয়েছিলো।বাড়ির পাশেই একটি মন্দির ছিলো,যা এখন প্রায় ধ্বংসাবশেষ অবস্থায় আছে,তবে সে দেয়াল ঘেষে বর্তমানে একটি নতুন মন্দির স্থাপন করা হয়েছে।
আরো রয়েছে একটি বিশাল পুকুর,বাড়ির সম্মুখেই রয়েছে একটি নবকুঠি,যা পূর্বে মূলত একটি গদিঘর ছিলো।
বাড়ির আশেপাশে আরো অনেক বাড়ি থাকলেও সর্বনাশা পদ্মার কবলে অনেক কিছুই হারিয়ে গিয়ে এখনো টিকে আছে মূল বাড়িটি।
স্থানীয়দের একটি সংগঠন বর্তমানে জমিদার বাড়িটি সংরক্ষন এর দায়িত্ব নিয়েছেন,বাড়ির এক পাশে একটি জাদুঘর ও তৈরি করেছেন,যার নাম হচ্ছে বিক্রমপুর জাদুঘর।
 ইদ্রাকপুর কেল্লাঃ
সময়টা ১৬০০ খীঃ এর।বাংলার আধিপত্য তখন বারো ভূইয়াদের হাতে।পুরো বাংলায় তারা স্বাধীনভাবে শাসন চালায়।বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জ তখন শাসন করতো বারোভূইয়াদের চাঁদ রায়,কেদার রায়।
তাদের শায়েস্তা করার জন্য মুঘল ফৌজাদার একটি কেল্লা বা ইমারত স্থাপন করেন।কেল্লার স্থাপনার জায়গাটির নাম ছিলো মুন্সিগঞ্জের ইদ্রাকপুর।সেখান থেকেই ইদ্রাকপুর কেল্লার জন্ম।
দিন যায়,ইতিহাস আর চিহ্ন রয়ে যায়।তেমনি রয়ে যাওয়া ইতিহাসের আর চিহ্নের মধ্যে একটি হচ্ছে ইদ্রাকপুর কেল্লা।
১৬১১ খ্রীঃ চাঁদ রায় ডাকচেরা ও যাত্রাপুর দূর্গ হারিয়ে পরাজিত হোন। তখন বিক্রমপুরের শাসন ক্ষমতা চলে আসে মুঘলদের হাতে।
বিশাল বিক্রমপুরকে মুঘলদের কব্জায় রাখা ও বাংলার রাজধানী ঢাকাকে বিদেশী সৈনিকদের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যেই ১৬৬০ খ্রীঃ ইদ্রাকপুর কেল্লা নির্মান করা হয়।নির্মান করেন মোগল সুবেদার মীর জুলমা।আনুমানিক ১৬৫৮ খ্রীঃ এর এর নির্মান কাজ শুরু হয়,শেষ হয় ১৬৬০ খ্রীঃ তে।
সে সময় ইদ্রাকপুর এলাকাটি ছিলো ইছামতী-ধলেশ্বরী, ব্রাহ্মপূত্র-মেঘনা ও শীতলক্ষ্যা নদীর সংগমস্থল। নদীর গতি পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে এটি মুন্সিগঞ্জ সদরে অবস্থান করছে।
কেল্লাটির  চতুর্দিক প্রাচীর দ্বারা আবৃত।মাঝখানে অবস্থান করছে মূল দূর্গটি। মূল দূর্গটি দেখতে পুরোপুরি ড্রামের মধ্যে। দূর্গের প্রাচীর দেখতে মনে হয় শাপলা পাপড়ির মতো। প্রতিটি পাপড়িতে ছিদ্র রয়েছে।  দূর্গের প্রবেশদ্বার হচ্ছে উত্তর দিকে।প্রবেশদ্বারের এ সিঁড়ি দিয়েই মূল দূর্গের চূড়ায় উঠা যায়। দূর্ঘটি মূল ভূমি হতে ২০ ফুট উঁচু। প্রাচীরের দেয়াল ২-৩ ফুট পুরো।দূর্গের আয়তন ২৪০ ফুট। দূর্গে প্রবেশদ্বারের উত্তর পাশে একটি গুপ্ত পথ রয়েছে। লোকমুখে শুনা যায়, এই গুপ্ত পথ দিয়ে লালবাগ কেল্লায় যাওয়া যেত।যদিও এই কথার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে গুপ্ত পথ দিয়ে লালবাগ কেল্লায় যাওয়া না গেলেও অন্য কোথাও পালানো যেত বলে মনে করেন অনেকে।
 এই দূর্গটি হতে আবদুল্লাপুরে মঙ্গত রায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল। মীর জুমলার সেনাপতি ছিলেন সদলি খান ও মগ রাজা মঙ্গত রায়। উভয়েই মারা যান। মঙ্গত রায় শাহ সুজার সেনাপতি ছিলেন বলে অনেকে ধারণা করেন।
