তথ্যপ্রযুক্তি মানুষের জীবনকে সহজ করেছে। এখন ঘরে বসেই বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণের সুযোগ পাচ্ছে মানুষ। তবে প্রযুক্তির প্রসারে কর্মক্ষেত্রে মানুষের কাজের পরিধি কমছে। এখন কর্মক্ষেত্রে মানুষ কর্মী কিংবা ব্যবস্থাপকের চেয়ে রোবটে আস্থা বাড়ছে। ওরাকল এবং ফিউচার ওয়ার্কপ্লেসের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ‘এআই এট ওয়ার্ক স্টাডি’-এর দ্বিতীয় বার্ষিক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বের ১০টি দেশের ৮ হাজার ৩৭০ জন কর্মী, ব্যবস্থাপক এবং মানবসম্পদ কর্মকর্তার ওপর পরিচালিত গবেষণায় উঠে এসেছে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) মানুষ এবং প্রযুক্তির সম্পর্ক বদলে দিয়েছে। মানব সম্পদ বিভাগের দায়িত্বকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে এবং নতুন মেধাবীদের কর্মক্ষেত্রে যুক্ত করতে ও তাদের বিকাশ ঘটাতে ব্যবস্থাপকদের নতুন করে ভাবতে হবে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে শতকরা ৮৯ শতাংশ এবং চীনে ৮৮ শতাংশ কর্মকর্তা এখন মানুষের চেয়ে রোবটের উপরে বেশি আস্থাশীল। একটি রোবটকে কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী হিসেবে পেয়ে শতকরা প্রায় ৬৫ শতাংশ কর্মকর্তা সন্তুষ্ট। এছাড়া কর্মক্ষেত্রে শতকরা ৮২ শতাংশ মানুষ মনে করেন তাদের ব্যবস্থাপকের চেয়ে রোবট ভালো কাজ করতে পারে। এদিকে কর্মক্ষেত্রে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে শতকরা ৪৪ ভাগ নারী রোবটের উপরে আস্থাশীল হচ্ছে।
ওরালের হিউম্যান ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ক্লাউড বিজনেস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট এমিলি হি বলেন, বিশ্বব্যাপী মেশিন লার্নিং এবং এআইয়ের উন্নতি মূলধারায় পৌঁছানোর কারণে মানুষ ও প্রযুক্তির মধ্যে যোগাযোগ পদ্ধতির পরিবর্তন হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এআই প্রযুক্তির সংযুক্তির জন্য অ্যাডমিন প্রশাসন সংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে। এভাবে কাজ করতে পারলে কর্মক্ষেত্রে নতুন মাত্রা এনে দেবে তথ্যপ্রযুক্তি।
ফিউচার ওয়ার্কপ্লেসের গবেষণা পরিচালক ড্যান শ্যাওবেল বলেন, কর্মক্ষেত্রে মানুষ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) গ্রহণ করছে এবং এর মাধ্যমে অ্যাডমিন প্রশাসন বিভাগকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের প্রতিবেদনে দেখা যায় এআই শুধু কর্মী ও ব্যবস্থাপকদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করেনি, বরং ব্যবস্থাপকদের ভূমিকাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যদি ব্যবস্থাপকরা তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার ওপর নজর দেয় এবং রুটিনমাফিক কাজগুলো রোবটের দিকে ছেড়ে দেয়, তবে প্রতিষ্ঠান আরো গীতিশীল হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, এআই কর্মক্ষেত্রে নানাবিধ সুবিধা দিলেও কর্মীদের মধ্যে তাদের সুরক্ষা ও গোপনীয়তা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত জুলাই থেকে শুরু করে ৯ আগস্ট এ জরিপের কাজ শেষ করেছে। ছয়টি ভাষায় ও ১৮ থেকে ৭৪ বছর বয়সের কর্মকর্তাদের ওপর জরিপটি পরিচালনা করা হয়।