ফেসবুকে দেশি পণ্যের ই-কমার্স গ্রুপ গুলোতে চলছে ’দেশি শাড়ি ওয়েভ’। গত ২৭ নভেম্বর (শনিবার) দেশি শাড়ির গ্রুপ ’পরিধান শৈলী’তে লাইভে আসেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি হয় রাজিব আহমেদ। এসময় তিনি ১লা ডিসেম্বর থেকে ৭ই ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশি শাড়ির ওয়েভের ঘোষণা দেন। ওয়েভে ছড়িয়ে পরেছে ২৫০ টিরও বেশি ফেসবুক গ্রুপে। গ্রুপ গুলোর এডমিনদের মন্তব্য তোলে ধরা হচ্ছে ধারাবাহিক প্রতিবেদনে। গ্রুপ গুলোর এডমিনদের সাথে কথা বলে ধারাবাহিক প্রতিবেদন লিখছেন মোঃ দেলোয়ার হোসেন।এটি প্রথম পর্ব :
কাকলী তালুকদার স্বত্বাধিকারী কাকলী’স এট্যায়ার
শ্রদ্ধেয় রাজীব আহমেদ স্যার ১লা ডিসেম্বর থেকে ৭ই ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশীয় শাড়ির ওয়েভ ঘোষণা করেছেন। এরফলে নিত্য নতুন দেশীয় শাড়ি সম্পর্কে জানতে পারছি। বিগত বছরগুলোতে দেখে এসেছি রাজিব আহমেদ স্যার দেশীয় পণ্য নিয়ে যে সব ওয়েভ তোলেছিলেন সবগুলো সফল! তবে এইবারের দেশীয় শাড়ির ওয়েভ অন্যতম। কারণ এই ওয়েভে শুধু শাড়ি নিয়ে কাজ করা উদ্যোক্তারাই নয়, বরং অংশগ্রহণ করেছেন সর্ব শ্রেনীর মানুষজন এবং দেশি পণ্যের ছোট গ্রুপ গুলো।
নিগার ফাতেমা স্বত্বাধিকারী আরিয়া’স কালেকশন।
প্রাক্-শিল্পবিপ্লব যুগে বাংলাদেশ ছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম বস্ত্রশিল্প কেন্দ্র। অনেক বছর আগ থেকেই এদেশ বস্ত্রশিল্পের বুনিয়াদ গড়ে ওঠে। ই-কমার্সের কল্যাণে দেশীয় শাড়ীর প্রচার বেড়েছে। দেশীয় শাড়ির ওয়েভে ছোট ছোট ফেসবুক গ্রুপ গুলো এগিয়ে আসাতে শাড়ির নাম ও উৎপত্তির পাশাপাশি জেলার নামও জানা যাচ্ছে। দেশীয় শাড়ির প্রচারের মাধ্যমেই বাংলার তাঁত শিল্প আরো বেশি সমৃদ্ধ হবে।
উম্মে সাহেরা এনিকা স্বত্বাধিকারী তেজস্বী।
ফেসবুকে দেশীয় পণ্যের ২৫৮ টি গ্রুপে সপ্তাহ ব্যাপী দেশীয় শাড়ি ওয়েভ পালন করছে৷ এই ওয়েভের ফলে আমাদের ’তেজস্বীদের গল্প’ নামক গ্রুপে প্রায় ৯৫% পোস্ট আসছে দেশীয় শাড়ির নিয়ে। যা দেশীয় শাড়ির প্রচার ও প্রচারণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে৷ সব কিছুর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর প্রতিষ্ঠা সভাপতি রাজিব আহমেদ স্যারের প্রতি৷
সিরাজুম মুনিরা স্বত্বাধিকারী আবায় স্টোরি।
দেশীয় শাড়ির ওয়েভ এর মাধ্যমে যে শিক্ষা পেয়েছি তা হচ্ছে, সম্মেলিত প্রচেষ্টায় যেকোন সেক্টর কে শূণ্য থেকে সাফল্যে নেওয়া যায়। যা একক ভাবে সম্ভব নয়। ফেসবুকের এই ওয়েভের ফলে হয়তো কোটি মানুষের নজরে আসবে এবং ভালো লাগবে দেশি শাড়ি।
রাকিমুন বিনতে মারুফ জয়া স্বত্বাধিকারী পরিধান শৈলী।
