সাবমেরিন যাকে বাংলায় বলে ডুবোজাহাজ। বিশ্বে মোটামুটি যারা সামরিক শক্তিতে বলিয়ান সেই সকল দেশের কাছে সাবমেরিন রয়েছে। এমনকি বাংলাদেশও সেই তালিকায় রয়েছে। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমা জয় করার পর বিশাল বঙ্গোপসাগর রক্ষায় চীনের কাছ থেকে দুইটি সাবমেরিন সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। সাবমেরিনে অনেক ধরনের যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। তবে পরমাণু অস্ত্রে সজ্জিত সাবমেরিন ব্যবহার করাও হচ্ছে। এখন পরমাণু অস্ত্রে সজ্জিত এমন ৫টি সাবমেরিনের বর্ণনা এখন দেবো যা মাত্র আধা ঘণ্টায় পুরো বিশ্বকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এই পাঁচ সাবমেরিন ২টি যুক্তরাষ্ট্রের এবং বাকি ৩টি রাশিয়ার।
ওহিও-শ্রেণির ডুবোজাহাজ
ওহিও-শ্রেণির ডুবোজাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। এতে রয়েছে ২৪টি ট্রাইডেন্ট-২ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। প্রতি ট্রাইডেন্ট-২ ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে পারে ১২টি ডব্লিউ৮৮ ৪৭৫ কিলোটন তাপপারমাণবিক বোমা। এ ধরণের একটি ডুবোজাহাজ ২৮৮টি মহানগর সমতুল্য লক্ষ্যবস্তুকে ৩০ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে তেজস্ক্রিয় ছাইয়ে পরিণত করতে পারে। গেল বছরের মে মাসে দেয়া এক তথ্যে জানা যায়, এরকম নয়টি ডুবোজাহাজ মোতায়েন রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরে আর পাঁচটি আটলান্টিক মহাসাগরে মিশন সম্পন্ন করছে।
কলাম্বিয়া-শ্রেণির ডুবোজাহাজ
মানের দিক থেকে ওহিও-শ্রেণির ডুবোজাহাজ কোন অংশে কম না হলেও , এই সাবমেরিনগুলো অনেক আগে তৈরি। তাই বুড়ো হয়ে যাওয়া ওহিও শ্রেণির ডুবোজাহাজের স্থান করে নেয়ার লক্ষ্য নিয়ে তৈরি করা হয় কলাম্বিয়া-শ্রেণির ডুবোজাহাজ। আকারে একটু বড় এ শ্রেণির ডুবোজাহাজ রয়েছে ১৬টি ট্রাইডেন্ট ২ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। আকারে বড় হলেও কলাম্বিয়া-শ্রেণির ডুবোজাহাজের শব্দ অনেক কম।
রাশিয়ার প্রকল্প ৯৫৫
এবার যে সাবমেরিনের কথা জানাবো সেটি রাশিয়ার তৈরি। রুশ নৌবাহিনীর প্রকল্প ৯৫৫ বোরেই-শ্রেণির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডুবোজাহাজ এ তালিকার তিন নম্বরে রয়েছে। এ শ্রেণির ডুবোজাহাজে রয়েছে ১৬টি আরএসএম-৫৬ বুলভা ক্ষেপণাস্ত্র। এ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৮০০০ কিলোমিটার বা ৪৯৭০ মাইল । আরএসএম-৫৬ বুলভা ক্ষেপণাস্ত্রের পরমাণু বোমায় শত্রুর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দেয়ার ব্যবস্থা আছে।
ডলফিন-শ্রেণির ডুবোজাহাজ
রুশ প্রকল্প ৬৬৭বিডিআরএম ডলফিন-শ্রেণির ডুবোজাহাজে রয়েছে ১৬ আর-২৯আরএমইউ সিনেভা তরল-জ্বালানি চালিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ডুবোজাহাজ থেকে চক্রাকারে সব দিকেই এ ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া যায়। এ ছাড়া, ঘণ্টায় ছয় বা সাত নট গতিতে চলার সময় সাগরের ৫৫ মিটার গভীর থেকে ছুঁড়তে পারে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।
ইয়াসেন-শ্রেণির ডুবোজাহাজ
রুশ নৌবাহিনীর প্রকল্প ৮৮৫এম ইয়াসেন-শ্রেণির গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডুবোজাহাজকে আমেরিকার মূল ভূমির জন্য হুমকি বলা হয়। এতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহন করা হয় না। এতে রয়েছে পরমাণু বা সাধারণ উভয় ধরণের ৩২টি বোমা বহনের সক্ষমতা সম্পন্ন আড়াই হাজার কিলোমিটার পাল্লার থ্রিএম-১৪কে ক্যালিবার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। দ্রুতগামী খুবই কম শব্দ সৃষ্টিকারী এ ডুবোজাহাজ অনায়াসে মার্কিন পূর্ব উপকুলের দুই হাজার কিলোমিটারের মধ্যে ঢুকে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরের লক্ষবস্তুতে হামলা করতে পারবে।
সূত্র: পার্সটুডে