কাশফুল মানেই শুভ্রতা ও সৌন্দর্যের প্রতীক। সাদা রং এর এই ফুল যেকোন বয়সী মানুষের কাছেই দৃষ্টিনন্দন এক অসাধারণ ফুল হিসেবে পরিচিত।চট্টগ্রাম জেলার অক্সিজেন এর অনন্যা আবাসিক এলাকায় কাশফুলের দিগন্তজোড়া বিস্তরণ রয়েছে। কাশফুলের এ রাজ্যে একবার গেলে মন প্রকৃতির ছোঁয়ায় হারাতে বাধ্য।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক দিয়ে পাহাড়ে ঘেরা বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি।
কাশফুল প্রকৃতিপ্রেমী সকলের কাছেই প্রিয়।তাছাড়া ফুল হলো পবিত্রতার প্রতীক। কাশফুলের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতে ও প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে অসংখ্য দর্শনার্থীরা ভীড় জমায় এ স্থানে।কাশফুলের স্নিগ্ধ সৌন্দর্যে চোখ জুড়িয়ে যায় এ স্থানে ভ্রমণ করলে।
এখানকার বিস্তৃত মাঠে বেশ ঘনসন্নিবেশিত ভাবে কাশফুলের সমারোহ রয়েছে। এ যেন সৃষ্টিকর্তার অপার দান।দুপাশে কাশবন মাঝের সরু রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে নিজেদের স্বপ্ন বুনেন অনেকে,আবার অনেকেই বা কাশফুল কেটে হাতে নিয়ে তার কোমলতা অনুভব করেন।
কাশবনে হাঁটতে গিয়ে ক্লান্ত অনুভব করে অনেকেই মাঠে বসে গল্পগুজব করে থাকেন।পাশে আইসক্রিম, ঝালমুড়ি, ফুচকা,চটপটি, হাওয়াই মিঠাই এর ভ্যান থাকে যা থেকে ছোটো বড় সকলেই খাবার কেনাকাটা করে খেয়ে থাকেন।বিকেলে অনন্য এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজমান থাকে এ স্থানে।
সকলেই পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসেন, কাশফুলের সৌন্দর্য দেখে নিজেদের মনে প্রশান্তি এনে থাকেন।চারিদিকের মনোরম সুন্দর পরিবেশ দেখা যায় বলে চোখ জুড়ানো এই অনন্যা আবাসিক এসে মন ভালো হতে বাধ্য।অনেকেই কাশফুলের সাথে সুমধুর এ স্মৃতি ক্যামেরাবন্দী করতে ব্যস্ত থাকেন।নিজস্ব গাড়ি কিংবা বাইক সহযোগে এ স্থান ভ্রমণে আসেন অনেকেই।
কাশফুলের অনন্য এই রাজ্যে যেদিকেই চোখ যায় শুধু সাদা রং এর শুভ্রতায় ঘেরা চারিদিকে কাশফুল চোখে পড়ে।
চলুন কাশফুল সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে রাখি-
কাশফুল হলো বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ।
এর বৈজ্ঞানিক নামঃ Saccharum sponteneum
এটি উচ্চতায় প্রায় ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।
কাশফুল মূলত ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ।
কাশফুল শরৎ ঋতুর বিশেষত্ব হিসেবে আমাদের সামনে প্রস্ফূটিত হয়।সাধারণত ভাদ্র -আশ্বিন এ দুই মাস মিলে শরৎকাল। আশ্বিন মাসের শেষ থেকে কাশফুলের সৌন্দর্য ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে।তখন রোদে কাশফুলের শ্বেতশুভ্র রং হলুদ হয়ে কোমলতা হারিয়ে ধারালো হয়ে যায় দুই পাশ।সে থেকে বোঝা যায় যে,শরৎ বিদায় নিয়ে হেমন্তের পরশ প্রকৃতিকে ছুঁয়ে দিচ্ছে। এভাবে এক এক করে ছয় ঋতু আমাদের প্রকৃতিকে অপরুপ রুপে সাজিয়ে তুলছে।
কাশফুলের বাগানে ফাঁকে ফাঁকে ঘাসেরও দেখা মিলে এ বনে।চর,নদীর তীর,পাহাড় কিংবা শুকনো এলাকায় কাশফুল বেশি জন্মে সাধারণত।
রোমানিয়ায় উৎপত্তি হওয়া এ কাশফুল অনন্যা আবাসিক এলাকায় বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যের সাক্ষী হওয়ার জন্য প্রত্যেক মানুষেরই একবার করে সৌন্দর্য দেখতে যাওয়া উচিত। মন খারাপ থাকলে ভালো হতে বাধ্য এমন পরিবেশে ঘোরাঘুরির ফলে।তাছাড়া অসুস্থতা থেকে সেরে উঠে সকলেরই একবার করে অনন্যা আবাসিক কাশবনে যাওয়া উচিত,এতে মানসিক স্বস্তি পাওয়া যায়।
চারপাশে সবুজ ঘাসের উপর ফুটে থাকা সাদা রং এর কাশফুল চোখ, মন দুটোকেই প্রশান্তি দেয়।ছুটির দিনে রং বেরং এর পোশাকে ছোটো,বড়, বৃদ্ধ সব বয়সী দর্শনার্থীরা এখানে ভীড় জমায়।
চট্টগ্রাম জেলার প্রচুর দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অসাধারণ সৌন্দর্যের অনন্যা আবাসিক নামক এই স্থান টি চট্টগ্রাম জেলার অক্সিজেন মোড় থেকে পূর্ব দিকে দুই কিলোমিটার পরে অবস্থিত।নগরীর এভারকেয়ার হাসপাতাল এর পাশেই এটি অবস্থিত। ২ নাম্বার গেইট মোড় থেকে সরাসরি সিএনজি সহযোগে গেলে খুব একটা সময় লাগেনা যেতে।তাছাড়া চকবাজার ওয়ালীবেগ খাঁ মসজিদ মোড় থেকে ও মুরাদপুর থেকে বাস ও টেম্পু তে অক্সিজেন মোড় নেমে তারপর অনন্যা আবাসিক এলাকায় পৌঁছাতে পারবেন নিরাপদে।
ফারজানা ফাতেমা।