ই-ক্যাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শ্রদ্ধেয় রাজিব আহমেদ স্যারের ঘোষিত দেশি শাড়ির ওয়েভে ২৫০ টিরও বেশি ফেসবুক গ্রুপ অংশ নিয়েছে। আমি মনে করি ভার্চুয়াল এই ওয়েভের মাধ্যমে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে দেশি শাড়ির একটি নতুন দাড়ঁ উন্মুক্ত হলো। এই ওয়েভে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশি শাড়ির প্রয়োজনীয় কন্টেন্ট তৈরি হচ্ছে, যা দেশি শাড়ির যথাযথ প্রচার ও জনপ্রিয়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সালমা নেহা স্বত্বাধিকারী টেস্টবিডি।
শ্রদ্ধেয় রাজিব আহমেদ স্যারের হাত ধরেই প্রথম শুরু হয়েছিল দেশি পণ্যের ওয়েভ। এ ধরণের ওয়েভের ফলে পন্যের প্রচার ও প্রসার বাড়ে বহুগুন। উদাহরণ হিসেবে জামদানী ওয়ে কথা বলা যায়। তারই ধারাবাহিতকায় পহেলা ডিসেম্বর থেকে সপ্তাহ ব্যাপী চলছে দেশীয় শাড়ির ওয়েভ। এতে দেশি শাড়ির ক্রেতা-বিক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা অংশ নিয়েছে।
মোঃ রবিউল ইসলাম রবি স্বত্বাধিকারী বাঙালিয়ানা।
দেশিয় পণ্যের অগ্রযাত্রায় ব্যতিক্রম ও সময়োপযোগী বিস্ফোরণের প্রয়োজন ছিলো। রাজীব আহমেদ স্যারের ডাকে দেশিয় শাড়ির ওয়েভ দিয়ে সেই বিস্ফোরণটা হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। এই ওয়েভে দেশি শাড়ি নিয়ে অগণিত পোস্ট আসতেছে ফেসবুকে। ইন্টারনেটে তথ্য সমৃদ্ধ হওয়ার পাশপাশি দ্রুত গতিতে প্রচার হচ্ছে। এই ওয়েভ থেকে দেশিয় শাড়ির প্রচারের দায়িত্বটা আমাদের নিতে হবে এবং নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে।
শামীমা নাসরিন স্বত্বাধিকারী সুতোর পরশ।
শাড়ির সাথে বাঙালি নারীর যে আবেগ জড়িয়ে আছে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। শ্রদ্ধেয় রাজীব আহমেদ স্যারের ঘোষণায় অংশ নেওয়ার ২৫৮ টি গ্রুপের মধ্যে ’সুতোর পরশ’ একটি। এ ওয়েভের ফলে দেশিয় শাড়ির ব্যাপক প্রচার হচ্ছে। এটা কোন সেলের ওয়েভ না, প্রচারের ওয়েভ। সবাই নিজের মতো করে দেশের ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছে। এই ওয়েভের অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত।
রোকসানা আক্তার পপি স্বাত্বাধিকারী ইপ্পি শপিং।
দেশীয় শাড়ির ওয়েভের সাথে আমার আবেগ মিশে গিয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলার তাঁতীদের তৈরি গুণগত মান সম্পন্ন শাড়ি গুলো প্রচারের অভাবে পিছিয়ে ছিলো। অনেক শাড়ি নিজের শোভা হাড়িয়ে ফেলেছিলো, ওয়েভে দেখতে পাচ্ছি সেইসব শাড়িও। এই ওয়েভের ফলে হাজার হাজার পোস্ট এ ছেঁয়ে গেছে ফেসবুক। খুব স্বাভাবিকভাবেই পৌঁছে গেছে লক্ষাধিক প্রোফাইলে আর আগ্রহের বেড়েছে দেশি শাড়ির৷ এতে বড় হচ্ছে দেশীয় শাড়ির বাজার। যার সুফল আমরা দেখতে পাবো ভবিষ্যতে৷
