ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, মানুষের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে ডিজিটাল-কমার্স। কোভিডকালে ডিজিটাল কমার্স মানুষের জীবন ধারায় এক অভাবনীয় পরিবর্তনের সূচনাও করেছে। এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে হবে।
মন্ত্রী (১১ নভেম্বর) বুধবার রাতে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) আয়োজিত সংগঠনের প্রতিষ্ঠার ৬ষ্ঠ বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ভবিষ্যতে ব্যবসা বাণিজ্য হবে সম্পূর্ণ ডিজিজাল, প্রচলিত শোরুম ভি্ত্তিক ব্যবসা থাকবে না উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল-কমার্সের আজকের বাস্তবতার কার্যকারিতার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।
বাংলাদেশে ডিজিটাল কমার্স যেভাবে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে সব ধরনের পণ্যসেবা ডিজিটাল বাণিজ্যের আওতায় এসেছে। স্বল্প সময়ে ডিজিটাল-কমার্সের বিস্তৃতি অভাবনীয়। তিনি বলেন, এই খাতের চ্যালেঞ্জের জায়গাগুলো যা ছিলো তার প্রায় সবগুলোই অতিক্রান্ত হয়েছে। বড় চ্যালেঞ্জটি ছিলো পণ্য গ্রাহক পর্যায়ে নিরাপদে পৌঁছানো।
ডাক অধিদপ্তরের ৪৩ হাজার কর্মীবাহিনী এবং গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত ডাক অধিদপ্তরের বিশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সেটাও সফলজনকভাবে অতিক্রম করা হয়েছে। এছাড়া আরও আছে বেসরকারি লজিস্টিক প্রতিস্টানসমুহ।
করোনাকালে বিনা মাশুলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপন্য ও দেশব্যাপী কোভিড চিকিৎসা সামগ্রী পেঁৗছে দেওয়ার প্রসংগ তুলে ধরে বলেন, ডিজিটাল বাণিজ্য সম্প্রসারণে ডাকঘরের দেশব্যাপী বিশাল নেটওয়ার্ক ও জনবল কাজে লাগাতে কাজ আমরা শুরু করেছি। মানুষ সহসাই এর সুফল পাবে। সভ্যতার বিকাশের প্রথম স্তরগুলোতে পিছিয়ে থাকায় প্রসঙ্গ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, গত এগারো বছরে প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে শত শত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। আমরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ পাচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন দৃশ্যমান।
বাংলাদেশের ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ক ট্রেডবডি বিসিএস ও বেসিস এর সাবেক সভাপতি জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, নতুন প্রজন্মের কর্মস্পৃহা হচ্ছে এই ডিজিটাল কমার্সের অগ্রগতির মূলশক্তি। ষষ্ঠ বছর পূর্তিতে তিনি ই-ক্যাবকে অভিনন্দন জানান এবং ডিজিটাল কমার্সের উন্নয়নে ই-ক্যাবের অব্যাহত কর্ম প্রচেষ্টা ছাড়াও ই-ক্যাবের মানবসেবা ও শিশুদের জন্য প্রকল্প ও প্রান্তিক কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ধন্যবাদ জানান।
ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল এর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে ই-ক্যাবের সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দীন শিপন, কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য আশীষ চক্রবর্তী, আসিফ আহনাফ, জিয়া আশরাফ ও সাইদ রহমান বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া ই-ক্যাবের সদস্য কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের অভিমত এবং করোনাকালীন সেবার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন।
ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার প্রতিষ্ঠাকাল থেকে অদ্যাবধি ই-কমার্সের জন্য ডিজিটাল ই-কমার্স নীতিমালা থেকে শুরু করে অগ্রযাত্রার প্রতিটি স্তরে জনাব মোস্তাফা জব্বারের সহযোগিতা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বলেন করোনাকালে সরকার ও বিভিন্ন মন্ত্রণলায় যেভাবে সহযোগিতা করেছে তা আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
আবদুল ওয়াহেদ তমাল জানান, করোনার ৮ মাসে ই-কমার্স সেক্টরে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা, বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ডেলিভারি হচ্ছে প্রতিদিন, ৫০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ৫ হাজার তরুণকে উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, ১৬ হাজার কোটি টাকার সার্বিক ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে ৬০ লাখ মানুষকে সেবা দিয়ছে ই-ক্যাবের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো।