রোবট যে শুধু মানুষের চাকরির জায়গা দখল করবে তা নয়। চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও যুক্ত থাকবে। ‘টেনগাই’ নামের ১৬ ইঞ্চির উচ্চতার এই রোবটের ওজন ৩.৫ কেজি। তবে মানুষের আবক্ষ মূর্তির মতো দেখতে এই রোবটকে যখন টেবিলে রাখা হয়, তখন এর চোখ কিন্তু ইন্টারভিউ দিতে আসা প্রার্থীর চোখেই থাকে।
ফারহাত রোবটিকস এর উদ্ভাবক। এটা স্টোকহোম ভিত্তিক কেটিএইচ রয়েল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির একটি প্রকল্প। এরা মূলত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করে। তাছাড়া সামাজিক রোবট নিয়েও এদের কাজ। বিগত চার বছর যাবত তারা এই প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। তারা চাইছিলেন, এমন একটি রোবট হবে যেটা কোনোরকম পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। অর্থাৎ একে আগে থেকে হ্যাক করে কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রভাবিত করা যাবেনা।
এই রোবট মূলত প্রাথমিক ইন্টারভিউ নিয়ে থাকে। এরপর প্রার্থীর সঙ্গে কথোপকথন টেক্সট আকারে প্রকাশ করে। টেনগাই মূলত মানুষের ভয়েস রেকর্ড করে। তাছাড়া এটা মানুষের কথা বলার ধরন, চেহারার রকমভেদ এবং প্রশ্ন-উত্তর পর্বের সাফল্যের ভিত্তিতে ফলাফল দিয়ে থাকে। এরপর সেটার ভিত্তিতে বাকি নিয়োগ কাজ সম্পন্ন করা হয়। এটা মূলত বড় নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে করা হয়। কেননা যেখানে অনেক প্রার্থী থাকে সেখানে কম সময়ে ইন্টারভিউ নেয়া অনেক ঝামেলার। এবং অনেক সময় মানুষ বিরক্ত হয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিশেষ করে ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যরা। তাই একজন রোবট যদি অক্লান্তভাবে এটা করে দিতে পারে তাহলে বাকি কাজ সহজেই শেষ করা যায়।
২০২০ সাল নাগাদ এই রোবট ইংরেজি সংস্করণে বাজারে আসবে। ইউরোপের অনেকেই মনে করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরুতেই বয়স, চেহারা, লিঙ্গ থেকে শুরু করে সাধারণ অনেক বিষয় নিয়ে বৈষম্যের শিকার হয়ে তারা চাকরি পায়না। তাই এসব ক্ষেত্রে টেনগাই একেবারে নির্মোহভাবে কাজ করতে পারবে। কারণ টেনগাই এর কোনো আবেগ নেই। সে শুধু যোগ্যতা বিচার করতে জানে। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়াতে অনেকটা স্বচ্ছতা আনা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।