উচ্চশিক্ষিত ছেলে চাকরি না করে হোম ডেলিভারির ব্যবসায় নামায় বৃদ্ধ বাবা-মা আত্মহত্যা করেছেন। রোববার (১০ জানুয়ারি) সকালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলির কোন্নগরের এস সি চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীপক সরকার ও তার স্ত্রী ভবানী সরকারের বয়স সত্তরোর্ধ্ব। দুজনেই অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। তাদের ছেলে দিব্যেন্দু সরকার উচ্চশিক্ষিত হয়েও সম্প্রতি হোম ডেলিভারির ব্যবসা শুরু করেছিলেন। পুলিশের ধারণা, তার জেরেই মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করেছেন ওই দম্পতি।
কোন্নগর পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা গেছে, বাসার দোতলার বারান্দায় ভবানী সরকারের মরদেহ পাওয়া যায়। দীপকের মরদেহ ছিল ঘরে। পুলিশ বলছে, রোববার সকালে দিব্যেন্দু সরকার থানায় খবর দেন। মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
উত্তরপাড়া থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করেছেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। তার পেছনে পারিবারিক সঙ্কটের কথা তুলে ধরছেন তদন্তকারীরা।
তাদের মতে, দীপক ও ভবানীর সন্তান দিব্যেন্দু পড়াশোনায় ভালো ছিলেন। মাস্টার্স করেও চাকরি পাননি তিনি। পরবর্তীতে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন দিব্যেন্দু। কিন্তু করোনাভারইরাসের কারণে লকডাউনের জেরে সেই ব্যবসায় ধাক্কা খান তিনি। এরপর বাড়ি বাড়ি খাবার দেয়ার ব্যবসা শুরু করেন। হোম ডেলিভারির ব্যবসা নিয়ে আপত্তি ছিল দীপক ও ভবানীর। ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তারা মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বলেই ধারণা প্রতিবেশীদের।
পুলিশের ধারণা, শনিবার রাতে ওই দম্পতি গলায় ফাঁস দেন। তবে এর পেছনে ভিন্ন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে না। দিব্যেন্দুকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা।
দিব্যেন্দুর প্রতিবেশী ঋষিকেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ছেলেটি উচ্চশিক্ষিত জানি। চাকরি না পাওয়ায় হোম ডেলিভারির ব্যবসা শুরু করেছিল। তাতে হয়তো ওর বাবা-মায়ের অহংবোধে আঘাত লাগে।’