মহামারীর মধ্যে শেয়ারের দামে উল্লম্ফনে অনুমিত সময়ের আগেই প্রথম মার্কিন কোম্পানি হিসেবে অ্যাপলের দাম দুই ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়, বুধবার দিনের শুরুতে অ্যাপলের শেয়ারের দাম ১.২ শতাংশ বেড়ে ৪৭৬.৭৮ ডলারে ওঠে, আর তাতেই ২ লাখ কোটি ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয় অ্যাপল।
স্টিভ জবসের হাতে গড়া এ কোম্পানির ভ্যালুয়েশন ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ৪২ বছর। এরপর তা দুই ট্রিলিয়ন হতে সময় লাগল মাত্র দুই বছর।
নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, অ্যাপলের ভ্যালুয়েশনে শেষের এক ট্রিলিয়ন ডলার যোগ হয়েছে মাত্র ২১ সপ্তাহের মধ্যে, যখন করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে বিশ্ব অর্থনীতি অতিতের যে কোনো সময়ে চেয়ে দ্রুত সঙ্কুচিত হচ্ছে।
এই মাইলফলকে পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে আইফোন, ম্যাক কম্পিউটার আর অ্যাপল ওয়াচের প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাপল বিশ্বের সবচেয়ে দামি পাবলিক কোম্পানি হিসেবে নিজেদের অবস্থান আরও পোক্ত করল।
সেই সঙ্গে এটাও স্পষ্ট হল, মহামারীর এই সময় বিশ্বের অধিকাংশ খাতের জন্য দুঃসংবাদ বয়ে আনলেও প্রযুক্তি খাতের বড় কোম্পানির জন্য তা শাপে বর হয়েছে।
গত এপ্রিলে ভাইরাস আতঙ্কে বিশ্ব শেয়ার বাজারে যখন বড় ধস নামল, তখনও অ্যাপলের ভ্যালুয়েশন ১ ট্রিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গিয়েছিল। বাজার সামলাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ তখন মরিয়া হয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়।
তখন থেকেই শেয়ার বাজার, বিশেষ করে অ্যাপল, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন, অ্যালফাবেট ও ফেইসবুকের মত বড় প্রযুক্তি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের এসঅ্যান্ডপি-৫০০ সূচক বুধবার নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়।
বিনিয়োগকারীরা এখন এসব প্রযুক্তি কোম্পানির শেয়ারে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খাটাচ্ছে এই বিশ্বাস থেকে যে, বিশ্বজুড়ে এসব কোম্পানির ব্যবসার বিপুল বিস্তার এবং প্রভাব হয়ত মহামারী সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে সহায়ক হবে।
রয়টার্স লিখেছে, গত ২৩ মার্চের পর থেকে কেবল ওই পাঁচ কোম্পানির ভ্যালুয়েশনের অংক বেড়েছে সব মিলিয়ে ২.৯ ট্রিলিয়ন ডলার, যা এসঅ্যান্ডপি-৫০০ সূচকে থাকা পরের ৫০টি শীর্ষ কোম্পানির ভ্যালুয়েশনে মোট প্রবৃদ্ধির প্রায় সমান।
অ্যাপলের ভ্যালুয়েশন কেবল এক দিনেই প্রায় ৬.৮৮ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে, যা আমেরিকান এয়ারলাইন্সের পুরো দামের চেয়েও বেশি।