জিলাপি জনপ্রিয় একটি মিষ্টান্ন, জিলাপির ইতিহাস অনেক পুরোনো। ভারতীয় উপমহাদেশে জিলাপির প্রচলন শুরু হয় তুর্কিদের হাত ধরে।বর্তমানে এই মিষ্টান্নের নাম জিলাপি হলেও ১৫শ শতকের দিকে ভারতে জিলাপিকে কুন্ডুলিকা বলা হতো। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল বাংলাদেশে জিলাপি বেশ জনপ্রিয় একটি মিষ্টান্ন হিসেবে পরিচিত।
আমাদের দেশে রোজা, পহেলা বৈশাখ ও পূজা পার্বনের সময় জিলাপিকে মিষ্টান্ন হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয়।বিশেষ করে রোজার সময় জিলাপি না হলে যেনো ইফতারের থালায় খাবার পূর্ণ হয়না।ময়মনসিংহের জিলাপি মিষ্টান্ন হিসেবে পরিচিত একটি নাম।
ময়মনসিংহের মানুষের কাছে মজাদার জিলাপি বলতে জিলা স্কুল মোড়ের হোটেল মেহেরবানের টক জিলাপি পরিচিত। গরম গরম জিলাপি যারা খায় তারাই এর স্বাদ ভুলতে পারে না।রোজায় সময় তো প্রতিটি ঘরে ঘরেই এই জিলাপির কদর রয়েছে।তবে এই হোটেলে সারাবছরই এই জিলাপি তৈরি করা হয় আর চাহিদাও রয়েছে অনেক।
যদি হঠাৎ করে কোনো ব্যক্তি না জেনে এই জিলাপি খায় তাহলে তখন সেই ব্যক্তি বুঝতে পারবে না আসলে এই জিলাপি কেনো টক লাগে। আবার যারা না জানেন তারা সবসময় বলেন জিলাপি হবে মিষ্টি তাহলে টক কেনো? আসলে এই জিলাপি একবার মুখে দিলে এর স্বাদ মুখে লেগে থাকে।
আসলে হোটেল মেহেরবানে তিন দশক দরে তৈরি করা হয় এই জিলাপি। মোহাম্মদ জাকির হোসেন নামক ব্যক্তি ত্রিশ বছর আগে জিলাপির কাজ শুরু করেন। তিনি যখন জিলাপি তৈরি করে বিক্রি করতেন প্রায় দিনই জিলাপি তৈরির উপকরণ থেকে যেতো। তখন তিনি সেই উপকরণ সারাদিন শেষে নষ্ট হবে বলে বাড়ি ফিরে তেতুলের টক মিশিয়ে জিলাপি তৈরি করে নিজের পরিবার ও পরিচিতদের দিতেন। তখন থেকে প্রতিটা মানুষ এই জিলাপির প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করতে থাকে এবং সকলে খুব মজা হয় বলে মতামত দিতো।
তখন থেকে তিনি হোটেল মেহেরবানে টক জিলাপি বানিজ্যিক ভাবে বানানো শুরু করেন। এই জিলাপি চালের গুড়া,মাষকলাইয়ের ডাল,চিনি, তেতুলের টক মিশিয়ে তৈরি করা হয়।
হোটেল মেহেরবানের টক জিলাপি ময়মনসিংহের মানুষের কাছে এতোটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে রোজার সময় অন্যান্য জিলাপির দোকানগুলোও টক জিলাপি তৈরি করে। হোটেল মেহেরবানে টক জিলাপি সারাবছর পাওয়া যায়। এর পরিচিতি এতোটাই ছড়িয়ে যে আশে পাশের উপজেলা থেকে মানুষ শহরে আসলে এই জিলাপি প্রিয়জনদের জন্য নিয়ে যান।
ময়মনসিংহের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে এই পণ্য একটি সম্ভাবনাময় পণ্য। তবে শুধু ময়মনসিংহ শহরের মধ্যেই ডেলিভারি করা সম্ভব,তবে ডেলিভারি কোম্পানিগুলো দ্রুত সার্ভিস দিতে পারলে এই পণ্যটি হতে পারে সম্ভাবনাময় পণ্য এবং সারাদেশে পৌঁছে যেতে পারে এই জিলাপির স্বাদ। এর চাহিদা বাড়লে শুরু রোজার সময় অন্যান্য জিলাপির দোকানেও সারাবছর তৈরি হবে এই মিষ্টান্ন।ময়মনসিংহের শিক্ষিত উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে প্রচার করার জন্য। বেশী বেশী মিডিয়া কভারেজ দরকার এবং অডিও ও ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে পারলে সহজেই ই-কমার্সের মাধ্যমে পরিচিতি পেতে পারে ময়মনসিংহের টক জিলাপি।