ফোন এবং ডেক্সটপ কম্পিউটারের পাশাপাশি ল্যাপটপের ব্যাবহারও হয় বহুল। অনেক সময় দেখা যায় একটি ল্যাপটপের দাম প্রায় লাখের কাছাকাছি হয়। আসলে ভালো কিছু ব্র্যান্ড সবসময়ই দামী হয়। ল্যাপটপকে অনেকে ভালোবাসে, এটি যেকোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায় বলে। এছাড়াও কম্পিউটারে ব্যাবহৃত কিছু দরকারী ডিভাইস ল্যাপটপেও দেয়া হয়। কম্পিউটার তো যেকোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায় না। অনেকে হয়তো এ কারনেই ল্যাপটপকে বেশি এগিয়ে রাখে। এইরকমই একটি অসাধারন ল্যাপটপ নিয়ে কথা হবে আজ। যেটার নাম ‘বি মেক্স’। ল্যাপটপটির মডেলের নাম হচ্ছে ‘ওয়াই ১১’। কথা না বাড়িয়ে নিচে গিয়ে জেনে আসা যাক এই ল্যাপটপটির ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্যঃ⤵
এই ‘বি মেক্স ওয়াই ১১’ ল্যাপটপটি টু ইন ওয়ান, ৩৬০° ফ্লিপিং মোডের ল্যাপটপ। সেই সাথে এটি একটি স্ক্রিন টাচ যুক্ত ল্যাপটপ।
‘বি মেক্স’ মূলত চাইনিজ একটি ব্র্যান্ড। যেই ব্র্যান্ডটি ল্যাপটপের পাশাপাশি মিনি পিসি, ম্যাকবুক এবং মনিটর তৈরি করে থাকে। ‘বি ম্যাক্স’ ব্র্যান্ড তাদের ব্র্যান্ডের লোগো দিয়েছে একটি নেকড়ের মাথা, যেটা দেখতে অসাধারণ ছিল।
ল্যাপটপের বক্সে আরো ছিল একটি চার্জার কেবল যেটাতে ছিল না কোন প্লাগ। তবে বক্সের ভিতরে আলাদা আলাদা তিনটি প্লাগ দেওয়া হয়েছে যেটা আরেকটি অসাধারণ বিষয়। এ প্লাগ গুলো কেবল এ লাগিয়ে বিভিন্ন ভাবে চার্জ দিতে পারবেন ল্যাপটপে। বক্সে আরও রয়েছে ‘মাইক্রো ইউএসবি টু ইউ এস বি টাইপ এ’ পোর্ট।
ল্যাপটপটির ডিসপ্লে ছিল ১১.৬ ইঞ্চির। ডিসপ্লেটি ছিল ফুল এইচডি রেজুলেশনের যুক্ত একটি আইপিএস এলসিডির। ল্যাপটপটির বডিতে অনেক স্থানে মেটাল ইউজ করার জন্য এটির ওজন বাড়তি লেগেছিলো। ল্যাপটপটির মোট ওজন এক কেজি। ল্যাপটপটিতে প্রসেসর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ‘ইন্টেলের সেলেরন এন৪১২০’ প্রসেসর। রেম হিসেবে থাকছে ৮জিবির ডিডিআর৪ ভার্সন এবং ২৫৬ জিবির এসএসডি ব্যবহার করা হয়েছে।
আগেই বলা হয়েছিল ল্যাপটপটি থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি রোটেইটেড। যখন আপনি এটাকে ঘুরাবেন তখন ল্যাপটপের ডিসপ্লেটি, ট্যাব মোড হয়ে যাবে। বাজেট অনুযায়ী ল্যাপটপের এই থ্রি সিক্সটি ডিগ্রী রোটেশন এবং টাচ রেসপন্স ছিল অসাধারণ।
ল্যাপটপের ডিসপ্লের কালার এবং কনট্রাস্ট ছিল খুব ব্রাইট। ডিসপ্লের পাশের বেজেল গুলো ছিল জায়গামতো এবং এর নিচের দিকে রয়েছে একটি চিন যেখানে উইন্ডোজ এর একটি লোগো রয়েছে। ল্যাপটপের ওয়েবক্যামটি দেওয়া হয়েছে এর নিচে ডান পাশে। ওয়েব ক্যাম টি ল্যাপটপের উপরে হলে ভালো হতো। ল্যাপটপটির নিচের ডান পাশে রয়েছে মাইক্রো এসডি কার্ড স্লট, মাইক্রোফোন, মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট এবং একটি টাইপ সি পোর্ট। বাম পাশে রয়েছে একটি কম্ব ইয়ারফোন জ্যাক, ভলিউম রকার, একটি পাওয়ার বাটন এবং আরেকটি মাইক্রোফোন। ল্যাপটপটির স্পিকার দেওয়া হয়েছে দু’পাশেই।
ল্যাপটপের পাওয়ার একটু লো হওয়ার কারণে ল্যাপটপটিতে, ভিতরে দেওয়া হয়নি কোন ফ্যান। তবে থাকছে হিট সিঙ্ক।
ল্যাপটপের কিবোর্ডটি ছিল এভারেজ। বাটনগুলোর ট্রেবল ডিসটেন্স ছিল মোটামুটি। তবে ল্যাপটপটির স্পেস বারে, টাইপিং এর সময় ঝনঝন শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। যেটা একটি খারাপ দিক ছিল। এর মাইক্রোসফট-এর প্রিসিশন ড্রাইভার যুক্ত ট্র্যাক প্যাডটিও ছিলো একটু আলসে ধরনের । কাজ করেছিল খুবই স্লো।
পারফরমেন্সের দিক দিয়ে ল্যাপটপটি ছিল ভালোই। তবে একেবারে পারফেক্ট বলা যাবে না।
ইন্টেলের ৮ জেনারেশনের চিপসেট যুক্ত, এর প্রসেসরটি ছিল ভালোই ফাস্ট। এই প্রসেসর এর ক্রসফিট হচ্ছে ১.১ গিগাহার্জ।
ল্যাপটপটিতে ভিডিও এডিটিং এবং ফটো এডিটিং এর মত কাজ না করা গেলেই ভাল হয়। কারণ, ল্যাপটপটি হেবি ইউজের জন্য নয়। নরমাল ইউজের জন্য একেবারে পারফেক্ট একটি প্যাকেজ এটি।
ফুল চার্জে ল্যাপটপটি ব্যাকআপ দিবে ৬ ঘন্টা। ল্যাপটপটির বক্সে থাকা চার্জার দিয়ে চার্জ করলে এটি ফুল চার্জ হতে সময় লাগবে দেড়-দুই ঘন্টার মত।
সব মিলিয়ে ল্যাপটপটি ছিলো ভালো মানের। দাম বিবেচনা করলে ল্যাপটপটি ছিলো অসাধারন একটি প্যাকেজ। বর্তমান বাজারে এর মূল্য ৩৪,০০০ টাকা।