 ইদ্রাকপুর কেল্লায় আবুল হোসেন নামে একজন সেনাধ্যক্ষ সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকতেন। আবুল হোসেন ছিলেন নৌ বাহিনীর প্রধান। তার নিয়ন্ত্রণে ২০০ নৌযান পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতির তীরে প্রস্তুত থাকত। যে সব নৌযান ইদ্রাকপুর কেল্লার নিয়ন্ত্রণে থাকত তা হলো কোষা, জলবা, গুরব, পারিন্দা, বজরা, তাহেলা, সলব, অলিল, খাটগিরি ও মালগিরি
আনুমানিক ১৮৪৫ সালের দিকে  ইদ্রাকপুর দূর্গে মহকুমার প্রশাসনের বাস ভবন ছিল। পরবর্তীতে এটা সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের আওতাভুক্ত করা হয়।
শুলপুরের গীর্জাঃ
মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার একটি জনবহুল এলাকা শুলপুর।সিরাজদিখান উপজেলার অন্তর্ভুক্ত  ৩ টি গ্রাম- শুলপুর, বড়ইহাজী, মজিদপুর নিয়ে গঠিত সাধু যোসেফের এই ধর্মপল্লী,যেখানেই অবস্থিত শুলপুরের এই গীর্জা।
ধারনা করা হয়, ১৭০০ সালের কাছাকাছি সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলের প্রথম দিকে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনের ফলে ঢাকা জেলার পার্শ্ববর্তী কিছু গ্রাম থেকে কয়েকজন ক্যাথলিক খ্রিস্ট ভক্ত শুলপুরে এসে বসবাস শুরু করে।
পরবর্তীতে ১৮৬২ খ্রীঃ ইট সুরকির গাথনি দিয়ে ও ছনের চাল যুক্ত ১ম গীর্জাটি স্থাপন করা  হয়। এরপর ১৯২২ খ্রীঃ টিনসেড  গীর্জা নির্মান হয়। এরপর ১৯৬২ খ্রীঃ গীর্জাটির পুনঃ সংস্কার করা হয়। পরবর্তীতে ১১ই এপ্রিল ১৯৯৭ খ্রীঃ আর্চবিশপ মাইকেল ডি রোজারিও বর্তমানের নব নির্মিত  গীর্জাটি তৈরি করেন।
এ ধর্মপল্লীতে বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ৪ হাজারের কাছাকাছি। খ্রিষ্টানধর্মালম্বী জনগণরা এখানে প্রার্থনা করে থাকেন। গীর্জাটি অত্যন্ত সুন্দর মনোরম পরিবেশে অবস্থিত।প্রতিবছর এখানে খ্রিস্টান ধর্মানুসারীরা বেশ জাকজমক যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন তথা বড়দিন উদযাপন করেন।সেখানে বড়দিনের বিশেষ প্রার্থনার পাশাপাশি গির্জা ও এর আশপাশে রঙিন বাতি জ্বালানো হয়। গির্জার প্রধান ফটকের বাইরে অস্থায়ী অনেক দোকানে বড়দিন ও ইংরেজি নতুন বছরের কার্ড, নানা রঙের মোমবাতি, ক্রিসমাস ট্রি, যিশুর মূর্তিসহ নানা জিনিস বিক্রি করে দোকানিরা। যিশুর অনুসারীরা ঘরেই তৈরি করেন প্রতীকী গোশালা। কেউ কেউ কেক কাটেন  আবার কেউ কেউ সাজান আলোকসজ্জিত ক্রিসমাস ট্রি। বর্তমানে শুলপুর চাচের্র ফাদার হচ্ছেন,টমাস কোড়াইয়া।
মুন্সিগঞ্জ আড়িয়াল বিলঃ
“মাথার উপর নীল আকাশ,নিচে টলটল করা স্বচ্ছ পানি, সে পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে কচুরিপানা,শাপলা,কলমি।পানির নিচে বিভিন্ন প্রজাতির দেশিয় মাছ।পাশেই জেলেরা জাল ফেলে মাছ ধরছে। চারপাশে তাকালে সবুজ আর সবুজ গাছ-গাছালি,ঝকঝকে রোদ,পাখিদের কিচিমিচি করা শব্দ।”