খাতুনে জান্নাত আশা স্বাত্বাধিকারী পিয়াসী।
দেশীয় শাড়ির প্রচারণায় প্রধান অন্তরায় ছিল পর্যাপ্ত তথ্য এবং কন্টেন্টের অভাব। রাজীব আহমেদ স্যারের সহযোগীতায় পরিধান শৈলী থেকে শুরু হওয়া দেশীয় শাড়ি সপ্তাহ রূপ নিয়েছে ওয়েভে। যা দেশীয় শাড়ি সম্পর্কিত তথ্যের ঘাটতি দূর করেছে। ২৫৮ টির বেশি ফেসবুক গ্রুপে পালিত হচ্ছে এই ওয়েভ। সেলিব্রিটিরাও অংশ নিয়েছে ওয়েভে। এতে নাম না জানা দেশীয় শাড়িগুলোও পরিচিতি পাচ্ছে। যা চাহিদা তৈরীর মাধ্যমে কয়েকশত কোটি টাকার বাজার তৈরী করছে।
মিতা পাল যুথী স্বত্বাধিকারী নীল মৃত্তিকা।
’নীল মৃত্তিকা’ গ্রুপের এডমিন, মডারেটর ও সদস্যদের দেশি শাড়ির ওয়েভে উৎসাহিত করেছি। বছরের শুরু থেকে রাজীব আহমেদ স্যার ছোট গ্রুপ গুলোর প্রতি জোড় দিয়েছিলেন। তার ই ফল স্বরূপ এতোগুলো গ্রুপে একযোগে দেশীয় শাড়ির প্রচার হচ্ছে। গ্রুপের মাধ্যমে দেশীয় শাড়ির প্রচার করা সহজ হয়েছে। দেশীয় পণ্যের যেকোন ওয়েভে সমর্থন থাকবে নীল মৃত্তিকা পরিবার।
খুরশিদা ইসলাম (রুকু) স্বত্বাধিকারী ঘরকুনো সিনজিনি।
’ঘরকুনো সিনজিনি’ নামক আমার গ্রুপেও চলছে দেশি শাড়ির ওয়েভ। শ্রদ্ধেয় রাজিব স্যার যেদিন ২০-৩০ টি গ্রুপে ওয়েভ শুরু করার কথা বলেছিলেন সেদিন ই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এই ওয়েভের অংশ হবে আমার গ্রুপ। সদস্যদের অনেকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে দেশি শাড়ি নিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। ওয়েভের ফলে দেশি শাড়ির প্রচারণা দারুণ ভাবে ছড়াচ্ছে যা সামনে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরাতে বিশাল অবদান রাখবে।
নাহিদ সুলতানা স্বত্বধিকারী জলরঙ।
চলমান দেশী শাড়ির ওয়েভে ফেসবুকে ২৫৯ টি গ্রুপ স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে অংশ নিয়েছে। দেশী শাড়ির নানান তথ্য সহ প্রতিদিনই প্রায় লাখখানেক পোস্ট আসতেছে। তা প্রতিদিন ফেসবুক ব্যাবহারকারীদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। এই ওয়েভের ফলে দেশী শাড়ির সৌন্দর্য, গুনগত মান, বৈচিত্র ইত্যাদি সবার সামনে উঠে আসছে। আশা করা যায় সামনের দিনগুলোতে সাধারন মানুষকে এর প্রতি আগ্রহী করে তুলবে। যারা এইসব শাড়ী উৎপাদনের সাথে জড়িত তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরবে। দেশী শাড়ির সোনালী দিন এখন আর বেশী দূরে নয়।
জান্নাতুন নাহার লিয়া স্বত্বাধিকারী নৃ বাংলাদেশ।
