বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর একটিকে কেন্দ্র করে অনলাইন বিজ্ঞাপন জগতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও ১৭টি অঙ্গরাজ্যের দায়ের করা মামলায় গুগলের বিরুদ্ধে দেওয়া এক ঐতিহাসিক রায়ে বলা হয়েছে—বিজ্ঞাপন প্রযুক্তি ব্যবস্থায় গুগল অবৈধভাবে একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে।
মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট জাজ লিওনি ব্রিংকেমা গত বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “গুগল অনলাইন বিজ্ঞাপন প্রযুক্তির দুটি বাজারে অবৈধভাবে একচেটিয়া দখলদারি করছে। বিজ্ঞাপন সার্ভার এবং অ্যাড এক্সচেঞ্জ বাজারে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতিযোগীদের প্রতিহত করেছে।”
📌 দ্বিতীয় অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা
এটি গুগলের বিরুদ্ধে এক বছরে দ্বিতীয় অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা। এর আগে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবসায় একচেটিয়াভাবে বাজার দখলের অভিযোগে দায়ী করা হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটিকে। এবার অনলাইন বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রেও গুগলের প্রভাবশালী ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
আরও পড়ুন :গুগল নিয়ে বড় ঘোষণা দিলেন সুন্দর পিচাই
📢 বিচার বিভাগের অভিযোগ:
মামলার অভিযোগে বলা হয়, কোন বিজ্ঞাপন কোথায় দেখানো হবে তা গুগল একতরফাভাবে নির্ধারণ করছে—যা প্রতিযোগিতার পরিপন্থী। গুগলের অ্যাড ম্যানেজার, পাবলিশার টুলস এবং অ্যাড এক্সচেঞ্জ মিলিয়ে তারা বিজ্ঞাপন বাজারে একটি প্রাচীর তুলে রেখেছে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ।
📉 প্রভাব পড়বে অন্যান্য প্রযুক্তি জায়ান্টদের ওপরও
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রায় প্রযুক্তি খাতের জন্য একটি মোড় পরিবর্তনকারী মুহূর্ত। এর ফলে অ্যামাজন ও মেটার মতো বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নজরদারি আরও বাড়তে পারে। এ রায়ে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রযুক্তি জায়ান্টদের কাঠামোগত সংস্কারের ইঙ্গিত স্পষ্ট।
আরও পড়ুন : কর্মী ছাঁটাই করবে গুগল, বেতন খরচ হবে এআই উন্নয়নে
🔍 গুগলের প্রতিক্রিয়া:
গুগল জানিয়েছে, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে। তবে বাজার বিশ্লেষকদের মতে, আদালতের রায় বহাল থাকলে গুগলকে বিজ্ঞাপন ব্যবসার একটি অংশ বিক্রি করে দিতে হতে পারে।
🌐 বিশ্বজুড়ে নজর:
উল্লেখ্য, এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রেগুলেটরি সংস্থাগুলোও গুগলের বিরুদ্ধে বিজ্ঞাপন বাজারে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ তোলে। তখনও অ্যাড এক্সচেঞ্জ বিক্রির কথা বিবেচনা করেছিল গুগল।
বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বাজারে এক নতুন ধারা শুরু হতে যাচ্ছে। আদালতের পরবর্তী শুনানিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নির্ধারণ হবে। তবে বিশ্লেষকরা একমত—গুগলের এই পরিণতি কেবল শুরু, ভবিষ্যতে প্রযুক্তি জায়ান্টদের জন্য আরও কঠোর নীতিমালা আসতে পারে। খবর রয়টার্স।