এই অংশটুকু পড়ার পর মনে হবে ছোট বেলায় চিত্রাংকন খাতায় আকা কোন গ্রামীন দৃশ্যের বিবরন দিচ্ছি।কিন্তু না,এই দৃশ্য কোন চিত্রাংকন খাতায় আকা চিত্র না,এই চিত্র হচ্ছে মুন্সিগঞ্জ আড়িয়াল বিলের।
বিশ্বাস না হলে, নিজেই চলে আসুন বর্ষার সময়, আড়িয়াল বিলে।ভ্রমনপ্রেমীদের জন্য প্রকৃতিতে হারিয়ে যাওয়ার রাজ্য হচ্ছে এই আড়িয়াল বিল৷
মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর,সিরাজদিখান উপজেলা ও ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলার বিস্তৃত জুড়ে রয়েছে এই আড়িয়াল বিল।ঢাকার সবচেয়ে বড় এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিল হচ্ছে আড়িয়াল বিল।এর আরেক নাম হচ্ছে চূড়াইন বিল।
আড়িয়াল বিলে রয়েছে অসংখ্য ডেঙ্গা,এগুলোকে মূলত বিশাল আকৃতির দীঘি যায়।সবচেয়ে বড় দীঘির নাম হচ্ছে সাগরদীঘি।এই দিঘীগুলোই হচ্ছে প্রাকৃতিক মাছের আবাস্থল।এখানে নানা প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়,তবে এই মাছগুলো বেড়ে উঠে প্রাকৃতিক নিয়মেই।
বর্ষাকালে বিল এর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে শাপলার রাজত্ব।নদী ভ্রমনের একটা বেস্ট  জায়গা হচ্ছে আড়িয়াল বিল।ভ্রমন করতে করতে করতে হাত -পা ভেজানো যাবে বিলের স্বচ্ছ পানিতে,কানের পিঠে শাপলা গুজে ছবি তোলা যাবে।মাঝেমধ্যে ডেঙ্গায় নেমে হাটাচলাও করা যাবে।
আবার বর্ষা শেষ হয়ে গেলে শীতে আসলে পাওয়া যাবে তরতাজা বিলের মাছ,শীতের শেষে বিলের শুকনো অংশে যতদূর চোখ যাবে,দেখা যাবে পাকা মিষ্টি কুমড়া।যেনো ষড়ঋতুর প্রতিটা ঋতুই নিজের মত ধারন করে রাখে আড়িয়াল বিল।
 ষোলআনী সৈকতঃ
 ষোলআনী সৈকত মুন্সিগঞ্জ জেলার, গজরিয়া উপজেলায় অবস্থিত।এই সৈকতটি মূলত ষোল আনী প্রজেক্ট নামেই পরিচিত।এছাড়াও সৈকতটি যে স্থানে অবস্থিত তা একসময়  দৌলতপুর নামে পরিচিত ছিলো।
এখন বর্তমানে এটি ষোল আনী সৈকত নামেই সর্বাধিক পরিচিত। মেঘনা নদীর পাড় ঘেঁষেই ষোলআনী সৈকত এর জন্ম।
মূলত নদী ভাঙ্গন রোধে নদীর পাড়ে সিসি ব্লক দিয়ে একটি বাধ নির্মাণ করা হয়।আর এই বাধ নির্মানের ফলে জায়গাটির সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়।ফলে ধীরে ধীরে এখানে জনসমগম শুরু হয় সৈকত দেখার জন্য।একটা সময় প্রকৃতিপ্রেমীদের এবং পর্যটনদের কাছে দর্শনীয় স্থান হিসেবে বেশ পরিচিত হয়ে উঠে স্থানটি।
সৈকতে গেলেই চোখে পরবে অপরূপ দৃশ্য।ঢেউয়ের উত্তাল নৃত্য,নদীর পাড়ের প্রশান্তিময় মুক্ত বাতাস,সৈকতের মাথার উপরে বিস্তৃত মগ্ধ করা আকাশ। চাইলে নৌকায় চরেও সৈকতে ঘুরে আসা যায়।সৈকতের ঠান্ডা পানিতে মনও দেহ ভেজানো যাবে,একই সাথে যাবে সৈকতের পাশের বালুর মাঠটিতে বসে সময় কাটাতে।কারন,শুস্ক মৌসুমে সৈকত থাকে বালুকাময় । সৈকতের সবচেয়ে চমৎকার দৃশ্য হচ্ছে  সূর্যাস্তের সময়টা।সৈকতে এসে এই দৃশ্য নআ দেখাটাই বৃথা।
প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য দারুন  উপভোগের স্থান হচ্ছে এই ষোলআনী  সৈকত।
ADVERTISEMENT

