জাপানি বিজ্ঞানী প্রযুক্তি ব্যবহার করে জমজমের পানির ওপর গবেষণা করেছেন। জমজমের পানি কেন বিশ্বের বিশুদ্ধতম পানি। তার গবেষণায় অনেক তথ্য উঠে এসছে। জমজম পবিত্র মসজিদুল হারামের (কাবা শরিফ) কাছে অবস্থিত একটি প্রসিদ্ধ কূপ। পবিত্র কাবা শরিফ ও জমজম কূপের মধ্যে দূরত্ব মাত্র ৩৮ গজ। জমজম নবী ইবরাহিম (আ.)-এর ছেলে নবী ইসমাঈল (আ.)-এর স্মৃতিবিজড়িত কূপ। হজ ও ওমরাহ আদায়কারীর জন্য বিশেষভাবে এবং বিশ্বের সব মুসলমানের জন্য সাধারণভাবে জমজমের পানি পান করা মুস্তাহাব। সহিহ হাদিসে বিধৃত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে জমজম থেকে পানি পান করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫৫৬)
হজরত আবু জর (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘জমজমের পানি বরকতময়, স্বাদ অন্বেষণকারীর খাদ্য।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৪৭৩)
মসজিদুল হারামে হজযাত্রীরা নামাজ আদায় করতে এসে জমজমের পানি পান করেন। মুসলিমদের অনেকেই রোগ মুক্তি বা ধর্মীয় কাজের জন্য জমজম কূপের পানি পান করে থাকেন। হজে যাওয়া হাজী সঙ্গে আনা বোতলে জমজমের পানি ভরে নিয়ে যান নিজ দেশে।
জাপানের বিজ্ঞানী মাসারু ইমোতো ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করে জমজমের পানির ওপর গবেষণা করেছেন। কেন জমজমের পানি পৃথিবীর বিশুদ্ধতম পানি তার কিছু বৈজ্ঞানিক ধারণা বের করেছেন তিনি গবেষণার মাধ্যমে।
চলুন দেখে নেয়া যাক-
১. এক ফোঁটা জমজমের পানিতে যে পরিমাণ আকরিক পদার্থ থাকে তা পৃথিবীর অন্য কোনো পানিতে থাকে না।
২. জমজমের পানির গুণগত মান কখনো পরিবর্তন হয় না।
৩. সাধারণ কূপের পানিতে জলজ উদ্ভিদ জন্মালেও জমজম কূপের পানিতে কোনো জলজ উদ্ভিদ বা অন্যান্য উদ্ভিদজাত অণুজীব জন্মায় না।
৪. জমজমের পানিতে যেসব আকরিক পদার্থ পাওয়া গেছে তার মধ্যে ক্যালসিয়াম, ফ্লোরাইড, সোডিয়াম, ক্লোরাইড, সালফেট, নাইট্রেট, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম উল্লেখযোগ্য। ফ্লোরাইড ছাড়া বাকি মিনারেলগুলোর মাত্রা অন্যসব স্বাভাবিক খাবার পানিতে পাওয়ার মাত্রা থেকে বেশি ছিল।
৫. জমজমের পানিতে এন্টিমনি, বেরিলিয়াম, ব্রোমাইন, কোবাল্ট, বিস্মুথ, আয়োডিন আর মলিবডেনামের মতো পদার্থগুলোর মাত্রা ছিল ০.০১ পিপিএম থেকেও কম। ক্রোমিয়াম, ম্যাংগানিজ আর টাইটানিয়াম এর মাত্রা ছিল একেবারেই নগণ্য।
৬. জাপানি বিজ্ঞানীর পরীক্ষা অনুযায়ী জমজমের পানির পিএইচ হচ্ছে ৭ দশমিক ৮। যেটি সামান্য ক্ষারজাতীয়। বিজ্ঞানী তার পরীক্ষায় আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম, সীসা এবং সেলেনিয়ামের মতো ক্ষতিকর পদার্থগুলো ঝুঁকিমুক্ত মাত্রায় পেয়েছেন। যে মাত্রাগুলোতে মানুষের কোনো ক্ষতি হয় না।
৭. মাসারু তার পরীক্ষায় জমজমের পানির এমন এক ব্যতিক্রমধর্মী মৌলিক আকার পেয়েছেন যেটি খুবই চমকপ্রদ। পানির দুইটি স্ফটিক সৃষ্টি হয়- একটি আরেকটির উপরে কিন্তু সেগুলো একটি অনুপম আকার ধারন করে।