২০০৯ সাল থেকেই বাংলাদেশে শুরু হয় মোবাইল ব্যাংকিং। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে এর কার্যক্রম। দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠে মোবাইল ব্যাংকিং। দেশের সর্বশ্রেণি-গোষ্ঠির কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই মোবাইল ব্যাংকিং।
আজ রাজধানীতে দেখা গেছে এক অবাক কাণ্ড। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভিক্ষা নিয়েছেন ভিক্ষুক। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় গুলশান দুইয়ে।
বরাবরে মতো এদিন বিকেল চারটা নাগাদ ব্যাক্তিগত কাজ সেরে গুলশান-২ থেকে গুলশান-১ যাচ্ছিলেন এ্যাডরোল এডুকেশনের চেয়ারম্যান ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা তূষার মালেক। গুলশান-২ সিগন্যালে ট্রাফিক পুলিশের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি।
হঠাৎ ১৫-১৬ বছর বয়সের এক হকার টাওয়াল নিয়ে নক করেন তার গাড়ির কাচের জানালায়। তূষার মালেক সে টাওয়াল হকারকে নিরাশ করেননি। নেন দুইটি টাওয়াল, দাম ২০০ টাকা। কিন্তু ক্যাশ টাকা না থাকায় ছেলেটিকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিল পরিষোধ করতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যায় হকার ছেলেটি।
বিকাশের মাধ্যমে তূষার মালেক থেকে দুই টাওয়ালের মূল্য ২০০ টাকা নিয়ে ওই হকার খুশি মনে ফিরে অন্য ক্রেতার কাছে। এমন সময় ষাটোর্ধ্ব এক নারী এসে ভিক্ষা চান তূষার মালেকের কাছে। তূষার মালেক জানান, সচরাচর ভিক্ষুকদের খালি হাতে ফেরান না তিনি। কিন্তু আজ টাকা ক্যাশ না থাকায় ওই ষাটোর্ধ্ব নারীকে বলেন তার কাছে নগদ টাকা নেই। তাই তিনি দিতে পারছেন না।
তখনই ওই নারী তূষার মালেক বলেন, স্যার আমার বিকাশ আছে, আপনি চাইলে আমার বিকাশে টাকা দিতে পারেন।
বয়োজ্যেষ্ঠ নারীর মুখে এমন কথাশুনে রীতিমতো চমকে যান তিনি। অবাক হয়ে বলেন সত্যি আপনার বিকাশ নম্বর আছে? তাহলে বলুন নম্বরটি, আমি এখনই দিচ্ছি। ওই নারী তখন তরতর করে মুখস্থ বিকাশ নম্বর বলে ফেলেন। তূষার মালেক অবাক চোখে চেয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত তার বিকাশে সেন্ড মানির মাধ্যমে তাকে টাকা পাঠান।
তখন ষাটোর্ধ্ব ওই নারী ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে চেক করেন বিকাশে আসা টাকা। এসএমএস দেখেই হাসি ফোটে তার মুখে। ব্যালেন্স চেক করেই দোয়ার সাগরে ভাসান তূষার মালিককে।
তূষার মালিক বলেন, বিষয়টা আমাকে অবাক করলেও খুশি হয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কাছে মোবাইল ব্যাংকিং পৌঁছে যাওয়ায় তারা খুব উপকৃত হবে। আমাদের দেশ সত্যি এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাইও এগিয়ে যাচ্ছি সমান তালে।