এই বিভাগ থেকে আরও পড়ুন

বিবিধ

মারাত্মক ক্ষতি হয় পকেটে মোবাইল ফোন রাখলে

বাঁশখালী বেলগাঁও চা বাগান
বিবিধ

বাঁশখালী বেলগাঁও চা বাগান

আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েও পাল্টেনি টাংগাইলের ঐতিহ্যবাহী খাবার
বিবিধ

আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েও পাল্টেনি টাংগাইলের ঐতিহ্যবাহী খাবার

রাত জেগে পুরুষরা গুগলে যা খোঁজেন
বিবিধ

রাত জেগে পুরুষরা গুগলে যা খোঁজেন

প্রথম বারের মতো দেশে এবং বিদেশে পালিত হতে যাচ্ছে “শেখ রাসেল দিবস-২০২১”
বিবিধ

প্রথম বারের মতো দেশে এবং বিদেশে পালিত হতে যাচ্ছে “শেখ রাসেল দিবস-২০২১”

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার বড়বিলা পদ্মবিল ও এর সম্ভাবনা
বিবিধ

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার বড়বিলা পদ্মবিল ও এর সম্ভাবনা

Load More
ADVERTISEMENT

ট্রেন্ডিং টপিক

মোবাইল অপারেটররা ইন্টারনেটের দাম না কমালে সরকার কঠোর হবে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
টেলিকম

মোবাইল ইন্টারনেটে খরচ কমতে পারে

এখনো পদ্মা জন্য মোবাইল রিচার্জে কাটছে টাকা
টেলিকম

এখনো পদ্মা জন্য মোবাইল রিচার্জে কাটছে টাকা

অনলাইন কেনাকাটা খরচ বড়ছে
ই-কমার্স

অনলাইন কেনাকাটা খরচ বড়ছে

রূপপুরে প্রথম ইউনিটের সঞ্চালন লাইন চালু
নির্বাচিত

রূপপুরে প্রথম ইউনিটের সঞ্চালন লাইন চালু, জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বিদ্যুৎ

সপ্তাহের সবচেয়ে পঠিত

২০২৫ সালে কম দামে ভালো মোবাইল: আপনার বাজেটের মধ্যে সেরা অপশন

২০২৫ সালে কম দামে ভালো মোবাইল: আপনার বাজেটের মধ্যে সেরা অপশন

২০২৫ সালে সেরা ১০টি বাজেট স্মার্টফোন (১৫ হাজার টাকার নিচে)

২০২৫ সালে সেরা ১০টি বাজেট স্মার্টফোন (১৫ হাজার টাকার নিচে)

রাউটারের সংকেত দুর্বল? রেঞ্জ বাড়াবেন যেভাবে

রাউটারের সংকেত দুর্বল? রেঞ্জ বাড়াবেন যেভাবে

বাজেট ২০ হাজার টাকায় সেরা ১০ স্মার্টফোন ২০২৫: ফিচারেই চমক!

