চাঁদ ক্রমে ছোট হচ্ছে। এর ফলে এর পাথুরে পৃষ্ঠে সৃষ্টি হচ্ছে ভাঁজ এবং এই প্রক্রিয়ায় চন্দ্রপৃষ্ঠে সৃষ্টি হচ্ছে মৃদু কম্পন। নাসার নতুন একটি গবেষণা জানিয়েছে এই চমকপ্রদ তথ্য। ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, গত কয়েক শ কোটি বছরে চাঁদ পরিধির দিক থেকে প্রায় ১৫০ ফুট ছোট হয়েছে। বিশাল আকৃতির তুলনায় এই সংকোচন খুব নগণ্য হলেও এটি চাঁদ সম্পর্কে নতুন ধারণা হাজির করেছে বৈকি!
গত সোমবার যুক্তরাজ্যের গবেষণা সাময়িকী নেচার জিওসায়েন্স–এ নাসার নতুন এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা নিবন্ধটির প্রধান লেখক টমাস ওয়াটার্স। তাঁর সহযোগী ছিলেন নিকোলাশ শ্মেয়ার। তাঁরা নাসার রোবট মহাকাশযান লুনার রিকনোসেন্স অরবিটারের (এলআরও) তোলা ১২ হাজার ছবি বিশ্লেষণ করেছে। চাঁদের উত্তর মেরুর কাছে নিচু এলাকা মারে ফ্রিগোরিসে (হিম সাগর) ওই ছবিগুলো তোলা হয়েছে। ছবিতে দেখা গেছে, সেখানে ক্রমেই ফাটল সৃষ্টি হচ্ছে এবং ভাঁজ পড়ছে।
এর আগে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৭ সালে নাসার অ্যাপোলো ১১, ১২, ১৪, ১৫ ও ১৬ চন্দ্রাভিযানে চন্দ্রপৃষ্ঠের মোট ২৮টি মৃদু কম্পন রেকর্ড করা হয়। নভোচারীরা দেখেন, চাঁদের অধিকাংশ কম্পন এর অভ্যন্তরে উৎপন্ন হচ্ছে। তবে চাঁদে পৃথিবীর মতো কোনো টেকটোনিক প্লেট না থাকায় এই কম্পন কোথা থেকে হচ্ছে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের কৌতূহল তৈরি হয়। নতুন গবেষণায় দেখা যায়, ৪৫০ কোটি বছর আগে চাঁদ যখন সৃষ্টি হয়, তখনকার চেয়ে তাপমাত্রা ক্রমে কমে যাচ্ছে। এর ফলে চাঁদ ভেতর থেকে সংকুচিত হচ্ছে। এর ফলেই সৃষ্টি হচ্ছে পৃষ্ঠে কম্পন এবং পড়ছে ভাঁজ। এটা অনেকটা আঙুর চুপসে কিশমিশ হওয়ার মতো ঘটনা।
গবেষণা নিবন্ধের সহলেখক শ্মেয়ার বলেন, চাঁদ ক্রমে ছোট হওয়ার ফলে এর পৃষ্ঠের একটি এলাকা তার সংলগ্ন এলাকার ওপরে উঠে যাচ্ছে। কখনো কখনো এটি ৩৩০ ফুট (১০০ মিটার) উঁচুও হয়ে পড়ছে এবং বিস্তৃত হচ্ছে মাইলের পর মাইল।