লক্ষ্মীপুর জেলার রপ্তানি পণ্যের মধ্যে নারিকেল অন্যতম, এটি মেঘনা তীরবর্তী উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরে ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হয়, এটি এই বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার মত লেনদেন হয়েছে। এই জেলায় নারিকেল বাগান আছে ২ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে।
এর মধ্যে সদরে ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর, রামগঞ্জে ৫১০ হেক্টর, রায়পুরে ৩৬৫ হেক্টর, কমলনগরে ৩৫০ হেক্টর, রামগতিতে ১৬০ হেক্টর জমিতে বাগান রয়েছে। এই মৌসুমে সাড়ে ৫ কোটি পিছের বেশি নারিকেল বিক্রি হয়েছে। যার বাজার দর বর্তমানে শতকোটি টাকার বেশি, তাছাড়া ১০ কোটি টাকার মত নারিকেল ছোবড়া বিক্রি হবে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ধারনা করছে৷
এই জেলা থেকে নারিকেল, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, ভৈরব, ময়মনসিংহ, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, ফরিদপুর, বাগেরহাট সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা নিয়ে থাকেন। সবচেয়ে বড় বাজারগুলো হলো, রায়পুর,দালাল বাজার, চন্দ্রগঞ্জ বাজার, মান্দারূ, রামগঞ্জ, রামগতির আলেকজান্ডার, কমল নগরের হাজিরহাট।
বাংলাদেশ নারিকেল উৎপাদনে ১৩ তম, এই দিক দিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা অনেককাংশে নারিকেল যোগান দিয়ে থাকেন।
এটা বিশ্বের একটি অন্যতম দরকারী গাছ এবং এটিকে প্রায়ই “জীবনের গাছ” হিসাবে উল্লেখ করা হয়।
এটি মানুষ খাদ্য, জ্বালানী, প্রসাধনী, ভেষজ ঔষধ সরবরাহ, দালান নির্মান সামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করে এবং এর রয়েছে আরও নানাবিধ ব্যবহার।
এর পরিণত বীজের ভিতরের মাংস, পাশাপাশি এটি থেকে উত্তোলিত নারকেল দুধ ; গ্রীষ্মমন্ডলীয় ও উপগ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের বহু লোকের ডায়েটের নিয়মিত অংশ।
নারিকেল অন্যান্য ফল থেকে আলাদা কারণ তাদের এন্ডোস্পার্মে প্রচুর পরিমাণে স্বচ্ছ তরল থাকে যার নাম নারিকেল জল বা নারকেল রস বা নারিকেলের দুধ। পরিপক্ব নারকেল ভোজ্য হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে ।
এর বীজের ভিতরের মাংস ও দুধ থেকে প্রক্রিয়াজাতকৃত তেল ; শক্ত খোল থেকে কয়লা, এবং ছোবড়া থেকে কোকোপিট তৈরি হয়।
এর শক্ত বহিরাবরন,ছোবড়া এবং লম্বা পাতা বিভিন্ন জিনিস ও সাজসজ্জা তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় ।
এর থেকে প্রাপ্ত তেল এবং দুধ সাধারণত রান্নায় ব্যবহৃত হয় – বিশেষ করে কোনোকিছু ভাজায় ; পাশাপাশি সাবান এবং প্রসাধনীও তৈরি হয়।
সমাজে নারকেলের সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় তাৎপর্য রয়েছে, বিশেষত ভারতে, যেখানে এটি হিন্দু আচারে ব্যবহৃত হয়। এটা হিন্দু ধর্মে বিবাহ ও পূজা অনুষ্ঠানের ভিত্তি তৈরি করে,ভিয়েতনামের এক ধর্মের নামই নারকেল ধর্ম এবং বিভিন্ন পুরাণে নারিকেলের কথা পাওয়া যায়। পরিপক্ব নারকেল দ্বারা মৃত্যুও হতে পারে।
নারিকেল হাজার বছর ধরে মানুষ ব্যবহার করে আসছে এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা তাদের বর্তমানে বিশাল পরিসরে ছড়িয়ে পড়েছে।
নারিকেলের প্রথম উৎস কোথায় তা নিয়ে বিতর্কিত তত্ত্বগুলি উল্লেখ করে যে এটি এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপে প্রথম উৎপন্ন। গাছগুলি ৩০ মিটার (৯৮ ফুট) পর্যন্ত লম্বা হয় এবং প্রতি বছর ৭৫ টি পর্যন্ত ফল হতে পারে, তবে সাধারণত ৩০ টির মত ফল হয়।
এর গাছের ঠান্ডা আবহাওয়া অসহিষ্ণু । প্রচুর বৃষ্টিপাত ও পাশাপাশি পুরো সূর্যালোক এর পছন্দ। অনেক পোকা ও কীটপতঙ্গ এর বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য একটি উপদ্রব হয়ে দাঁড়ায়। প্রায় ৭৫% বিশ্বের নারিকেল সরবরাহ সরবরাহ ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন এবং ভারত।