৩/৪ বছর আগেও আমরা কখনো কল্পনা করি নি অনলাইনে দেশীয় শাড়ির ওয়েভ হবে। আর এত ব্যাপকভাবে সাড়া পাওয়া যাবে। দেশী শাড়ির ওয়েভের ফলে ছোট ছোট বিজনেস গ্রুপগুলো দারুণভাবে এক্টিভ হয়ে গেছে, এর যুগান্তকারী সুফল আমরা পাবো সামনের দিনগুলোতে। এই ওয়েভের ফলে দেশীয় শাড়ির প্রতি সর্বসাধারণের ভালোবাসা দারুণভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে।
সৈয়দা তাসমিয়াহ তাহলীল স্বাত্বাধিকারী নাগরী হাট।
শ্রদ্ধেয় রাজিব আহমেদ স্যারের ডাকে পালন হচ্ছে “দেশি শাড়ির ওয়েভ”। যার প্রধান লক্ষ্য দেশীয় শাড়ির প্রচার ও প্রসার। আমাদের প্রায় ৯ হাজার সদস্যের ’নাগরী হাট’ গ্রুপে অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে ওয়েভটি পালন করছি। গ্রুপের সদস্যদের থেকে ওয়েভে প্রায় ১৫০০ পোস্ট এসেছে। এতে দেশি শাড়ির প্রচার ও তথ্য সমৃদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের মাঝে আগ্রহ বাড়চ্ছে এবং দেশি শাড়ির গুণগত মান, সৌন্দর্য ও বৈচিত্র সবার নজর কাড়ছে। অদূর ভবিষ্যতে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশারাখি।
শামীমা সুলতানা স্বত্বাধিকারী ডেইজি।
আমার পণ্যের প্রতি ভালোবাসা থেকে দেশি শাড়ির ওয়েভে সময় দিয়ে যাচ্ছি। বিক্রি উদ্দেশ্য নয়। তথ্য সমৃদ্ধ কনটেন্টের মাধ্যমে আরও বেশি মানুষের কাছে দেশি পণ্য পরিচিত করানোই উদ্দেশ্য। এই ওয়েভ বিদেশি ক্রেতার নজড় কেড়েছে। প্রবাসী ক্রেতা থেকে ১’শ খাদি শাড়ি এবং ২০ পিস খাদি শালের অর্ডার পেয়েছি। আশাকরি এভাবে আমাদের দেশি পণ্য জয় করবে দেশ বিদেশে থাকা মানুষের মন।
নাঈমাতুল জান্নাত স্বত্ত্বাধিকারী সরোজিনী।
রাজীব আহমেদ স্যারের পরামর্শে শুরু হওয়া দেশী শাড়ির ওয়েভে ২৫০ টির বেশি গ্রুপ যোগ দিয়েছে। এটির মূল উদ্দেশ্য দেশি শাড়ির প্রচার। আমি মনে করি, দেশি পণ্যের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছে এই ওয়েভ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শাড়ি নিয়ে প্রচুর পোস্ট আসার কারণে ক্রেতাদের পণ্য চিনতে সুবিধা হচ্ছে এবং কেনাকাটায় আগ্রহ বাড়ছে। বিক্রয় পোস্ট ছাড়াই ওয়েভ থেকে ১১,৮৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে।
লানু ইয়াসমিন পপি স্বত্বাধিকারী সজনেপ্রীতি।
দেশী শাড়ির ওয়েভের সাথে আমি মিল খুঁজে পাই WE ALL RISE, WITH MORE EYES” এই লাইনটির সাথে। একসাথে একটা ভিন্নধর্মী কাজ শুরু করলে তাতে প্রথম দিকে তেমন বেশি সম্পৃক্ততা না থাকলেও সেই কাজ নিয়ে কয়েকজন এগিয়ে আসলে তা একসময় ওয়েভের আকার ধারন করে। আমার কাছে রাজীব আহমেদ স্যারের এই দেশীয় শাড়ির ওয়েভের আয়োজন ঠিক সেরকম অনুভতির কথাই মনে করিয়ে দেয়।