উপগ্রহ কক্ষপথ ও মহাকাশে মহাকাশযান পাঠানোর জন্য সাধারণত বিশেষ তরল জ্বালানি হাইড্রাজিন ব্যবহার করা হয়। এ হাইড্রাজিন জ্বালানি পোড়ার ফলে মহাকাশে জমা হয় প্রচুর পরিমাণ বিষ। নাসার বিজ্ঞানীরা এবার মহাকাশযানে হাইড্রাজিনের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহারের চিন্তা করছেন। প্রথমবারের মতো এ মাসেই পরীক্ষামূলকভাবে স্পেস এক্স ফ্যালকন হেভি রকেটে গ্রিন প্রোপেল্যান্ট ইনফিউশন মিশনের অধীনে (জিপিআইএম) ব্যবহার করা হবে পরিবেশবান্ধব, গোলাপি রঙের এ জ্বালানি। – নাসা
পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরি (জেপিএল)র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন ঐ পরিবেশবান্ধব জ্বালানি বানানো হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ায় এডওয়ার্ডস এয়ারফোর্স বেসে এয়ারফোর্স রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে (এএফআরএল)। ওই পরিবেশবান্ধব জ্বালানিটি মূলত বিশেষ একটি রাসায়নিক যৌগ। যার নাম হাইড্রক্সিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। কিন্তু মহাকাশে তো আর অক্সিজেন নেই। কোনো পদার্থকে পুড়তে সাহায্য করে কোনো অক্সিডাইজার বা জারক পদার্থ। পরিবেশবান্ধব ঐ জ্বালানিকেও অক্সিজেনের জোগান দিয়ে পুড়তে সাহায্য করবে একটি অক্সিডাইজার বা জারক পদার্থ।
মহাকাশ যানে ব্যবহূত হাইড্রাজিন জ্বালানি তৈরি করা, সংরক্ষণ করা ও তা রকেটে ভরার সময়ে খুব সতর্ক থাকতে হয়। পরতে হয় বিশেষ ধরনের পোশাক। খুব পুরু রবারের গ্লাভসও পরতে হয়। কাছাকাছি অক্সিজেনের ট্যাঙ্ক রাখতে হয়। কিন্তু নাসার সদ্য আবিষ্কৃত পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে সে সবের কোনো বালাই নেই। কলোরাডোর বল অ্যারোস্পেস অব বোল্ডারের জিপিআইএম মিশনের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ক্রিস্টোফার ম্যাকলিন বলেছেন, নতুন পরিবেশবান্ধব জ্বালানি তৈরি, তার সংরক্ষণ ও রকেটে ভরার খরচও হবে তুলনায় অনেকটাই কম। শুধু তাই নয়, নতুন জ্বালানি হাইড্রাজিনের চেয়ে বেশি ঘন। তার কার্যক্ষমতা হাইড্রাজিনের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। যার অর্থ, এক গ্যালন হাইড্রাজিনে রকেট যে দূরত্ব অতিক্রম করে নতুন জ্বালানিতে সেই দূরত্ব আরো ৫০ ভাগ বাড়বে।