রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেশের পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা করা। কিন্তু তাঁরা বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দখল-দূষণের হাত থেকে সেই পরিবেশ রক্ষার কাজ তো করছেনই না, উল্টো নিজেরাই পরিবেশ ধ্বংসের কাজে লিপ্ত রয়েছেন।
সরকারি গাছ কাটতে গেলে উপজেলা পরিষদের রেজুলেশন, টেন্ডার ও বন বিভাগের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কিন্তু ফরিদপুরের বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা- কর্মচারীরা এইসবের নিয়মের তোয়াক্কা করে না। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফরিদপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে সরকারি গাছ বিক্রি করে আসছে। আর এসব গাছ বিক্রির সাথে যার নাম বারবার সামনে আসছে তিনি হলেন মোঃ শফিউদ্দিন খান। তিনি সামাজিক বন বিভাগ ফরিদপুরের অফিস সহায়ক কর্মরত রয়েছেন।
শফিউদ্দিন খান ২০০২ সালের ২৭ নভেম্বর তার চাকরি জীবন শুরু করে। তবে এই চাকরি নিয়েছেন তৎকালীন সময়ের ফরিদপুরের আওয়ামী লীগের এক এমপির সহায়তায়। এই চাকরির পর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে গড়েছে টাকার পাহাড়। এ যেন আলাদীনের চ্যারাগ পেয়ে বসেছেন।
জানা গেছে, শফিউদ্দিন খান বনের গাছ অবৈধভাবে বিক্রি করে আসছেন আর তার এই অবৈধ কাজে সহযোগী আওয়ামী লীগের এক নেতা। দুই জনের যোগসাজশে বনের বিভিন্ন দামী গাছ গুলো গজারিয়া বাজারে ফরহাদ হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে
এই গাছ বিক্রি করে আসছে।
এলাকাবাসী জানান, শফিউদ্দিন খান সামাজিক বন বিভাগে চাকরি পাওয়ার পর থেকে যেন ভাগ্যের পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। জায়গা জমি এবং নগদ টাকার পরিমাণ ও বেড়ে গিয়েছে। আগে দেখতাম চলাফেরা করতে কষ্ট হত আর এখন বিলাসী জীবন যাপন করছে ।
এলাকাবাসী আরো জানান, শফিউদ্দিনকে এখন সবাই বন মাফিয়া নামে জানে। কারণ সরকারি গাছ নিজের মত কেটে বিক্রি করে। অফিস সহায়ক চাকরি করে কি ভাবে এত কিছু করেছে এলাকাবাসীর প্রশ্ন।
এদিকে গজারিয়া বাজারের নাম অনিচ্ছুক কিছু ব্যবসায়ী জানান, শফিউদ্দিন খান অনেক দিন দরেই গাছ বিক্রি করে আসছেন। আর এই গাছ গুলো বাজারে ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন কিনে থাকেন। ব্যবসায়িরা জানান সামাজিক বন বিভাগ একজন কর্মচারী কি ভাবে প্রশাসনের নাকের ডগায় থেকে এই কাজ গুলো করে আসছেন।
এই সব বিষয়ে জানতে শফিউদ্দিন খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব বিষয় অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এইসবের সাথে আমি জড়িত না। আমার নামে এইসব তথ্য মিথ্যা বানোয়াট। ফরিদপুর থেকে অন্য জায়গায় বদলির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন বউকে নিয়ে কয়েকবার ইন্ডিয়া যাওয়ার কারণে বদলি হতে পারেন নি।
শফিউদ্দিন খানের সাথে কথা বলে শেষ হলে এর কিছুক্ষন পর এইসব বিষয় জানতে ফরিদপুর জেলার এক সিনিয়র সাংবাদিকে দিয়ে আমাদের প্রতিনিধিকে ফোন দেন এবং সাংবাদিকের পরিচয় জানতে চায়। কি কারণে শফিউদ্দিন খানকে ফোন দিয়েছি সেই বিষয় জানতে চায়।