ডিজিটাল প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তিতে দেশের ব্যাংকিং খাত ক্রমান্বয়ে নতুন ইনোভেশন নিয়ে আসছে। এ খাত আরো স্মার্ট করে গড়ে তুলতে আগামীতে আরো প্রযুক্তিগত পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। গ্রাহকের চাহিদা, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রমকে এ পরিবর্তনে সংযুক্ত করতে হবে। প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সমান্তরালে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাইবার নিরাপত্তাকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। তা না করা হলে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে পড়বে দেশের ব্যাংক খাত।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেন বক্তারা। আর্থিক প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সোনালী ইন্টেলেক্ট লিমিটেড এবং ইন্টেলেক্টসের যৌথ উদ্যোগে আর্থিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টেলেক্ট ডিজাইন এরিনা লিমিটেড ‘ডিজাইন থিংকিং ফর ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজ’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আলোচকরা বলেন, ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজের রূপান্তর শুধুমাত্র ক্লাউডে স্থানান্তর বা মোবাইলবান্ধব ইন্টারফেস তৈরি করা নয়। এর বাইরে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজের যাত্রা, ব্যাংক খাত পুনরায় ডিজাইন করাও এর অন্তর্ভুক্ত। এ খাতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ডিভাইস ও সেন্ট্রালাইজড প্লাটফর্মের সমস্ত কার্যক্রম সহজও করতে হবে। এছাড়া দেশের ব্যাংকিং এবং বীমা শিল্প খাত স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং ভবিষ্যতমুখী দেশ গড়বে।
২০২৫ সালের মধ্যে দেশে স্মার্টফোনের হার হবে ৬৩ শতাংশ। স্মার্টফোনের এ প্রবৃদ্ধির সঙ্গে ব্যাংকিং ও আর্থিক শিল্পের গ্রাহকরা আরো বেশি চাহিদাসম্পন্ন হয়ে উঠবে। এ গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে ব্যাংকগুলোর যে প্রযুক্তি প্রয়োজন তা কেবলমাত্র একটি ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে করা সম্ভব। এটি ব্যাংকগুলোর জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও অংশীদারত্বে আরো বেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবদুলাল রায় বলেন,”ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর জন্য অনেক সুযোগ এনেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির শক্তি কাজে লাগানোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো শুধু গ্রাহকদের অভিজ্ঞতাই বাড়ায় না, বিভিন্ন ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনায় দক্ষও করে তোলে। যেখানে স্থানীয় পর্যায়ের লোকজন প্রচলিত ব্যাংকের শাখাগুলোয় যাওয়ার সুযোগ কম পান সেখানে ডিজিটাল প্লাটফর্ম মানুষকে সুবিধাজনকভাবে তাদের আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করার এবং এ বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠার সুযোগ দেয়।”
ব্যাংকস বিকামিং ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস-বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় সোনালী ইন্টেলেক্টের ডিরেক্টর এবং ইন্টেলেক্ট ডিজাইন এরিনার ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার সিইও রামানন এসভি বলেন, শিল্পের ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা ও বিশেষজ্ঞদের সম্মিলিত চিন্তা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডিজিটাল দিক দিয়ে ক্ষমতায়ন করতে বহু ধারণার জন্ম দিতে পারে। এটি এসব প্রতিষ্ঠানকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করবে। ইন্টেলেক্ট ৫৭ দেশে ২৭০ টিরও বেশি গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে। ব্যাংকিং খাত, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বীমা এবং পুঁজিবাজারসহ বিভিন্ন ভ্যাটিক্যাল ব্যবসায় ইম্যাক ডট এআই আর্কিটেকচারের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত সেবা দিয়ে থাকে। গতিশীল এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তির যুগে গ্রাহকদের অগ্রাধিকার দিয়ে ব্যাংকগুলো পরিচালনা পদ্ধতি পরিবর্তন করবে।
এ সময় আরো বক্তব্য দেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আফজাল করিম, সিআইটিও মোহাম্মদ রেজওয়ান আল বখতিয়ার, নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক, সোনালী ব্যাংকের পরিচালক ও সোনালী ইন্টেলেক্টের স্বাধীন পরিচালক বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, ওরাকলের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রুবাবা দৌলা, ইভিপি ইন্টেলেক্ট ডিজাইন এরিনার রাজু দারিয়ানি প্রমুখ।