২০১৬ সালে প্রথম তারবিহীন বা ওয়্যারলেস ইয়ারফোন এয়ারপডস বাজারে আনে অ্যাপল। এর পর থেকে বিশ্বজুড়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পায় অ্যাপলের এ পণ্যটি। দিন দিন বাড়ছে জনপ্রিয়তা। আইফোন বিক্রিতে তুলনামূলক ভাটা বজায় থাকায় বর্তমানে এয়ারপডের বাজারজাতে জোর দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর জের ধরে আগামী বছর নাগাদ অ্যাপল বিশ্বজুড়ে দেড় হাজার কোটি ডলারের এয়ারপডস বিক্রি করতে পারে। আর দুই বছরের মধ্যে অ্যাপলের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া পণ্যের তালিকায় তিন নম্বরে উঠে আসতে পারে এয়ারপডস। সানফোর্ড ব্রানস্টোনের টেক বিশ্লেষক টনি স্যাকোনাগি এ সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। অ্যাপলের ব্যবসা কৌশল বিশ্লেষণে টেক জগতে তার খ্যাতি রয়েছে। খবর এনডিটিভি ও সিএনবিসি।
সিএনবিসির সঙ্গে আলাপকালে টনি জানান, বাজারে আসার পর থেকে অ্যাপলের এয়ারপডের জনপ্রিয়তায় কখনো ভাটা পড়েনি। চলতি বছর শেষে কোম্পানিটি বিশ্বজুড়ে ৬০০ কোটি ডলারের এয়ারপডস বিক্রি করতে পারে। আগামী বছর নাগাদ পণ্যটি বিক্রি বাবদ অ্যাপলের রাজস্ব আয় বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে। এ সময় কোম্পানিটি সব মিলিয়ে ৮ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট এয়ারপডস বিক্রি করতে পারে। বিক্রিতে এ ধারায় প্রবৃদ্ধি বজায় থাকলে ২০২১ সালে গিয়ে অ্যাপলের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া গ্যাজেটের তালিকায় আইফোন ও আইপ্যাডের পর তৃতীয় অবস্থানে উঠে আসতে পারে পণ্যটি।
বর্তমানে দুটি মডেলের এয়ারপডস বিক্রি করছে অ্যাপল। স্ট্যান্ডার্ড এয়ারপডস ২ মডেলের পণ্যটির দাম পড়ছে ১৫৯ ডলার। অন্যদিকে এয়ারপডস প্রো মডেলের অডিও পণ্যটির দাম ধরা হয়েছে ২৪৯ ডলার। গত অক্টোবরে উন্মোচন হওয়া এয়ারপডের সর্বশেষ দুটি সংস্করণে নয়েজ ক্যানসেলেশনের সুবিধা রয়েছে। আরো রয়েছে পানি ও ধুলা নিরোধক সুবিধা। পণ্য দুটির ডিজাইনও আধুনিক। এ কারণে অ্যাপলের এ ওয়্যারলেস ইয়ারফোনের প্রতি ব্যবহারকারীদের আগ্রহ রয়েছে। এরই মধ্যে অনলাইন বাজারে আসা সব এয়ারপডস প্রো বিক্রি হয়ে গেছে। তবে অ্যাপলের পক্ষ থেকে এয়ারপডের বেচাকেনা ও প্রাপ্ত রাজস্ব নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ জানিয়েছে, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তারবিহীন শ্রবণযন্ত্রের বৈশ্বিক বাজার হিস্যার ৪৫ শতাংশ ছিল অ্যাপল তথা এয়ারপডের দখলে। আগামী দিনগুলোতে এ বাজার হিস্যা আরো বাড়তে পারে। অ্যাপলের সাফল্যের পথ ধরে চীনা হুয়াওয়ে, শাওমিসহ কয়েকটি টেক জায়ান্ট তারবিহীন শ্রবণযন্ত্র বাজারে ছেড়েছে। তবে মান ও ব্র্যান্ড বিবেচনায় গ্রাহকদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে অ্যাপলের এয়ারপডস।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছর নাগাদ বিশ্ববাপী তারবিহীন শ্রবণযন্ত্রের বাজারে ৯০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। বলা হয়েছে, চলতি বছর শেষে বিশ্ববাপী ১২ কোটি ইউনিট তারবিহীন শ্রবণযন্ত্র বিক্রি হতে পারে। আর ২০২০ সালে তারবিহীন শ্রবণযন্ত্রের বেচাকেনা আরো বেড়ে দাঁড়াতে পারে ২৩ কোটি ইউনিটে, যা চলতি বছরের তুলনায় ৯০ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বিশ্বব্যাপী তারবিহীন শ্রবণযন্ত্রের বেচাকেনা বাড়তে পারে ১১ কোটি ইউনিট। আগামী বছর নাগাদ তারবিহীন শ্রবণযন্ত্রের বাজারে অ্যাপল আধিপত্য ধরে রাখবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ সময় বেচাকেনা হওয়া তারবিহীন শ্রবণযন্ত্রের ৫০ শতাংশের বেশি অ্যাপলের।