মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান,লৌহজং,শ্রীনগর উপজেলা সবসময়েই চাষাবাদের জন্য বেশ উপযুক্ত। তবে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলাও কোন অংশে পিছিয়ে নেই।
সদর উপজেলায় উৎপাদিত হয় জেলার সবচেয়ে জনপ্রিয় মিষ্টি পান।অনেকে এটাকে চালতা পান হিসেবেও চিনে।
এই পানের বিশেষত্ব হচ্ছে, এই পানের বোটা তুলনামূলক একটু ছোট। তাছাড়া এর পরিধিও ছোট এবং পানটি অনেক পুরু হয়ে থাকে। দেখতেও অনেকটা ভালো দেখতে দেখা যায়। এই জাতের পানকে বলা হয় চালতা পান।এই পান দেশের অন্যান্য জেলায় খুব একটা দেখা যায় না।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজার রামপাল, পঞ্চসার, বজ্রযোগিনী,দেওভোগ, বৈখর ও রনছ এলাকায় সবচেয়ে বেশি পান চাষ হয়।এখানে গেলেই দেখা যাবে পানের বুরোজ।এসব এলাকার উৎপাদিত পান বিক্রি হয় মুন্সীরহাট, ধলাগাঁও বাজার, বেতকার হাট ও মুন্সীগঞ্জ বাজারসহ পার্শবর্তী জেলা নারায়নগঞ্জ সহ বিভিন্ন পাইকারী হাটে।
৮০টি পান একত্রে করে এক বিরা হিসেবে পানের হিসাব করা হয়।আবার ৮০ বিরায় একত্রে মিলে হয় এক গাদি।এই বিরা এবং গাদি হিসেবেই পান বিক্রি করা হয়।বর্তমান(২০২১ সাল) বাজারে বড় সাইজের একগাদি পান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬ হাজার টাকায়। আর ছোট এবং মাঝারি সাইজের একগাদি পানের দাম পাচ্ছে পানচাষিরা সাড়ে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকার মতো।
মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলায় ও মোটামুটি পান চাষ হয়।আগে বেশ জমজমাট ছিলো এই উপজেলার পান চাষ।তবে পান গাছের সঠিক যত্ন,সঠিক রিকল্পনা,অর্থের অভাব,বিশেষজ্ঞদের অভাবে অনেকটাই থেকে গেছে এই উপজেলার পান চাষ।মিষ্টি পানের চাষ কেবল টিকে আছে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলাতেই।
তাছাড়া,পান চাষ এবং বেড়ে ওঠা নির্ভর করে আবহাওয়ার উপর।গত বছর(২০২০ সাল) আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ব্যাপক পান চাষ হয়েছে মুন্সিগঞ্জ সদরে,প্রায় তিনশত চাষী জড়িত আছেন পান উৎপাদের সাথে।এই সকল পান বিদেশে রপ্তানি হলেও,করোনার কারনে এবার থেমে গেছে মুন্সিগঞ্জ জেলার পানের রপ্তানি।তবে বিদেশে রপ্তানি থেমে গেলেও ই-কমার্স সেক্টরে এর ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।যেহেতু দেশের বাকি জেলায় এই মিষ্টি বা চালতা পানের খুব একটা চাষাবাদ নেই।চাইলের এই ভীন্নধর্মী পানকে উপস্থাপন করা যায় অনলাইন সেক্টরে।যা একই সাথে পানের উৎপাদন বাড়াবে,প্রান্তিক পর্যায়ের চাষীরা লাভবান হবে এবং ই-কমার্স সেক্টরে মুন্সিগঞ্জের পণ্য হিসেবে চালতা পান বেশ পরিচিতি তৈরি করবে।