যে প্রত্যন্ত গ্রামে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তে পারিনি, সেই প্রত্যন্ত নিভৃত গ্রাম থেকে এখন মাস্টার্স পড়া যায়। ২৫ কিলোমিটার পায়ে হেটে হোস্টেলে থেকে হাইস্কুল জীবন কাটাতে হয়েছে । তিন হাজার মানুষের সেই গ্রামটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন ৬-৭ হাজার শিক্ষাথীদের পদভারে মুখরিত। বিদ্যুত- ইন্টারনেট, সড়ক; কী নেই সেখানে। নিজ জন্মস্থান খালিয়াজুরীর কৃষ্ণপুর গ্রামের চিত্র তুল ধরে গল্পের মতো করে বলছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
মন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় ‘মোস্তাফা জব্বার- একাকী এক পর্বতারোহী ‘জীবনী গ্রন্থ এবং ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুকের “অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে ডিজিটাল বিপ্লব” শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। লেখক দেবব্রত মুখোপধ্যায় জীবনী গ্রন্থটি রচনা করেন এবং বইটি প্রকাশ করেছেন প্রকৌশলী মেহেদী হাসান।
জাতীয় অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক, বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন, বিশিষ্ট সাহিত্যিক আবৃত্তিকার অধ্যাপক রূপা চক্রবর্তী এবং নগদ এর সিইও তানভির মিশুক বক্তৃতা করেন। নগদ’-এর পাবলিক কমিউনিকেশন্স প্রধান মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন।
লেখক দেবব্রত মুখোপধ্যায় মোস্তাফা জব্বারকে নিয়ে জীবনী গ্রন্থ লেখার পেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন,‘ প্রযুক্তিবিদ একজন মোস্তাফা জব্বারকে নিয়ে তার লেখার যাত্রা শুরু। তারপর আবিস্কার করলাম একজন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বারকে। পেলাম সাংবাদিক মোস্তাফা জব্বারকে। পরতে পরতে তাকে আবিস্কার করলাম। পরে তাকে পেয়েছি নিপুণ নামক পত্রিকার সম্পাদক, ডিজিটাল বাংলা সংবাদ সংস্থা আবাস-এর সম্পাদক ও চেয়ারম্যানসহ সাংবাদিক মোস্তাফা জব্বারকে। ক্রমেই ক্যানভাসটা বড় হতে দেখেছি। তাকে পেয়েছি ৬০-এর দশকে ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতিতে, দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পথ নাটক এক নদী রক্তের নাট্যকার মোস্তাফা জব্বারকে। যত জন বড় মানুষের কাছা-কাছি গিয়েছি তাদের মধ্যে মোস্তাফা জব্বার বৈচিত্রময় এক প্রতিভা।’
সভাপতির ব্ক্তৃতায় একে আজাদ চৌধুরী বলেন, কম্পিউটার প্রযুক্তিতে মোস্তাফা জব্বার- এর অবদান অম্লান হয়ে থাকবে। তার জীবনী থেকে নতুন প্রজন্ম নিজেদের তৈরি করতে অনুপ্রাণিত হবে।
সেলিমা হোসেন বলেন, প্রযুক্তিতে বাংলাভাষাকে বৈশ্বিক ভাষায় রূপান্তরে মোস্তাফা জব্বার একজন নায়ক হিসেবে বিরাজমান থাকবেন।
রুপা চক্রবর্তী বলেন, বাংলা ভাষার প্রথম বিশ্বায়নের কাজটি প্রথম করে দিয়েছেন জনাব মোস্তাফা জব্বার। তিনি বিদেশীদের জন্য বাংলা লেখার প্রথম ও একমাত্র সফটওয়্যার তৈরি করেন ২০০৬ সালে।
‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘যাত্রার শুরু থেকেই ডিজিটাল সেবাকে সার্বজনীন করার মাধ্যমে দেশের সব মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সম্মিলিতভাবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা। এই বইয়ের মাধ্যমে আমি একটি বিষয় সবার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি, সেটি হলো ডিজিটাল বিপ্লবের পর এখন আমাদের সময় এসেছে এর সুফল সবার ঘরে পৌঁছে দেওয়ার।
‘মোস্তাফা জব্বার, একাকী এক পর্বতারোহী’ বইটি একুশে বইমেলার ১৭ নম্বর স্টলে বাংলাপ্রকাশ প্যাভিলিয়নে পাওয়া যাবে। ‘অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে ডিজিটাল বিপ্লব’ বইটি অমর একুশে বইমেলা ২০২২-এর ৪৩৯, ৪৪০ এবং ৪৪১ নং স্টলে পাওয়া যাবে। এ তানভীর এ মিশুকের “অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে ডিজিটাল বিপ্লব” শীর্ষক গ্রন্থটি পাওয়া যাবে অমর একুশে বইমেলা ২০২২-এর ৪৩৯, ৪৪০ এবং ৪৪১ নং স্টলে। এ ছাড়া দেশের অন্যতম অনলাইনভিত্তিক বই কেনাকাটার প্ল্যাটফর্ম রকমারি থেকেও সহজেই গ্রন্থটি সংগ্রহ করতে পারবেন পাঠকেরা।