বাজেট ২০ হাজার টাকায় সেরা ১০ স্মার্টফোন ২০২৫: ফিচারেই চমক!

ADVERTISEMENT

সর্বশেষ সংযোজন

গিগাবাইট জেড৮৯০ মাদারবোর্ডে যুক্ত হলো ইন্টেলের ২০০এস বুস্ট প্রযুক্তি
প্রযুক্তি সংবাদ

গিগাবাইট জেড৮৯০ মাদারবোর্ডে যুক্ত হলো ইন্টেলের ২০০এস বুস্ট প্রযুক্তি

গেমার ও পারফরম্যান্সপ্রেমীদের জন্য বড় সুখবর এনেছে হার্ডওয়্যার...

এএফসি বাছাইপর্বে বাংলাদেশ বনাম সিঙ্গাপুর ম্যাচের টাইটেল স্পন্সর টেকনো

এএফসি বাছাইপর্বে বাংলাদেশ বনাম সিঙ্গাপুর ম্যাচের টাইটেল স্পন্সর টেকনো

স্মার্টফোন সুরক্ষিত রাখতে ৯ বিষয়ে নজর রাখুন

স্মার্টফোন সুরক্ষিত রাখতে ৯ বিষয়ে নজর রাখুন

ম্যাকওএসের পরবর্তী সংস্করণের নাম ফাঁস

ম্যাকওএসের পরবর্তী সংস্করণের নাম ফাঁস

মাসের সবচেয়ে পঠিত

বাংলাদেশে স্মার্টফোনপ্রেমীদের মন জয় করল স্যামসাং গ্যালাক্সি A06

বাংলাদেশে স্মার্টফোনপ্রেমীদের মন জয় করল স্যামসাং গ্যালাক্সি A06

২০২৫ সালে কম দামে ভালো মোবাইল: আপনার বাজেটের মধ্যে সেরা অপশন

২০২৫ সালে কম দামে ভালো মোবাইল: আপনার বাজেটের মধ্যে সেরা অপশন

২০২৫ সালে সেরা ১০টি বাজেট স্মার্টফোন (১৫ হাজার টাকার নিচে)

২০২৫ সালে সেরা ১০টি বাজেট স্মার্টফোন (১৫ হাজার টাকার নিচে)

ভিভো স্মার্টফোন দাম বাংলাদেশ

২০২৫ সালে Vivo’র সেরা ৫টি স্মার্টফোন

ADVERTISEMENT
Facebook Twitter Instagram Youtube
Techzoom.TV

টেকজুম প্রথম বাংলা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক ২৪/৭ মাল্টিমিডয়া পোর্টাল। প্রায় ১৫ বছর ধরে টেকজুম বিশ্বস্ত ডিজিটাল মিডিয়া প্রকাশনা হিসেবে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং ফিনটেক সংক্রান্ত নানা বিস্তৃত বিষয় কভার করেছে। এটি বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে ডিজিটাল মিডিয়া প্রকাশনাটি। বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদক ও প্রকাশক:

মো. ওয়াশিকুর রহমান

অনুসরণ করুন

যোগাযোগ

নিউজরুম
+88016 777 00 555
+88016 23 844 776
ই-মেইল: [email protected]

সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং
+88017 98 07 99 88
+88017 41 54 70 47
ই-মেইল: [email protected]

স্বত্ব © ২০২৪ টেকজুম | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed and Maintained by Team MediaTix

No Result
View All Result
  • সর্বশেষ
  • প্রযুক্তি সংবাদ
  • টেলিকম
  • অটো
  • ফিচার
    • সোশ্যাল মিডিয়া
    • কিভাবে করবেন
  • শিক্ষা ও ক্যাম্পাস
  • অর্থ ও বাণিজ্য

স্বত্ব © ২০২৪ টেকজুম | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Developed and Maintained by Team MediaTix