বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান অভিনেত্রী আনোয়ারা ‘পারফেক্ট ইলেকট্রনিকস’ নিবেদিত ‘মা পদক ২০২৪’ পদক পাচ্ছেন। আগামী ১২ মে ‘বিশ্ব মা দিবস’ উপলক্ষে আলী-রূপা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এই পদক প্রদান করা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলী-রূপা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হক নগরী।
পারফেক্ট ইলেকট্রনিকসের সিইও ও প্রতিষ্ঠাতা গোলাম শাহরিয়ার কবির জানান, এবার ১২ মে ‘বিশ্ব মা দিবস’ এ ‘মা পদক ২০২৪’ ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলের বলরুমে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের সিনেমা, নাটক, গান, নৃত্যাঙ্গনসহ দেশের প্রশাসন, শিক্ষা, সাংবাদিকতা, সেনাবাহিনীসহ আরও কয়েকটি ক্যাটাগরিতে এবার কৃতী সন্তানদের মায়েদের ‘মা পদক’ প্রদান করা হবে। প্রতিবারই চলচ্চিত্র কিংবা নাটকের এমন একজন অভিনেত্রীকে ‘মা পদক’ বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। এবার বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগমের হাতে এই সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে।
গোলাম শাহরিয়ার কবির আরও জানান, খ্যাতিমান অভিনেত্রী বিষয়টি নিয়ে ভীষণ উচ্ছ্বসিত। তিনি এর আগে অভিনয়ের জন্য নয়বার রাষ্ট্রীয় জাতীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন। কিন্তু অসংখ্য সিনেমায় মায়ের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য মা পদকে ভূষিত হওয়ার বিষয়টিকে তিনি সত্যিই অন্যরকম ভালো লাগার বলে মন্তব্য করেছেন।
গেল কয়েক বছর অসুস্থ ছিলেন আনোয়ারা। তবে সম্প্রতি তিনি অনেকটাই সুস্থ। দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন এ অভিনেত্রী।
বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান অভিনেত্রী আনোয়ারা ষাটের দশকে বাংলা চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে। ১৯৬১ সালে ১৪-১৫ বছর বয়সে অভিনেতা আজিমের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্রে আসেন। তার অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘নাচঘর’। এ চলচ্চিত্রেও তিনি নৃত্যশিল্পী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা আবদুল জব্বার খান ছিলেন এ চলচ্চিত্রের পরিচালক। উর্দু ভাষার এ চলচ্চিত্র ১৯৬৩ সালে মুক্তি পায়।
১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বালা’ চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন আনোয়ারা। তার বিপরীতে ছিলেন হায়দার শফি। নবাব সিরাজউদ্দৌলা চলচ্চিত্রটি ছিল আনোয়ারার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। সে ছবিতে আলেয়া চরিত্র দিয়ে আজও কিংবদন্তি হয়ে আছেন তিনি। প্রশংসিত হয়েছেন দেবদাসের চন্দ্রমুখী চরিত্রেও।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আনোয়ারা পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও স্বীকৃতি। আটবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ২০২০ সালে তাকে আজীবন সম্মাননা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়। তার সবচেয়ে জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলো হলো- গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৮), সুন্দরী (১৯৭৯), সখিনার যুদ্ধ (১৯৮৪), মরণের পরে (১৯৯০), রাধাকৃষ্ণ (১৯৯২), বাংলার বধূ (১৯৯৩) এবং অন্তরে অন্তরে (১৯৯৪) এবং শুভদা (১৯৮৬)। এই অভিনেত্রী এবার মা পদক পেতে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, আলী-রূপা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মাদিহা মার্সিহা অ্যাডভারটাইজিংয়ের আয়োজনে ২০২২ সাল থেকে সাংবাদিক অভি মঈনুদ্দীনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ‘মা পদক’ প্রদান করা হয়ে আসছে। যথারীতি এবারও আগামী ১২ মে ‘বিশ্ব মা দিবস’ উপলক্ষে ‘পারফেক্ট ইলেকট্রনিকস’ নিবেদিত ‘মা পদক ২০২৪’ অনুষ্ঠিত হবে।