সারা দেশে জমে উঠেছে ওয়ালটনের ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ কার্যক্রম। এর আওতায় যে কোনো ব্র্যান্ডের সচল বা অচল ল্যাপটপ-ডেস্কটপ জমা দিয়ে সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ ডিসকাউন্টে ওয়ালটনের নতুন ল্যাপটপ-ডেস্কটপ কেনা যাচ্ছে। এমনকি এ সুবিধায় কেনা ওয়ালটনের নতুন ল্যাপটপ-ডেস্কটপের মূল্য ৩ মাসের কিস্তি সুবিধায় পরিশোধ করা যাচ্ছে। ফলে সারা দেশের প্রযুক্তিপ্রেমিদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ওয়ালটনের এই ক্যাম্পেইন। ইতোমধ্যেই বিপুল সংখ্যক ক্রেতা তাদের পুরনো ডিভাইস বদলে ওয়ালটনের নতুন ডিভাইস নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরায় ওয়ালটন করপোরেট অফিসে অনুষ্ঠিত এক লঞ্চিং প্রোগ্রামে এ ঘোষণা দেয়া হয়। অনলাইনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ওয়ালটন ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
ওয়ালটন কম্পিউটার বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী লিয়াকত আলী বলেন, প্রধানত দুটি উদ্দেশ্যে আমরা ক্রেতাদের এক্সচেঞ্জ সুবিধা দিচ্ছি। সাশ্রয়ী মূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে বাংলাদেশে তৈরি বিশ্বমানের ডিজিটাল ডিভাইস তুলে দেয়া এবং ই-বর্জ্য’র ক্ষতি থেকে পরিবেশ রক্ষা করার মাধ্যমে কিভাবে বাংলাদেশকে সবুজে সুশোভিত রাখা যায় তার জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করা। এজন্য এই ক্যাম্পেইনের প্রতিপাদ্য রাখা হয়েছে ‘নতুন সময়ের নয়া প্রযুক্তি, নবপ্রজন্মের সবুজ পৃথিবী’।
তিনি জানান, একচেঞ্জ সুবিধায় দেশের যে কোনো ওয়ালটন প্লাজা, ডিস্ট্রিবিউটর শোরুম, আইটি ডিলার এবং মোবাইল ডিলার শোরুমে যে কোনো পুরনো সচল ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ জমা দিয়ে নতুন ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কেনায় ২২ শতাংশ ডিসকাউন্ট পাচ্ছেন ক্রেতারা। আর পুরনো অচল ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ জমা দিলে মিলছে ১৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট। ডিসকাউন্টের পর পরিশোধযোগ্য মূল্যের মাত্র ৩০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে নতুন পণ্যটি নেয়া যাচ্ছে। বাকি মূল্য কোনো ইন্টারেস্ট ছাড়াই তিন মাসের সহজ কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ থাকছে।
পুরনো ডিভাইস বদলে ডিসকাউন্টসহ বিশেষ সুবিধায় ল্যাপটপ-ডেস্কটপ কেনার এই সুযোগ দেয়ায় দারুণ খুশি শিক্ষার্থী, ফ্রিল্যান্সারসহ প্রযুক্তিপ্রেমীরা। সম্প্রতি আইডিবির ওয়ালটন প্লাজা থেকে অচল ডেস্কটপ দিয়ে নতুন ল্যাপটপ কিনেছেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সামিউল হাসান। তিনি জানান, করোনার কারণে ক্লাস বন্ধ থাকায় অনেকটা ঘরবন্দি অবস্থায় দিন কাটছিল। এদিকে বেশ কয়েকমাস ধরে তার পুরনো ডেস্কটপটি নষ্ট হয়ে পড়েছিল। এবার আর ডেস্কটপ নয় বরং নতুন একটি ল্যাপটপ কিনবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু পছন্দের কনফিগারেশনের ল্যাপটপের দামের সঙ্গে তার বাজেট মিলছিল না। এমন অবস্থায় ওয়ালটনের এক্সচেঞ্জ সুবিধার কথা জানতে পারেন। দেরি না করে নষ্ট ডেস্কপটি নিয়ে ছুটে যান আইডিবির ওয়ালটন প্লাজায়।
তিনি বলেন, যে কনফিগারেশনের ল্যাপটপ আমি চাচ্ছিলাম, সেই কনফিগারেশনের ওয়ালটন ল্যাপটপ অন্যান্য ব্র্যান্ডের চেয়ে দামে সাশ্রয়ী। আবার নষ্ট ডেস্কটপ দিয়ে ১৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট পেলাম। সব মিলিয়ে আমার বাজেটের মধ্যে হাই-কনফিগারেশনের একটি ল্যাপটপ পেয়েছি। আমাদের জন্য এমন সুযোগ দেয়ায় দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটনকে ধন্যবাদ।
এক্সচেঞ্জ সুবিধায় ওয়ালটনের অল-ইন-ওয়ান পিসি কিনেছেন রংপুরের মো. আরমান হোসেন। পেশায় ফ্রিলান্সার আরমান বলেন, ওয়ালটন কম্পিউটারের মান অন্যান্য গ্লোবাল ব্র্যান্ডের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়, বরং বেশি। আমার আগের পিসিটা অনেক পুরনো ছিলো (২য় প্রজন্মের প্রসেসর)। সেটি বদলে ওয়ালটনের যে অল-ইন-ওয়ান পিসি নিয়েছি, এটিতে ৯ম প্রজন্মের প্রসেসর, ৮জিবি র্যাম, ১ টেরাবাইট হার্ডড্রাইভের সঙ্গে ১২৮ জিবি এসএসডি ড্রাইভ দেয়া আছে। ফলে ওয়ালটনের এই অল-ইন-ওয়ান অত্যন্ত ফাস্ট। এতে আমার কাজের বেশ সুবিধা হচ্ছে। দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটনের প্রযুক্তিপণ্যগুলো খুবই ভালো সার্ভিস দিচ্ছে।
ওয়ালটন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তারা বিভিন্ন কনফিগারেশনের ৭ সিরিজের মোট ১৬ মডেলের ডেস্কটপ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। যার মূল্য ২৬,৯৯০ টাকা থেকে ১০৫,০৫০ টাকার মধ্যে। আছে ৩ মডেলের অল-ইন-ওয়ান ওয়ালটন কম্পিউটার। যার মূল্য ৪৬,৯৫০ থেকে ৫৫,৫০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া ওয়ালটনের রয়েছে প্রিলুড, প্যাশন, ট্যামারিন্ড, কেরোন্ডা এবং ওয়াক্সজ্যাম্বু সিরিজের ২১ মডেলের ল্যাপটপ। যেগুলো পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২৮,৭৫০ টাকা থেকে ১৬৮,৫০০ টাকায়।
এছাড়া বিভিন্ন মডেলের মনিটর, মেমোরি কার্ড, র্যাম, এসএসডি ড্রাইভ, মাউস, কিবোর্ড, পেন ড্রাইভ, ইয়ারফোন, ওয়াই-ফাই রাউটার, ইউএসবি ক্যাবল, স্পিকার, পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট, ইউপিএস ইত্যাদি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে ওয়ালটন।
মডেলভেদে ল্যাপটপের সর্বোচ্চ ২ বছর এবং ডেস্কটপে ৩ বছরের বিক্রয়োত্তর সেবা দিচ্ছে ওয়ালটন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে জিরো ইন্টারেস্টে ১২ মাসের কিস্তি সুবিধা।