ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, শুধু স্থাবর সম্পত্তি নয়, একজন উদ্যোক্তার মেধা ও দক্ষতা অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। অন্যদিকে ব্যাঙ্কং, সেবা, ব্যবসা বাণিজ্য ও কলকারখানা এখন আর এনালগ থাকার দিন নেই-সবই ডিজিটাল হতে হবে।
আমাদেরকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে সবই ডিজিটাল করতেই হবে। তিনি শিক্ষা ও দক্ষতার ডিজিটাল রূপান্তরের ওপর গুরুত্ব প্রদান করেন। তিনি বলেন সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের কল সেন্টারসমূহ একটি সম্ভাবনাময় শিল্পে পরিণত হয়েছে। মন্ত্রী তরুণ ও সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের মেধা ও সৃজনশীলতা দিয়ে শুরু করা এই কর্মকান্ণ্ড এগিয়ে নিতে ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ব্র্যাক ব্যাংকের সাথে কলসেন্টার প্রতিষ্ঠান সমূহের সংগঠন বাক্কোর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ্সব কথা বলেন। চুক্তির ফলে বাক্কো প্রতিষ্ঠানগুলো জামানত বিহীনভাবে শর্ত সাপেক্ষে ব্র্যাক ব্যাংক থেকে বিভিন্ন মেয়াদে ঋণ সুবিধা পাবেন।
ডাক ও টেলিযোগোযোগ মন্ত্রী দেশের পোশাক শিল্পের বিকাশে অতি সাধারণ কর্মীদের মূল শক্তি হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, যারা সাধারণ কম্পিউটারও শিখেনি তাদের কাজে লাগিয়ে বাক্কো কল সেন্টার কাজ শুরু করে অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রধান অতিথি বলেন, কলসেন্টারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং সেক্টরের দূরত্বটা ব্র্যাক ব্যাংকের এই উদ্যোগের মাধ্যমে দূর হয়ে গেল। তিনি বলেন, আমি আশা করি ব্র্যাক ব্যাংকের এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাক্কোকে অনুধাবনের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাতের যে সমস্যা ছিল তা কেটে যাবে’’।
মন্ত্রী তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের ধারাবাহিকতা তুলে ধরে বলেন, কলসেন্টার খাত কেবল শুধু ভাল ইংরেজী জানা লোকের জন্যই নয় এখাতে ভাল বাংলা জানা মানুষের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তিনি বলেন এক সময়ে আমরা ভাবতাম সারা দুনিয়াই ইংরেজি নির্ভর। কিন্তু এখনকার ও সামনের দুনিয়া হচ্ছে মাতৃভাষাকেন্দ্রিক। তিনি আরও বলেন আমরা এক সময়ে ভাবতাম সবই রপ্তানী করতে হবে-নিজেদের অভ্যন্তরীণ বাজারের দিক আমরা াতকাইনি। অথচ ১৭ কোটি মানুষের একটি দেশ তার দ্রুত উন্নয়নের ক্ষেত্রে নিজেদেরই ডিজিটাইজেসনের অনেক কাজ রয়েছে। তিনি ব্যাঙ্কং খাতে আইন ও নীতিমালা নবায়নসহ যেসব কাগজভিত্তিক কর্মকাণ্ড রয়েছে তা ডিজিটাল করার আহ্বান জানান।
দেশে মেধা ভিত্তিক শিল্পে বিনোয়োগের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে উল্লেখ করে কম্পিউটারে বাংলা ভাষার জনক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রথম শিল্প বিপ্লব যুগ থেকে শুরু করে অদ্যাবধি শিল্প বাণিজ্যের বিকাশে ব্যাংক বড় ভূমিকা পালন করে আসছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিণির্মাণের জন্য গত এগারো বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত কর্মসূচি করোনাকালেও অচল জীবন যাত্রাকে সক্রিয় রেখেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্জনসমূহকে আমরা ধরে রাখতে চাই। তিনি বলেন, এতদিন ডিজিটাল ডিভাইসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ছিল আমদানি নির্ভর একটি দেশ।আজকের বাংলাদেশ এই খাতের একটি রপ্তানি নির্ভর একটি দেশে উন্নীত হয়েছে।
দেশে ১১টি মোবাইল কারখানায় দেশের শতকরা ৬০ভাগ মোবাইল সেটের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। বাংলাদেশে এখন ৫জি সেট উৎপাদন হচ্ছে।আমরা আইওটি ডিভাইস রপ্তানি করছি। তিনি রোবটিকস, বিগডাটা ও আইওটিসহ উদীয়মান ডিজিটাল ডিভাইস খাতে বিনিয়োগে নজর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাক্কোর সভাপতি ওয়াহিদ শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম রেজা, হেড অব এসএমই সৈয়দ আবদুল মোমেন এবং বাক্কোর সেক্রেটারি জেনারেল তৌহিদ হোসেন বক্তৃতা করেন।